বিশ্বাসঘাতক আখ্যা দিয়ে নির্বাচনে থাকা রূপণসহ বিএনপির ১৯ জনকে আজীবন বহিস্কার বিশ্বাসঘাতক আখ্যা দিয়ে নির্বাচনে থাকা রূপণসহ বিএনপির ১৯ জনকে আজীবন বহিস্কার - ajkerparibartan.com
বিশ্বাসঘাতক আখ্যা দিয়ে নির্বাচনে থাকা রূপণসহ বিএনপির ১৯ জনকে আজীবন বহিস্কার

3:56 pm , June 4, 2023

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করায় বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় ১৯ প্রার্থীকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ আখ্যা দিয়ে আজীবন বহিষ্কার করেছে বিএনপি। এরমধ্যে আছেন মেয়র প্রার্থী কামরুল আহসান রুপনও। বাকি ১৮ জনের মধ্যে ১৫ জন কাউন্সিলর প্রার্থী এবং তিন জন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থী। বিএনপি বলছে, এ নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তাদের নাম ‘বেঈমান, বিশ্বাসঘাতক ও মীরজাফর’ হিসেবে উচ্চারিত হবে। রোববার বরিশাল মহানগর বিএনপির দপ্তরের দায়িত্বে থাকা মো. জাহিদুর রহমান রিপন দলের এই সিদ্ধান্তের তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, “বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত আজীবন বহিষ্কার আদেশের চিঠি প্রত্যেক প্রার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। ২০১৩ সালে বিএনপির ভোটে নির্বাচিত প্রয়াত মেয়র আহসান হাবীব কামালের ছেলে রুপন। কামাল ২০১৮ সালের নির্বাচনে দলের মনোনয়ন পাননি। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে বিএনপি ভোটে না যাওয়ার ঘোষণা দেওয়ার পর রুপন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে টেবিল ঘড়ি প্রতীকে লড়ছেন। তিনি ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। তবে বিএনপিতে তার কোনো পদ নেই। গত ২৫ মে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে লড়ে জামানত হারানো সরকার শাহনুর ইসলাম রনিরও বিএনপিতে কোনো পদ ছিল না। তিনি ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকারের ভাজিতা। বিএনপির সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে ভোটে অংশ নেওয়ায় গাজীপুরে কাউন্সিলর পদের ২৯ জনকে বহিষ্কার করলেও রনিকে কিছুই বলেনি বিএনপি। পদে না থাকার পরও বহিষ্কারের প্রতিক্রিয়ায় রুপন বলেছেন, বিএনপি সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে ভোটে লড়াই করে যাওয়ার প্রত্যয় জানিয়ে তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না, এটা আমি প্রথম থেকেই বলে আসছি। নির্বাচনী প্রচারণায় নেমে জেনেছি অনেক মানুষই ভোট দিতে যাবে না। যারা যাবে তারা নৌকার বিপক্ষে ভোট দিয়ে তাদের জনপ্রিয়তা যে তলানিতে সেটা প্রমাণ করবে।” দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে ভোটে অংশ নেওয়ায় গত ২ জুন রাতে ১৯ জনকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কারণ দর্শাতে বলা হয়। কিন্তু যে জবাব তারা দেন, তা বিএনপির কাছে ‘সন্তোষজনক’ মনে হয়নি।
বহিষ্কারের চিঠিতে যা বলা আছে ঃ
১৯ প্রার্থীকে দেওয়া রিজভী স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, “আগামী ১২ জুনের বরিশাল সিটির ‘প্রহসনের নির্বাচনে’ আপনি প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করার কারণ দর্শানোর নোটিসের জবাব সন্তোষজনক নয়।”
এই নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত গত ১৫ বছর ধরে ‘গণতান্ত্রিক আন্দোলনে’ ‘গুম, খুন ও সরকারি পৈচাশিক নিপীড়নের শিকার হয়েছে’ এমন পরিবারসহ ‘গণতন্ত্রকামী জনগোষ্ঠীর’ আকাঙ্খার প্রতি ‘বিশ্বাসঘাতকতা’ বলেও উল্লেখ করেছে বিএনপি।
“গণতন্ত্র উদ্ধারের ইতিহাসে আপনার নাম একজন বেঈমান, বিশ্বাসঘাতক ও মীরজাফর হিসেবে উচ্চারিত হবে,” এমন কথাও লেখা হয় চিঠিতে।
রুপন ছাড়াও যারা বহিষ্কার ঃ
যে ১৫ জন সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে তারা হলেন: ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সৈয়দ হাবিবুর রহমান ফারুক (রেডিও), ৬ নম্বর ওয়ার্ডের হাবিবুর রহমান টিপু (লাটিম), ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মো. হারুন অর রশিদ (ঘুড়ি), সৈয়দ হুমায়ন কবির লিংকু (রেডিও) সেলিম হাওলাদার (ঘুড়ি); ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের সিদ্দিকুর রহমান, ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের জিয়াউল হক মাসুম (ঘুড়ি), জাবের আব্দুল্লাহ সাদি (টিফিন ক্যারিয়ার), কাজী মোহাম্মদ শাহীন, ও মনিরুল ইসলাম (রেডিও); ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের শাহ আমিনুল ইসলাম আমিন (ঘুড়ি), ২২ নম্বর ওয়ার্ডের জেসমিন সামাদ (লাটিম), ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের ফিরোজ আহম্মেদ (টিফিন ক্যারিয়ার), ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের ফরিদউদ্দিন হাওলাদার (ঘুড়ি), ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের হুমায়ন কবির (লাটিম)। এদের মধ্যে কেউ কেউ বিএনপির বিভিন্ন কমিটির, কেউ কেউ সহযোগী সংগঠনের কমিটির নেতা ছিলেন। কয়েকজন ছিলেন কমিটির সদস্য। সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডের প্রার্থী হয়ে বহিষ্কৃত হয়েছেন ২ নম্বর ওয়ার্ডের জাহানারা বেগম (গাস), ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সেলিনা বেগম (আনারস) ও ১০ নম্বর ওয়ার্ডের রাশিদা পারভীন (আনারস)।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT