4:32 pm , June 20, 2023
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশালে মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করনের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেছে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি বরিশাল আঞ্চলিক শাখা। মঙ্গলবার দুপুরে নগরীর ফকিরবাড়ি রোড শিক্ষক ভবনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। বরিশাল আঞ্চলিক শাখার সভাপতি সুনীল বরণ হাওলাদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক সমিতির বর্তমান উপদেষ্টা সাবেক সভাপতি ফরিদুল আলম জাহাঙ্গীর, বর্তমান উপদেষ্টা ও সাবেক সাধারন সম্পাদক তোফায়েল আহমেদ, উপদেষ্টা আব্দুল মালেকসহ শিক্ষক ও সাংবাদিক বৃন্দ। এ সময় সংবাদ সম্মলনে বক্তরা বলেন তাদের দাবী না মানলে আগামী ২৫ জুন জনপ্রতিনিধি ও সংসদ সদস্যদের সাথে মতবিনিময় ও লিফলেট বিতরন, আগামী ১১ জুলাই জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সুনীল বরণ হাওলাদার বলেন, আমরা জানি ‘শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড’। তাই শিক্ষা যদি জাতির মেরুদন্ড হয়, তবে শিক্ষক হচ্ছেন শিক্ষার মেরুদন্ড; সমাজ ও সভ্যতার বিবেক এবং জাতি গঠনের স্থপতি। আপনারা অবগত আছেন, দেশের সিংহভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হচ্ছে এমপিও ভূক্ত বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী দ্বারা। পরিতাপের বিষয় আমরা এমপিও ভূক্ত শিক্ষকগণ মাত্র ১,০০০/- টাকা বাড়ি ভাড়া, ২৫% উৎসব ভাতা এবং ৫০০/- টাকা চিকিৎসা ভাতা পাই। অথচ একই কারিকুলামের অধীনে একই সিলেবাসে, একই একাডেমিক সময়সূচিতে একইভাবে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও উত্তরপত্র মূল্যায়নের কাজে নিয়োজিত থেকেও আর্থিক সুবিধার ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে রয়েছে পাহাড়সম বৈষম্য। এছাড়াও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠান প্রধানদের বেতন স্কেল সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠান প্রধানদের বেতন স্কেলের একধাপ নিচে প্রদান করা হয়। তাছাড়া সহকারি প্রধান শিক্ষকদের উচ্চতর স্কেল প্রদান না করার ফলে উচ্চতর স্কেল প্রাপ্ত সিনিয়র শিক্ষকদের বেতন স্কেল ও সহকারি প্রধান শিক্ষকদের বেতন স্কেল সমান হওয়ায় সহকারি প্রধান শিক্ষকদের মধ্যে দীর্ঘদিনের অসন্তোষ রয়েছে। তিনি বলেন, বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসরে যাবার পর অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা পেতে বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয়। ফলে অনেক শিক্ষক-কর্মচারী টাকা পাওয়ার পূর্বেই অর্থাভাবে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করছেন। তাছাড়া কয়েক বছর যাবৎ কোন প্রকার সুবিধা না দিয়েই অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্ট খাতে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন থেকে অতিরিক্ত ৪% কর্তন করা হচ্ছে, যা অত্যন্ত অমানবিক। তাই অতিরিক্ত ৪% কর্তনের প্রতিবাদে আমরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলসহ অবসর সুবিধা বোর্ড ও কল্যাণ ট্রাস্ট অফিস ঘেরাও করতে বাধ্য হয়েছিলাম। পরিতাপের বিষয় অদ্যাবধি কোন প্রতিকার পাইনি। আমরা দীর্ঘদিন যাবৎ সংবাদ সম্মেলন করে আপনাদের মাধ্যমে সরকারের নিকট আমাদের দাবিনামা পেশ করে আসছি এবং সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা অব্যাহত রেখেছি। পাশাপাশি নিয়মতান্ত্রিক ভাবে উপজেলা থেকে শুরু করে জেলা ও বিভাগীয় শহরে সমাবেশ, মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল, প্রতীকি অনশন, অবস্থান ধর্মঘট ও কর্মবিরতি পালনসহ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছি। বিভিন্ন সময়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এবং জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মহাসমাবেশ করেছি। কিন্তু পরিতাপের বিষয় এখনও আমরা জাতীয়করণের ঘোষণা পাইনি। তিনি বলেন, দেশ ও জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে দ্রুত জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ বাস্তবায়ন, শিক্ষায় বিনিয়োগে ইউনেস্কো-আইএলওর সুপারিশসমূহ বাস্তবায়ন এবং সবার জন্য শিক্ষা গ্রহণের সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ এখন সময়ের দাবী। আমরা বিশ্বাস করি স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। স্মার্ট জাতি গঠন করতে হলে দরকার স্মার্ট শিক্ষক। তাই স্মার্ট শিক্ষক ও দক্ষ মানব সম্পদ পেতে হলে শিক্ষায় বিনিয়োগ বৃদ্ধিসহ মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের কোন বিকল্প নেই।