4:17 pm , June 17, 2023
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশালে পৃথক দুই স্থান থেকে অর্ধগলিত দুই যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার দুপুরের পর সদর উপজেলার একটি মাছের ঘের থেকে ও অপরটি বরিশাল সরকারী ব্রজমোহন (বিএম) কলেজ ছাত্রবাসের কক্ষ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। ঘের থেকে উদ্ধার মো. হাসান (২২) নগরীর কাউনিয়া কালাখাঁ বাড়ি এলাকার ভাড়াটিয়া ও ভোলার তজুমদ্দিন এলাকার আব্দুল হাকীমের ছেলে। পেশায় ব্যাটারিচালিত রিক্সাচালক ছিলো হাসান। বিএম কলেজের ফ্লাইট সার্জেন্ট ফজলুল হক (মুসলিম) হলের ছাত্রবাস থেকে উদ্ধার হয়েছে শিক্ষার্থী মাইনুল ইসলামের (২৩)। সেই বিএম কলেজের সমাজকল্যান বিষয়ের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। মুসলিম হলের ১৩৪ নং কক্ষের আবাসিক ছাত্র মাইনুল হিজলা উপজেলার বাউশিয়া এলাকার আব্দুর রহিমের ছেলে। উভয়ে গত ১৫ জুন সন্ধ্যার পর থেকে নিখোঁজ ছিলো বলে পুলিশ জানিয়েছেন। উভয়ের লাশ অর্ধগলিত অবস্থায় পাওয়া গেছে। মহানগর পুলিশের বন্দর থানার ওসি আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, বরিশাল সদর উপজেলার চরকাউয়ায় চরআইচার একটি মাছের ঘেরে রিক্সাচালক হাসানের লাশ পড়ে ছিলো। স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে।হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে জানিয়ে ওসি আসাদ বলেন, লাশে পচন ধরেছে। কিভাবে হত্যা করা হয়েছে, তা বোঝা যাচ্ছে না। শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারনা করা হচ্ছে জানিয়ে বলেন, ময়না তদন্ত প্রতিবেদন পেলে সঠিক কারন বলতে পারবো। তিনি বলেন, তার ব্যাটারিচালিত রিক্সার কোন হদি নেই। রিক্সা ছিনতাই করার সময় তাকে হত্যা করা হতে পারে। তাই এ ঘটনায় হত্যা মামলা হবে বলে জানিয়েছেন ওসি। পরিবারের বরাতে ওসি জানান, কিছুদিন আগে ঋন করে নতুন একটি রিক্সা কিনেছিলো হাসান। গত ১৫ জুন রিক্সা নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে নিঁখোজ হয় সে। এ ঘটনায় শনিবার সকালে কাউনিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরিও করা হয়েছে।হাসানের দুলাভাই সৌরভ সাংবাদিকদের জানান, মনে হচ্ছে যাত্রী নিয়ে বরিশাল-ভোলা আঞ্চলিক সড়ক হয়ে কোথাও যাচ্ছিলো। যাত্রীবেশের দুর্বৃত্তরা ভোলার রাস্তা নিরিবিলি হওয়ায় সেইখানে তাকে হত্যা করে রিক্সা ছিনতাই করেছে। এদিকে বিএম কলেজের অধ্যক্ষ গোলাম কিবরিয়া জানান, কলেজের মুসলিম হলের পরিত্যক্ত ১৪১ নম্বর কক্ষ থেকে দুর্গন্ধ আসে। তখন শিক্ষার্থীরা ঝুলন্ত অবস্থায় লাশ দেখতে পায়। বিষয়টি জানালে পুলিশকে খবর দেয়া হয়। তারা এসে লাশ উদ্ধার করার পর শিক্ষার্থী মাইনুল ইসলামের লাশ বলে শনাক্ত করে। মাইনুল হলের ১৩৪ নম্বর কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী ছিলো। তার রুমমেটের বরাতে অধ্যক্ষ বলেন, গত ১৫ জুন সন্ধ্যায় সে বের হয়। এরপর আর রুমে ফেরেনি। ঘটনাস্থলে থাকা কোতয়ালী মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) বিপ্লব কুমার মিস্ত্রি বলেন, পরিত্যক্ত ঘরের টিনের চালার আড়ার সাথে রশি দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। ধারনা করা হচ্ছে গত ১৫ জুন রুম থেকে বের হওয়ার পর আত্মহত্যা করেছে।
পরিদর্শক আরো বলেন, লাশের পচন ধরেছে। গরমের কারনে পচন একটু বেশি হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে সে আত্মহত্যা করেছে। তবুও প্রকৃত কারন জানতে ময়না তদন্ত করা হবে।
এ ঘটনায় অপমৃত্যুর মামলা করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
আবাসিক হলের শিক্ষার্থী রায়হান বলেন, মাইনুল প্রেম করতো। দুইদিন পূর্বে প্রেমিকার সাথে মোবাইল ফোনে ঝগড়া হয়েছে। ধারনা করা হচ্ছে প্রেমিকের সাথে ঝগড়া করে রাগে ক্ষোভে আত্মহত্যা করেছে মাইনুল।