4:29 pm , June 23, 2023
বিশেষ প্রতিবেদক ॥ নগরীতে ভূয়া মাদ্রাসার নামে সরকারি চাল অনুদান আনা, মাহফিলের নামে টাকা তোলা, ছারছিনা পীরজাদাকে দেয়ার নাম করে মাছ বাজারে চাদাবাজি এবং চাকুরীর প্রলোভনসহ নানান অভিযোগ পাওয়া গেছে ইসলামি ফাউন্ডেশনের মাস্টার ট্রেনার মোঃ শাহাবুদ্দিন ওরফে শিহাবের নামে। সর্বশেষ শিহাব গত ২১ জুন ছারছিনার পীরের নাম ভাঙিয়ে নগরীর উত্তর বগুড়া রোডের দারুসসুন্নাহ নেছারিয়া হাফিজি দ্বিনিয়া মাদ্রাসার নামে দুই মে.টন চালের বরাদ্দ নিয়েছে এতিম শিশুদের নামে। সরজমিন অনুসন্ধানে শুক্রবার রাতে উত্তর বগুড়া রোডে গিয়ে এ নামে কোনো মাদ্রাসা পাওয়া যায়নি। নেই কোনো এতিম শিশুদের আস্তানাও। আশেপাশের বাসিন্দারাও কেউ এ নামের কোনো মাদ্রাসার খোঁজ দিতে পারেননি। তবে ইসলামি ফাউন্ডেশনের শাহাবুদ্দিন শিহাব নামে একজন এখানে ভাড়া থাকেন বলে জানা গেছে। এসময় নতুন বাজার এলাকায় খোঁজ নিতে গেলে ছারছিনা দরবারেরই দুইজন ভক্ত শাহাবুদ্দিন শিহাব সম্পর্কে আরো একাধিক অভিযোগ জানান । তিনি এখানে উত্তর বগুড়া রোডের একটি বাড়িতে ভাড়া থাকেন, নথুল্লাবাদ মাছ বাজারের মোঃ ইকবাল থেকে ছারছিনা পীরজাদাকে দেয়ার নাম করে প্রায় দেড় লাখ টাকার মাছ বাকীতে এনে বিভিন্ন কর্মকর্তাকে ঘুষ দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। তবে মাছ বিক্রেতা মোঃ ইকবাল জানান, এখনো তিনি ৬৫ হাজার টাকা পাওনা আছেন। তার অবস্থা খারাপ যাচ্ছে বলে ঘুরাচ্ছেন।
এছাড়াও তার বিরুদ্ধে
কোটি কোটি টাকার সম্পদ ও সরকারি সাহায্য এনে তা আত্মসাৎ করার অভিযোগ বরিশালের বিভিন্ন স্থানে। কালজিরা বাজারের মাওঃ শেখ সাদিকে জামিন রেখে লাকরী ব্যবসায়ীর কাছ থেকে আরও ৭/৮ বছর পূর্বে বাকিতে লাকড়ি ক্রয় করে আজ পর্যন্ত তা পরিশোধ না করা, বরিশালের কালীবাড়ী রোডস্থ শংকর আর্ট ৩০,০০০/- টাকা পাবে।
উপজেলা পরিষদে চাকুরী দেয়ার নাম করে ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ায় তাকে গামছা পরিয়ে খালি গায় বাজারের অলিগলিতে ঘুরানো হয়েছে এবং চাকুরী থেকে বদলি করে ঝালকাঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
এছাড়াও নতুন বাজার এলাকার মোঃ ইদ্রিস ও তার সহধর্মিণী রাবেয়া বেগমকে নিবন্ধন পরীক্ষায় পাশ করানোর নাম করে ১,০০,০০০/- টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। ছারছীনা দরবারের পীর সাহেব হুজুরের আলেকান্দা মাহফিলের নতুন বাজার থেকে মাইক ভাড়া নেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত মাইকের ভাড়া পরিশোধ করেননি। পরিসংখ্যান ও কারো অফিসে সরকারী চাকুরী পাইয়ে দেবার নাম বলে প্রায় ২০লক্ষ টাকা লোকজনের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এখন শাহাবুদ্দিন শিহাব এতিম শিশুদের নামে প্রতারণায় নেমেছেন ও সরকারি চাল আত্মসাৎ করেছেন অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। এজন্য শাহাবুদ্দিন শিহাবকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, আমি এই মুহূর্তে ছারছিনা দরবারে পীর সাহেবের কাছে আছি। আমি আগামীকাল বিকালে আপনাকে মাদ্রাসা দেখাবো।
তার ফোনেই পীর সাহেবের সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি বলেন, পীর সাহেব একটি মিটিং এ আছেন। আমি বাইরে অপেক্ষা করছি।
ফোন কেটে ছারছিনা পীরজাদা মোঃ মুহিব্বুল্লাহকে ফোন করা হলে পীর সাহেব জানান, শাহাবুদ্দিন বা শিহাব নামে কেউ তার কাছে আসেনি। তিনি আরো বলেন, এই নামের এক ব্যক্তি আমার নাম ভাঙিয়ে নগরীতে চাঁদাবাজি করছে বলে অভিযোগ পেয়েছি। এর বিরুদ্ধে আমরাও ব্যবস্থা নেব।