4:20 pm , May 20, 2023
বিশেষ প্রতিবেদক ॥ সিটি নির্বাচনে বিএনপির কাউকে অংশ না নেয়ার আহ্বান জানিয়ে কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সভাপতি ব্যারিষ্টার শাহজাহান ওমর বীরোত্তম বলেছেন, বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাতের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন তার ভাই হাসানাত আব্দুল্লাহ ও ভাতিজা সাদিক আব্দুল্লাহ। যেই জিতুক জয় তো হবে আব্দুর রব সেরনিয়াবাতের। কারণ এ তিনজনই একই পরিবারের। রব সেরনিয়াবাতের সন্তান তারা। তাই যে এই নির্বাচন করবেন তিনি বিএনপির কেউ না। শনিবার বরিশালের সদর রোডে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত জনসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শাহজাহান ওমর আরো বলেন, ইসলামী আন্দোলনের মেয়র প্রার্থী মুফতী ফয়জুল করিম চরমোনাই পীর সাহেবরা কিছুদিন পূর্বে বলেছিলেন এ সরকারের অধীন নির্বাচনে যাবেন না। কিন্তু তারাই প্রার্থী দিয়ে বর্তমান সরকারের নির্বাচনকে বৈধতা দিচ্ছেন। এটি হচ্ছে সরকারে বি টিম। তাই তাদেরকে বিএনপির হামলা থেকে রক্ষা পেতে হাত-পায়ে লোহার রড বেঁধে ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার পরামর্শ দেন শাহজাহান ওমর। সরকারের অবস্থান সম্পর্কে ওমর বলেন, নোটিশ এসে গেছে। আমেরিকা, জাপান ও ব্রিটেন তাদের নোটিশ দিয়েছে। আরো নোটিশ আসবে। এসময় তিনি শেখ হাসিনাকে চ্যালেঞ্জ করে বলেন, আসুন বরিশালের বেলস পার্কে সমাবেশ করি। যার সমাবেশে লোক বেশি হবে সে টিকে থাকবে। যুগপৎ আন্দোলনের ১০ দফা দাবিসহ দলীয় নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার, হয়রানি, নিত্যপণ্যের দাম বাড়ার প্রতিবাদে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের ১৮ সাংগঠনিক জেলায় এই জনসমাবেশ করার ঘোষণা দেয় বিএনপি। এরই ধারাবাহিকতায় বরিশালে জেলা ও মহানগর বিএনপির উদ্যোগে জনসমাবেশে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ ১০ দফা দাবি বাস্তবায়নের জোর দাবী তোলেন নেতৃবৃন্দ। মহানগর বিএনপির আহবায়ক মনিরুজ্জামান ফারুকের সভাপতিত্বে এতে বক্তৃতা করেন দলের যুগ্ম মহাসচিব মজিবর রহমান সরোয়ার, মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন, সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিন, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুল হক নান্নু, , কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক কাজী রওনোকুল ইসলাম টিপু,কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক এমপি মেজবা উদ্দিন ফরহাদ, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবুল হোসেন খান, উত্তর জেলা বিএনপির আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা দেওয়ান মো. শহিদুল্লাহ, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আলী হায়দার বাবুল, আলতাফ মাহমুদ সিকদার, জিয়া উদ্দিন সিকদার, কেন্দ্রীয় যুবদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুদ হাসান মামুন প্রমুখ।
সঞ্চালনায় ছিলেন মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মীর জাহিদুল কবির জাহিদ, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আবুল কালাম শাহিন ও উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মিজানুর রহমান মুকুল। এর আগে সকাল থেকে জেলা উপজেলা থেকে নেতাকর্মীদের খন্ড খন্ড মিছিল এসে জড়ো হতে থাকে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে। অশ্বিনী কুমার টাউনহল এলাকাসহ সদর রোড ও আশেপাশের অলিগলি লোকারণ্যে পরিণত হয়। স্থান সংকুলান না হওয়ায় সড়ক ছাড়িয়ে বিভিন্ন দোকানপাটের সামনেও অবস্থান নেয়কর্মীরা। ফলে ব্যবসায়ীদের খুব সমস্যা হয় বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত সময়ে। পরবর্তী বড় সমাবেশগুলো বেলস পার্কে আয়োজনের ঘোষণা দেন ব্যারিষ্টার শাহজাহান ওমর। এ সরকারকে হটাতে আরেকটি মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ার আহবান জানিয়ে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মজিবর রহমান সরোয়ার বলেন, আমরা যেভাবে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম, একইভাবে এখন আরেকবার ঝাপিয়ে পড়ার সময় হয়েছে। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন কোনো ফ্যাক্টর নয়, কোন সরকারের অধীনে নির্বাচন কমিশন থাকবে সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি এসময় অতীতের নির্বাচনে সরকারের ভূমিকা তুলে ধরেন ও বলেন নির্বাচনের জন্য আইন করতে হবে। বিএনপির বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিন বলেন, বিএনপি এই সরকারের অধীনে সব নির্বাচন বয়কট করেছে। তাই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে যারাই অংশ নেবেন তারা জাতীয় বেঈমান হিসেবে চিহ্নিত হবেন। জনগণ আপনাদের ক্ষমা করবে না।
আগানী ২৮ মে দেশব্যাপী পদযাত্রায় অংশ নেয়ার আহ্বান জানিয়ে শেষ হয় বরিশালের সমাবেশ।