4:19 pm , June 19, 2023
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশাল শেরই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের বহি.বিভাগে মাকে নিয়ে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীকে লাঞ্চিত করায় নিরাপত্তারক্ষী চার আনসার সদস্যকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়াও ঘটনা তদন্তে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সোমবার বেলা ১১ টায় হাসপাতালের নিচতলায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের পর এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে আনসারের বরিশাল জেলা কমা-ার বাসুদেব ঘোষ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ঘটনার পর পর সিসি টিভি ফুটেজ দেখে তাৎক্ষনিক চার আনসার সদস্যকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। ঘটনা তদন্তে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। বরখাস্ত হওয়া আনসার সদস্যরা হলো- হেমায়েতউদ্দিন, শাকিল, হানিফ ও রিয়াজ।
তিনি আরো জানান, তাদের নেয়া পদক্ষেপে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সন্তুষ্ট। তাদের আর কোন ক্ষোভ নেই।
শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন, সিসি ক্যামেরা ফুটেজে দেখা গেছে রোগীর ছেলে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে কলার টেনে ধরে নিয়ে মারধর করেছে। বিষয়টি দু.খজনক। তাই ওই চার আনসার সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রতি ৩ মাস পর পর আনসার সদস্য পরিবর্তন করতে বলা হয়েছে।
হাসপাতালের আনসার কমান্ডার মোশারেফ হোসেন বলেন, হাসপাতালে বহি.বিভাগে চিকিৎসা সেবা নেয়ার জন্য টিকেট সংগ্রহ করতে হয়। টিকিট সংগ্রহ করতে এক নারী এসে লাইনে দাড়িয়ে ছিলেন। সে লাইন থেকে বেরিয়ে ফ্যানের নিচে এসে দাড়ায়। তখন আনসারের এপিসি হেমায়েত এসে তাকে লাইনে দাড়াতে বলেন। এ নিয়ে নারীর সাথে এপিসি হেমায়েতের তর্ক হয়। পাশেই থাকা নারীর ছেলে এসে এপিসি হেমায়েতের সাথে তর্ক ও ধাক্কাধাক্কি শুরু করে। এ দৃশ্য দেখে নারী এপিসি হেমায়েতকে জুতা দিয়ে পেটানো শুরু করে। তখন অন্য শাকিল, হানিফ ও রিয়াজ এসে ওই ছাত্রকে ধরে পরিচালকের কক্ষে নিয়ে যায়। সেখানে নেয়ার পর সে নিজেকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র পরিচয় দেয়।
এদিকে খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনান্য ছাত্ররা ছুটে এসে হাসপাতালে বিক্ষোভ করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করে। তখন হাসপাতালের পরিচালক, খবর পেয়ে ছুটে আসা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (দক্ষিন) ফজলুল হক, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর বিভাগীয় পরিচালক আশরাফুল আলম ও জেলা কমান্ডার বাসুদেব ঘোষ শিক্ষার্থীদের কাছে ক্ষমা চাইয়ে বিষয়টি মীমাংশা করে দিয়েছেন।
এছাড়াও চার জনকে সাসপেন্ড করেছেন বলে হাসপাতালের আনসার কমান্ডার মোশারেফ।
ঘটনার শিকার বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র শিক্ষার্থী শান্ত বলেন ঘটনার সমাধান হয়েছে। আমরা সন্তুষ্ট। আমাদের কোন অভিযোগ নেই। উল্লেখ্য, হাসপাতাল শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য আনসারদের নিয়োজিত করা হলেও বেশিরভাগ আনসার সদস্যরা সেবার পরিবর্তে দালালির কাজে বেশি মনোযোগ দিচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।