4:23 pm , June 19, 2023
চরফ্যাসন প্রতিবেদক ॥ চরফ্যাসনের দক্ষিণ আইচায় টুংচর খাল দখলে নিয়ে ঘের নির্মাণ করে মাছ চাষের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় চর মানিকার ইউপি চেয়ারম্যান শফিউল্লাহ হাওলাদারসহ তার ছেলে তুহিন হাওলাদার ও শাহিন হাওলাদারের বিরুদ্ধে। স্থানীয় কৃষক ও জেলেদের বাধা উপেক্ষা করে ওই ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামের অংশে শতবর্ষী খালটি জবর দখল করে বাধ দিয়ে মাছ চাষ শুরু করায় দীর্ঘ খালটির আশপাশের কয়েক গ্রামের হাজার হাজার কৃষকের সেচনির্ভর কৃষি যেমন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে তেমনি দীর্ঘ মেয়াদী জলাবন্ধতার ঝুঁকিতে রয়েছে বিস্তৃত জনপদ। জবরদখলকৃত খালটি উদ্ধার চেয়ে সাম্প্রতিক সময়ে স্থানীয় কৃষক ও জেলেরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরারব লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগ দায়েরের দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও কোন ব্যবস্থা নেয়নি উপজেলা প্রশাসন।
স্থানীয়দের সুত্রে জানাযায়, টুংচর খালটি দক্ষিণের বুড়াগৌরাঙ্গ নদী থেকে উৎপত্তি হয়ে চর মানিকা এবং রসুলপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের মধ্যদিয়ে পশ্চিমের মায়ানদীতে সংযুক্ত হয়েছে। চর মানিকা ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামের টুংচর এলাকায় বাধ দিয়ে মাছ চাষ করায় খালটির বুড়াগৌরাঙ্গ এবং মায়ানদীর প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে।স্বাভাবিক প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় খালটির বিভিন্ন অংশে বিভিন্ন জন বাধ দিয়ে কেউ মাছ চাষ করছে , কেউ বা ভরাট করে বাড়িঘর তৈরীর প্রক্রিয়া শুরু করেছে। ফলে শতবর্ষী খালটি শীঘ্রই তার অস্তিত্ব হারাতে বসছে।
স্থানীয় কৃষক মো. মাসুদ জানান, শত বছরের পুরনো খালটি জবর দখল করে মাছের ঘের নির্মাণ করায় বিপাকে পড়েছেন ওই ইউনিয়নের কৃষকরা। খালটি বন্ধ করে দেয়ায় আবাদি জমিতে তীব্র জলাবদ্ধতা হয়। পানি নিষ্কাশনের আর কোন বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় জলাবদ্ধতার কারনে নষ্ট হচ্ছে কৃষকের ফসল। এছাড়াও ইরি মৌসুমে পানির সংকটে ইরি চাষে ব্যাহত হচ্ছে।
চর মনিকা ৬ নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য মো. জাহাঙ্গীর জানান, কৃষকের আবাদি জমিতে জলাবদ্ধতা নিরসন ও সেচ কাজে ব্যবহৃত একমাত্র সরকারী খালটি চেয়ারম্যানের দুই ছেলে ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে জবর দখল করে মাছের ঘের নির্মান করায় বিপাকে পড়েছে ওই এলাকার কৃষকরা। এঘটনায় এলাকার কৃষক ও জেলেরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বারবরে লিখিত অভিযোগ দিলেও কোন প্রতিকার পাননি।
অভিযোগ প্রসঙ্গে চেয়ারম্যান শফি উল্লাহ হাওলাদার জানান, ওই এলাকায় পূর্বে গরু মহিষ চলাচল করায় একটি নালায় পরিনত হয়েছিলো। ওই নালায় কিছু নৌকাও রাখতেন জেলেরা। পরে দক্ষিণ অংশে মানুষের জবর দখলে চলে যাওয়ার পর ওইখানে দেড় একর জমি আমার ছেলের নামে বন্দোবস্ত নিয়ে ঘের নির্মান করেছি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সকহারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান জানান, টুংচর খালটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের মালিকানাধীন নয়। এবিষয়ে উপজেলা ভূমি প্রশাসনকেই ব্যবস্থা নিতে হবে। ভূমি প্রশাসন থেকে নির্দেশনা পেলে পানি উন্নয়ন বোর্ড কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারে বলে তিনি জানান।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবদুল মাতিন খান জানান, সরকারী খাল বা পাড়ের জমি বন্দোবস্ত দেয়া বা কারো নামে নেয়ার কোন সুযোগ নেই। ওই ইউনিয়নের তহশিলদারকে ঘটনাস্থলে পরিদর্শনে পাঠানো হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আল নোমান জানান, অভিযোগটি যাচাই করে খুব দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।