4:02 pm , May 23, 2023
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ আমাদের অনেক আশা ছিল বর্তমান মেয়র কে নিয়ে। কারণ মেয়রের ফুফু প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু তিনি বরিশালবাসীর জন্য কিছুই করতে পারেননি। প্রধানমন্ত্রীর বরিশালবাসীকে দেয়ার ইচ্ছা থাকলেও মেয়রের ব্যর্থতায় কোন কাজই আসেনি বরিশালে। গতকাল নির্বাচনী ওয়ার্ড পরিক্রমায় ১২ নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর জাকির হোসেন ভুলু এভাবেই অভিযোগ তুললেন মেয়রের বিরুদ্ধে। এ সময় তিনি বলেন, একজন কাউন্সিলরের কাজের দুটি ক্ষেত্র। একটি উন্নয়ন ও অপরটি নাগরিক সেবা। বিগত পাঁচ বছরে ওয়ার্ড এর প্রতিটি নাগরিককে নাগরিক সেবা যথাসাধ্য দেয়ার চেষ্টা করেছি এবং দিতে পেরেছি। ওয়ার্ড এর প্রতিটি মানুষ তা স্বীকার করে। ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের সাথে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রক্ষা করেছি। বিপদে-আপদে পাশে দাঁড়িয়েছি। ওয়ার্ডে সাধারণ ভোটারদের এমন কোন ফোন কল নেই যা রিসিভ করিনি এই পাঁচ বছরে। কখনো কখনো ফোন ধরতে না পারলেও পরে তা ব্যাক করেছি। নাগরিক সেবার ক্ষেত্রে কোন কমতি রাখিনি। তবে উন্নয়ন করতে পারিনি । বিগত পাঁচ বছর নয়, বিগত ১০ বছরে ১২ নং ওয়ার্ডে কোন উন্নয়ন হয়নি। জননন্দিত মেয়র মরহুম শওকত হোসেন হিরণের মৃত্যুর পর থেকেই এ উন্নয়নের ধারা থমকে গিয়েছিলো। কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়ে গত পাঁচ বছরে কিছুই করতে পারেননি বলে জানান জাকির হোসেন ভুলু। বর্তমান মেয়রের আস্থাভাজন হতে না পারায় ওয়ার্ড এর উন্নয়নে কোন সহায়তাই পাননি তিনি। তৃতীয়বারের মতো ১২ নং ওয়ার্ড থেকে নির্বাচন করছেন ভুলু।
ছোটখাটো সমস্যা প্রতিটি ওয়ার্ডেই থাকে। ১২ নং ওয়ার্ডেও রয়েছে এমন কিছু সমস্যা। ওয়ার্ডে রাস্তাঘাট, পানির লাইনের সমস্যা রয়েছে। অলিগলির রাস্তাঘাট গুলোর অবস্থা বেশ খারাপ। পুরনো ৪ ইঞ্চি পানির লাইন রয়েছে যা ৬ ইঞ্চি প্রয়োজন। ড্রেনেজ ব্যবস্থারও কিছু সমস্যা রয়েছে। এই সমস্যার এতদিনে কোন সমাধান দিতে পারেননি। তবে প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনা বরিশালে মেয়র পদে যাকে মনোনয়ন দিয়েছেন নিঃসন্দেহে তিনি একজন ভালো মানুষ বলে জানান ভুলু। তিনি আসন্ন ভোটে নির্বাচিত হলে তার অধীনে বরিশাল শহরের ব্যাপক উন্নয়ন সাধন করতে পারবেন বলে জানান। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোটে শতভাগ নির্বাচিত হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
১২ নং ওয়ার্ড থেকে বর্তমানসহ মোট তিনজন কাউন্সিলর পদে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। ভুলু ছাড়া অন্যরা হলেন : শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদের সদর উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন রয়েল এবং তালুকদার মোহাম্মদ মোরশেদ আলম (ফোরকান)। এই দুই প্রার্থীর সাথে আলাপের পূর্বে ওয়ার্ডের সাধারণ ভোটারদের কাছে গেলে তারা জানান, অন্য সব ওয়ার্ডের মতো এই ওয়ার্ডেও কোন কাজ হয়নি। আছে প্রায় সব ধরনের সমস্যা। ওয়ার্ডের অলিগলি রাস্তাঘাটের অবস্থা খুবই খারাপ। বিশেষ করে শাখা সড়ক থেকে শুরু করে অলিগলির সড়কের অবস্থা বেহাল। আছে মাদক, ইভটিজিং,কিশোর গ্যাং এর উপদ্রব সহ নানা ধরনের সমস্যা। বর্ষায় এই ওয়ার্ডে জলাবদ্ধতাও একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। বিগত সময়ে যারা কাউন্সিলর ছিলেন তারা যোগাযোগ রক্ষা করলেও কোন সমস্যার সুরাহা দিতে পারেননি বলে জানান ভোটাররা। এতদিন না পারলেও বর্তমানে তারা আবার পুরনো আশ্বাস দিয়ে ভোট চাচ্ছেন।
প্রার্থী আনোয়ার হোসেন রয়েল বলেন, বিগত দিনে যারা এই ওয়ার্ডের প্রতিনিধির চেয়ারে ছিলেন তারা কোন কাজ করেনি বিধায় জনগণের দাবির প্রেক্ষিতে তিনি কাউন্সিলর পদে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। ওয়ার্ডে রাস্তাঘাট, ড্রেনেজ ব্যবস্থা, জলাবদ্ধতা সহ সব ধরনের সমস্যা বিদ্যমান। এগুলো সমাধানতো দূরের কথা পদক্ষেপও নেওয়া হয়নি দীর্ঘদিন। তিনি নির্বাচিত হলে এলাকার সর্বস্তরের জনগণকে সাথে নিয়ে এ সকল সমস্যার একটি একটি করে সমাধান করবেন বলে জানান।
নতুন প্রার্থী তালুকদার মোহাম্মদ মোরশেদ আলম (ফোরকান) বলেন, এই ওয়ার্ডের আদিবাসিন্দা হলেও এই প্রথম নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। নিজে শিক্ষানুরাগী হওয়ায় ওয়ার্ডের ছেলে-মেয়েদের শিক্ষার ব্যাপারে নির্বাচিত হলে প্রথম পদক্ষেপ নেবেন। তিনি চেষ্টা করবেন ওয়ার্ডের প্রতিটি ঘর থেকে অন্ততপক্ষে একটি শিশু হলেও যেন শিক্ষার আলো পায়। যাতে ভবিষ্যতে সে তার পরিবারের শক্তিতে পরিণত হতে পারে। নির্বাচিত হলে আরো কাজ করার ইচ্ছা আছে জানিয়ে ফোরকান বলেন, ওয়ার্ডে রাস্তাঘাটের সমস্যা রয়েছে যেগুলো দূর করবেন, করবেন সালিশ ব্যবস্থার উন্নয়ন। জলাবদ্ধতা দূরীকরণে পদক্ষেপ নেবেন। মাদকের বিরুদ্ধে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সাথে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলবেন এবং মাদকাসক্ত যুব সমাজকে সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। বর্তমান কাউন্সিলর ভালো মানুষ জানিয়ে ফোরকান বলেন,মেয়রের কারণে লক্ষণীয় তেমন কোন উন্নয়ন তিনি ওয়ার্ডে করতে পারেননি। এক্ষেত্রে সম্পূর্ণ দোষ তাকে দেয়াটা ভুল হবে। আসন্ন ভোট যদি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয় তবে শতভাগ জয় লাভের আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রার্থী তালুকদার মোহাম্মদ মোরশেদ আলম(ফোরকান)। উল্লেখ্য, ১২ নং ওয়ার্ডে মোট ভোটার সংখ্যা ৫১৭৪ জন। দুইটি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।