4:29 pm , June 10, 2023
বিশেষ প্রতিবেদক ॥ বরিশাল সিটি নির্বাচনে প্রকাশ্য প্রচারনা শনিবার রাত ৮টায় শেষ হবার পরে মধ্যরাত থেকে সব ধরনের প্রচারনায়ই নিষেধাজ্ঞা বলবৎ হয়েছে। গত ২৬ মে প্রতীক লাভের সাথে সাথে সব মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা নগরী জুড়ে মাইক নিয়ে যে প্রচারনা শুরু করেছিলেন, বিধি অনুযায়ী গতরাতে তার ইতি টানার মধ্যে দিয়ে নগরী জুড়ে এখন শুনশান নিরবতা। সোমবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বরিশাল নগর পরিষদের ৫ম নির্বাচনের ভোট গ্রহন। এই প্রথম বরিশাল মহানগরীর সবকটি কেন্দ্রেই ইভিএম এ ভোট হচ্ছে। সোমবার বরিশাল সিটির ৫ম নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী ৭ জন হলেও মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন আওয়ামী লীগের আবুল খায়ের আবদুল্লাহ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ ফয়জুল করিম ও জাতীয় পার্টির প্রকৌশলী ইকবাল হোসেন তাপস। এছাড়াও জাকের পার্টির মিজানুর রহমান বাচ্চু, স্বতন্ত্র কামরুল আহসান রুপন ও আলী হোসেন, আসাদুজ্জামান মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন। অপরদিকে ৩০টি ওয়ার্ডে ১১৬ জন সাধারন কাউন্সিলর ও ১০টি সংরক্ষিত নারী আসনে ৪২ জন মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী ভোটের লড়াইয়ে আছেন।
সোমবারের ভোট গ্রহনের লক্ষে ইতোমধ্যে ১০ প্লাটুন বিজিবি বরিশালে পৌঁছেছে। ১০ জন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট-এর তত্ত্বাবধানে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে বিজিবি নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান গ্রহনের পাশাপাশি টহলে থাকবে। এছাড়া নগরীর ১২৪টি কেন্দ্রে ও মজুদ ফোর্স হিসেবে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার পুলিশ ও আনসার সদস্য থাকছে বলে মহানগর পুলিশ কমিশনার শনিবার সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন। একই সাথে দেড় শতাধিক র্যাব সদস্য ভোট গ্রহনের দিন নগরীতে টহলে থাকবে বলে র্যাব-৮’এর অধিনায়ক সাংবাদিকদের বলেছেন।
২০১৮ সালের ৩০ জুলাই এ নগর পরিষদের ৪র্থ ভোটগ্রহন পর্ব সকাল ৮টায় শুরু হলেও ১১টার আগেই অঘোষিতভাবে সাধারন ভোটারের জন্য তা বন্ধ হয়ে যায়। কেন্দ্রে ভোটারদের প্রবেশে বাঁধা, বুথে ঢুকে ভোটারদের ভয়ভীতি প্রদর্শন সহ প্রভাব বিস্তারের পাশাপাশি ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ না থাকায় সাড়ে ১১টার আগেই আওয়ামী লীগ বাদে সব প্রার্থীরা ভোট বর্জনের ঘোষনা দেন। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে নির্বাচন কমিশন বিপুল ভোটে বিজয়ী ঘোষনা করে। এদিকে শনিবার বরিশাল সিটির ভোটে মাইকযোগে প্রচারনায় ৬ ঘন্টা সময় পেয়ে প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের প্রচারনায় পুরো নগরী ছিল মুখরিত। শুক্রবারও ভোটের আগের শেষ জুম্মায় মহানগরীর বড় মসজিদগুলোতে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা জুম্মার নামাজ আদায় সহ উপস্থিত মুসুল্লীদের কাছে ভোটের পাশাপাশি দোয়া কামনা করেন।
ইতোমধ্যে ভোট গ্রহনের চূড়ান্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন। ভোট গ্রহনের বুথগুলোতে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা স্থাপনের কাজ প্রায় শেষ। ইভিএম পৌঁছেছে আরো দিন দশেক আগেই। ৫৮ বর্গ কিলোমিটারের বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ডের ১২৪টি কেন্দ্রের ১০৬টিকে ঝুকিপূর্ণ বিবেচনায় নিয়ে সেসব কেন্দ্রে বাড়তি পুলিশ ও আনসার সদস্য মোতায়েন করা হচ্ছে। এসব ভোট কেন্দ্রের ৮৯৪টি বুথে ১২ জুন নগরীর ২ লাখ ৭৫ হাজার ২৬৭ জন নারী-পুরুষ ভোটার প্রথমবারের মত ইভিএম-এ ভোট দেয়ার কথা।
ভোট গ্রহনের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন ১২৬ জন প্রিজাইডিং অফিসার, ৮৯৪ সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার এবং সমসংখ্যক পোলিং অফিসার ছাড়াও ১ হাজার ৭৮৮জন সহকারী পোলিং অফিসারের প্রশিক্ষন সম্পন্ন করেছে।
এদিকে বরিশাল সিটির আসন্ন ভোট প্রদান নিয়ে নতুন একটি বিভ্রান্তি তৈরী হয়েছে। কোন ভোটার মেয়র, কাউন্সিলর বা সংরক্ষিত কাউন্সিলরের কোন এক প্রার্থীকে ভোট না দিলে তার সব ভোটই বাতিল হয়ে যাবে বলে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে নির্বাচন কমিশনে যোগাযোগ করা হলে ‘কেউ যদি মেয়র, কাউন্সিলর বা সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরের যেকোন প্রার্থীক ভোট দিতে না চান, তবে ইভিএম এর সংশ্লিষ্ট প্লেটের লাল বাটনে দুবার চাপ দিলে তার অন্য কোন ভোট নষ্ট হবে না’ বলে জানান হয়েছে।