১০ নম্বর ওয়ার্ডে সবচেয়ে বড় সমস্যা মাদক ১০ নম্বর ওয়ার্ডে সবচেয়ে বড় সমস্যা মাদক - ajkerparibartan.com
১০ নম্বর ওয়ার্ডে সবচেয়ে বড় সমস্যা মাদক

4:11 pm , May 27, 2023

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ আনুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারণা শুরুর পর  দুই প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বীতায় বেশ জমে উঠেছে সিটি কর্পোরেশনের ১০ নং ওয়ার্ডের নির্বাচনী পরিবেশ।এই ওয়ার্ডে উভয় প্রার্থী এবার নিয়ে মোট পাঁচবার নির্বাচনে অংশ নিলেও দুজনেই ওয়ার্ডের দুবারের নির্বাচিত প্রতিনিধি। বর্তমান কাউন্সিলর আলহাজ্ব এটিএম শহিদুল্লাহ কবির রেডিও মার্কায় এবং সাবেক কাউন্সিলর  মো. জয়নাল আবেদীন ঠেলাগাড়ি মার্কা নিয়ে নির্বাচন করছেন। তবে নির্বাচনের দিন যতই এগোচ্ছে উত্তেজনাপূর্ণ পরিবেশের দিকে এগোচ্ছে ১০ নং ওয়ার্ডের পরিবেশ। এই ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের কাছ থেকে একে অপরের বিরুদ্ধে প্রচারণায় বাধা দেয়া, সন্ত্রাসী কর্মকা-, সাধারণ ভোটারদের হুমকী দেয়াসহ টাকা দিয়ে প্রতিজ্ঞা করিয়ে ভোট কেনার মত ঘটনার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভোটের দিন এই ওয়ার্ডের আওতাধীন দুটি কেন্দ্রকেই ঝুঁকিপূর্ণ বলে দাবি করেছে উভয় প্রার্থী। গতকাল নির্বাচনী ওয়ার্ড পরিক্রমায় দৈনিক আজকের পরিবর্তন প্রতিবেদক গিয়েছিল ১০ নং ওয়ার্ডে। সেখানে আলাপ হয় সাধারণ ভোটার ও উভয় প্রার্থীর সাথে। সাধারণ ভোটারদের সাথে আলাপে জানা যায়, ১০ নং ওয়ার্ডের বেশ কিছু সড়কের অবস্থা খুবই খারাপ। আছে জলাবদ্ধতা, বিশুদ্ধ পানির অভাব। এই ওয়ার্ডের সবচেয়ে বড় সমস্যা মাদক। বছরের পর বছর ধরে এই সমস্যা ১০ নং ওয়ার্ডকে ক্যান্সারের মতো ধরে রেখেছে বলে জানায় সাধারণ বাসিন্দারা। স্থানীয় প্রভাবশালীদের মদদে এই মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ হয়ে থাকে বলে জানান তারা। মাদক ব্যবসায়ীরা এই প্রভাবশালীদের সহায়তায় দায়িত্বশীলদের প্রশাসনকে  ম্যানেজ করে দীর্ঘদিন  ১০ নং ওয়ার্ডের বিভিন্ন স্থানে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। এই ওয়ার্ডে আরেকটি বড় সমস্যা চাঁদাবাজি। বিভিন্ন সময় সাবেক জনপ্রতিনিধির ঘনিষ্ঠজনদের ওয়ার্ড এর বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে দৈনিক চাঁদা তোলার অভিযোগ করে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ভোটার। এছাড়া তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের অভিযোগ করেন তারা। অন্যদিকে  বর্তমান কাউন্সিলর এর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন প্রভাব খাটিয়ে ওয়ার্ড এর বিভিন্ন স্থানের ব্যবসা বাণিজ্য নিজের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার। ১০ নং ওয়ার্ডের একটি অংশে যেমন ভিআইপিদের বসবাস তেমনি নি¤œ ও মধ্যবিত্ত লোকজনের বসবাস এখানে বেশি। বিগত পাঁচ বছরে নাগরিক সুবিধার তেমন কোন সুফল ভোগ করতে পারেনি বাসীন্দারা । ভবিষ্যতে এমন প্রার্থী বেছে নেবেন যে কিনা ওয়ার্ডে  মাদক, চাঁদাবাজি ,সন্ত্রাসী কর্মকা- নিয়ন্ত্রণ করবেন। সকল শ্রেণি পেশার মানুষদের ওয়ার্ডে  চলাফেরার নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন। একই সাথে সিটি কর্পোরেশন থেকে প্রাপ্ত  সকল ধরনের নাগরিক সুবিধা ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের জন্য এনে তার সুষম বন্টণ করবেন।
বর্তমান কাউন্সিলর আলহাজ্ব এটিএম শহিদুল্লাহ কবির বলেন, এবার নিয়ে পাঁচ বার নির্বাচনে অংশগ্রহণ এবং দুবারের নির্বাচিত কাউন্সিলর তিনি । ওয়ার্ডে বড় কোন সমস্যা কখনোই জিইয়ে রাখেননি। ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের প্রাপ্য নাগরিক সুবিধার  শতকরা ৮০ শতাংশ সরবরাহ করতে পেরেছেন। ওয়ার্ডে বেশ কিছু রাস্তাঘাটের কাজ করিয়েছেন। সিটি কর্পোরেশনের বরাদ্দের অপেক্ষায় না থেকে একাধিক কাজ করিয়েছেন নিজ অর্থায়নে। এরপরেও  ওয়ার্ডে  জলাবদ্ধতা ও বিশুদ্ধ পানির অভাব রয়েছে । তবে সবচেয়ে বড় সমস্যা চাঁদাবাজি ও মাদক বলে জানান তিনি। নির্বাচিত হলে এই সমস্যার কার্যকরী সমাধানের সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন। এটিএম শহিদুল্লাহ  কবির অভিযোগ করেন  আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরুর পর থেকে তার কর্মীদের বিভিন্নভাবে হুমকী ও প্রচারণায় বাধা দেয়া হচ্ছে।  প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী জয়নাল আবেদীনের নিজ ঘরে পুষ্ট সন্ত্রাসী বাহিনীর দ্বারা এমন হচ্ছে বলেন জানান তিনি। কর্মীদের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, আমার  কর্মী হওয়ায় ঘরে ঘরে গিয়ে কর্মীদের হুমকী দেয়া হচ্ছে। এ সকল অভিযোগ ওয়ার্ডের এমন সকল ব্যক্তিদের নামে আসছে  যারা প্রশাসনের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী। তার কর্মীরা ভয়ে ওয়ার্ডের সকল স্থানে প্রচারণা চালাতে পারছেন না বলেও অভিযোগ করেন তিনি। এমন পরিস্থিতিতে ওয়ার্ড এর দুটি ভোট কেন্দ্রকেই ঝুঁকিপূর্ণ মনে করেন আলহাজ্ব এটিএম শহিদুল্লাহ কবির। তবে সুষ্ঠু ভোট এর পরিবেশ থাকলে নির্বাচনে শতভাগ জয়ী হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন এই প্রার্থী। ২৬ মে থেকে রেডিও মার্কা নিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রচার প্রচারণা শুরু করেছেন। প্রচারণার অংশ হিসেবে ওয়ার্ডে উঠান বৈঠক, জনসংযোগ করছেন।
অপর  প্রার্থী মো. জয়নাল আবেদীন  বলেন,  এবার নিয়ে তিনিও পাঁচ বার নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। একবারে নির্বাচিত কাউন্সিলর ও একবারের কমিশনার তিনি। বিগত দুবার তাকে কারচুপির ভোটে পরাজিত করা হয়েছে। ওয়ার্ডে কোন কাজই হয়নি এই পাঁচ বছরে বলে জানান তিনি। রয়েছে রাস্তাঘাট, ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও জলাবদ্ধতার প্রকট সমস্যা। উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ১০ নং ওয়ার্ডের একটি ভিআইপি এলাকা হিসেবে পরিচিত জর্ডন রোড। এই রোডটির অবস্থা এখন গ্রামের রাস্তার মত । বর্তমান কাউন্সিলর এই ওয়ার্ডে বাসিন্দাদের জন্য বিগত পাঁচ বছরে কিছুই করতে পারেননি। বিভিন্ন অভিযোগের উপর পাল্টা অভিযোগ করে তিনি বলেন, তিনি ওয়ার্ডে একলা প্রচার-প্রচারণা করেন। উল্টো  তার লোকজনকে ওয়ার্ডের বিভিন্ন স্থানে প্রচারণায় বাধা দেয়া হচ্ছে। তাদেরকে নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। জয়নাল বলেন, প্রতিনিধিরা সব সময় ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের প্রতি দায়বদ্ধ থাকবে। বাসিন্দাদের প্রতি তিনি শতভাগ বিশ্বাসী। সুষ্ঠু ভোট হলে নিশ্চিত বিজয়ের কথা জানান জয়নাল। চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের অভিযোগের বিষয়ে জয়নাল বলেন, এমন অভিযোগ যদি কেউ প্রমান করতে পারে তবে সে নাকে খত দিয়ে বরিশাল ত্যাগ করবেন। উল্টো যারা এমন অভিযোগ করে তারাই  এ সকল কাজের প্রত্যক্ষ মদদ দিয়ে থাকে বলে জানান জয়নাল। তাদের ইশারায় স্পীডবোট ঘাটসহ ওয়ার্ড এর বিভিন্ন স্থানের ব্যবসা বাণিজ্য  নিয়ন্ত্রিত হয়। ২৬ তারিখ ঠেলাগাড়ি মার্কা পাওয়ার পরে আনুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারণায় নেমেছেন ।উঠান বৈঠক,জনসংযোগ  সহ বিভিন্ন ধরনের প্রচারণা চালাচ্ছেন বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য ,১০নং ওয়ার্ডে মোট ভোটার সংখ্যা ৭ হাজার ৩১ জন। দুটি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT