3:46 pm , June 18, 2023
বিশেষ প্রতিবেদক ॥ আসন্ন ঈদ উল আজহায় স্থানীয় গবাদী পশুর মাধ্যমেই কোরবানির চাহিদা মিটিয়ে অর্ধ লক্ষ উদ্বৃত্ত থাকার কথা প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তর জানিয়েছে। তবে পশুখাদ্যসহ লালন পালনের ব্যয় বৃদ্ধির কারণে কোরবানির পশুর দাম ২০-৩০ভাগ পর্যন্ত বৃদ্ধির আশঙ্কা করা হচ্ছে। গত কয়েক বছরের ঈদ উল আজহায় দক্ষিণাঞ্চলে নিজস্ব পশুর সাহায্যে কোরবানির পরেও প্রায় ৩০-৫০ হাজার পর্যন্ত গবাদিপশু উদ্বৃত্ত থাকছে বলে প্রাণি সম্পদ দপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় পরিচালক ডা. আবদুস সবুর জানিয়েছেন। আসন্ন ঈদ উল আজহায় বরিশাল অঞ্চলে প্রায় ৪০ লাখ ৫১ হাজার গবাদি পশুর মধ্যে কোরবানির জন্য প্রায় ২৩ হাজার খামারী ও গৃহস্থের কাছে সাড়ে ৪ লাখ বিভিন্ন ধরনের পশু মজুতের কথা জানিয়েছেন তিনি। তবে এবার কোরবানির সম্ভাব্য পশু চাহিদা ৪ লাখের কিছু বেশী। সে নিরিখে এবারো প্রায় ৪৯ হাজার ৭৫৩টি কোরবানিযোগ্য পশু উদ্বৃত্ত থাকবে বলে প্রাণি সম্পদ অধিপ্তরের পরিচালক জানিয়েছেন। পাশাপাশি এ হিসেবের বাইরেও বরিশালের গৃহস্থ্য পর্যায়ে গবাদিপশুর যে বিশাল ভান্ডার রয়েছে, সেখান থেকেও কোরবানির যথেষ্ট সম্ভাবনা ও সুযোগ রয়েছে। প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তরের দায়িত্বশীলদের মতে, গৃহস্থ্য পর্যায়ে পালিত গবাদি পশু থেকে আরো লক্ষাধিক গরু, মহিষ, ছাগল ও ভেড়া থেকেও প্রতি বছরের মত এবারো বিপুল সংখ্যক পশু কোরবানি হবে।
দক্ষিণাঞ্চলে বিপুল সংখ্যক কোরবানির পশু উদ্বৃত্ত থাকার মধ্যেও কুষ্টিয়া সহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল থেকে সড়ক পথে আরো পশুর চালান আসবে বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন হাটে। কারণ বছর জুড়েই বরিশাল অঞ্চল থেকে বিপুল সংখ্যক বকনা ও বাছুর কুষ্টিয়া, মেহেরপুর সহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাসমূহে পাঠানো হয় মোটাতাজা করণের জন্য। সেসব গরুর একটি বড় অংশই আবার এ অঞ্চলের কোরবানির পশুর হাটে ফিরে আসে ভাল দামে বিক্রীর আশায়।
তবে এবার বরিশাল অঞ্চলে কোরবানির পশুর দাম গত বছরের চেয়ে কতভাগ বাড়বে তা এখনো বোঝা না গেলেও বাজারে গরু ও খাসির গোশতের দাম গত বছরের এ সময়ের তুলনায় অন্তত ২০ ভাগ বেশী। উপরন্তু গত বছরের চেয়ে এবার পশু খাদ্যের দাম ২০-৩০ ভাগ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে বলে খামারিরা জানিয়েছেন। একই সাথে পশু পালনে সম্পৃক্ত শ্রমজীবী মানুষের মজুরী বৃদ্ধিও এখাতে ব্যয় গত বছরের চেয়ে অন্তত ১৫-২০ ভাগ বেড়েছে। ফলে এবার কোরবানির পশুর মূল্য বৃদ্ধির সাথে আর্থিক সংকটের কারণেও অনেক পরিবার পশু কোরবানির ক্ষমতা হারাতে পারে বলে মনে করছেন বাজার পর্যবেক্ষকরা।
সরকারী পরিসংখ্যান অনুযায়ী বরিশাল অঞ্চলে খামার ও গৃহস্থ্য পর্যায়ে বর্তমানে প্রায় ২৬ লাখ ২১ হাজার গাভী, ১০ লাখ ৭০ হাজার ছাগল, ২ লাখ ৮৫ হাজার মহিষ ও ৭৬ হাজার ভেড়া সহ প্রায় ৪০ লাখ গবাদি পশু রয়েছে। এর বাইরে বিপুল সংখ্যক বিভিন্ন ধরনের প্রাণির বিশাল ভান্ডার রয়েছে বেসরকারী খামার সহ গৃহস্থ্য পর্যায়ে।