4:11 pm , May 19, 2023
বিশেষ প্রতিবেদক ॥ বিএনপির কাউন্সিলর প্রার্থীদের নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর কারণে ভোটের মাঠে কোনো প্রভাব পড়বে না বলে মনে করছে আওয়ামী লীগ। ১২ জুন বরিশাল সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। দিন যত যাচ্ছে নির্বাচনের দিনক্ষণ ততোই এগিয়ে আসছে। নির্বাচনকে ঘিরে ইতিমধ্যেই মনোনয়ন পত্র জমা দেয়া শেষ হয়েছে। ইতিমধ্যে বরিশালে ৬ মেয়র প্রার্থী বৈধতা পেয়েছেন। এছাড়াও নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৩৪ জন ও সংরক্ষিত আসনে ৪০ জন বৈধতা পেয়েছেন। এদের মধ্যে বিএনপির কতজন আছে তা জানা না গেলেও অনেকেই মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন বলে সংবাদ পাওয়া গেছে। এছাড়া আগামী ২৫ মে প্রতীক বরাদ্দের আগমুহুর্ত পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহারের সুযোগ রয়েছে। এর মধ্যে মনোনয়ন প্রত্যাহার না করলে আজীবনের জন্য বহিষ্কার হবেন বিএনপির কাউন্সিলর প্রার্থীরা। এর প্রভাবে ভোটারদের উপস্থিতি কম হবে বলে দাবী বিএনপি নেতাদের।
কাউন্সিলর পদে ১৩ জন বিএনপি নেতা মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছিলেন। দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হওয়ায় মহানগর বিএনপির ২৯ নেতাকে দল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নেওয়া দলীয় নেতাদের মাঝেও। এরই মধ্যে অনেকে নির্বাচন থেকে সরে আসার ঘোষণা দিয়েছেন।
মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের নির্ধারিত সময়ের আগেই বৃহস্পতিবার (১৮ মে) প্রার্থীতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন পদধারীরা। ইতিমধ্যে এ নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন কয়েকজন। তবে এক্ষেত্রে পদে না থাকা কর্মীদের বিরুদ্ধেও একই শাস্তির কথা বলায় অনেকে বেকায়দায় আছেন । তবে তারাও প্রার্থীতা প্রত্যাহারের কথা ভাবছেন বলে জানা গেছে। বরিশালে এ পর্যন্ত চারজন কাউন্সিলর প্রার্থী তাদের প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেছেন। যেসব বিএনপি নেতারা এবার মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছিলেন তারা হলেন : মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক এমডি হাবিবুর রহমান টিপু, হারুন অর রশিদ, শাহ আমিনুল ইসলাম, মহানগর বিএনপির ১ নম্বর সদস্য আ.ন.ম সাইফুল আহসান আজিম, তার স্ত্রী মহানগর মহিলা দলের সহসভাপতি জেসমিন সামাদ শিল্পী, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সেলিম হাওলাদার ও ৫নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির আহ্বায়ক মো. মাইনুল হক এবং ১৮নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য সচিব মো. জিয়াউল হক মাসুম, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সেলিনা বেগম, রাশিদা পারভীন, ১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাইদুল হাসান মামুন, মহানগর বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ফিরোজ আহম্মেদ, ২৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি ফরিদ উদ্দিন হাওলাদার, ২৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি হুমায়ন কবির, বিএনপি নেতা ইউনুস মিয়া ও যুবদল নেতা সৈয়দ হুমায়ুন কবির লিংকু। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজন প্রার্থীতা প্রত্যাহার করলেও অনেকেই নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন। মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব কাউন্সিলর মীর জাহিদুল কবির জাহিদ দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এই নির্বাচন বয়কট করেছেন দাবী করে বলেন, বিএনপি এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না এটা আগেই জানানো হয়েছে। তারপরও যদি বিএনপির পদধারী কোনো নেতা নির্বাচনে যায় তাহলে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি বলেন, আমরা ২৫ মে পর্যন্ত দেখবো। তারপর আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হবে এদের। বিএনপির কাউন্সিলর প্রার্থীরা নির্বাচনে অংশ না নিলে ভোটে এর কোনো প্রভাবই পড়বে না বলে দাবী করেছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএম জাহাঙ্গীর। তিনি বলেন, মেয়র নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার হলেও আসলে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ব্যক্তি ইমেজ গুরুত্বপূর্ণ। বিএনপি নির্বাচনে না আসলেও ভোটাররা ভোট দিতে আসবেন বলে জানান জাহাঙ্গীর। যারা নির্বাচনে অংশ নেবেন তাদের ‘বেঈমান’ উল্লেখ করে বিএনপির বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিন বলেন, তারা পরিচিতি পেয়েছেন দলের জন্য, দলের জন্যই তারা জনপ্রতিনিধি হয়ে সম্মান, মর্যাদা ও অর্থবিত্তের মালিক হয়েছেন। গাজীপুরের নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় নেতাদের যে শাস্তি হয়েছে, বরিশালেও একই শাস্তি হবে। রাজনৈতিক বিশ্লেষক কাজী মিজানুর রহমান বলেন, নতুন বরিশাল গড়ার প্রত্যয়ে দুই জন প্রার্থী খোকন সেরনিয়াবাত আর ইকবাল হোসেন তাপসকে নিয়ে আলোচনা সমালোচনা শুনছি। তাদের ব্যক্তি ইমেজ এখানে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে সাধারণ মানুষের কাছে একই সাথে দলীয় ইমেজটাও গুরুত্ব বহন করে। নির্বাচন কমিশন যদি ভোটারদের আস্থা অর্জন করতে পারে তাহলে ৬০ ভাগ ভোট কাষ্ট হবার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানালেন কাজী মিজান।