4:08 pm , May 16, 2023
বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ কেউ প্রায় ২ যুগ কেউ এক যুগেরও বেশী সময় বরিশাল সিটি করপোরেশনের নির্বাচিত কাউন্সিলর ছিলেন। এদের মধ্যে কেউ বর্তমান পরিষদে আছেন, কেউ নেই। এবারও তাদের অনেকেরই বিজয় সুনিশ্চিত ছিলো। স্ব-স্ব ওয়ার্ডের জনগনও আন্তরিকভাবে চেয়েছিলেন তাদের পছন্দের ব্যক্তিরা নির্বাচনে অংশগ্রহন করুক। দাবির পাশাপাশি সবিনয় অনুরোধেরও ঘাটতি ছিলো না জনগনের। কিন্তু তারপরও বরিশাল সিটি করপোরেশনের চলমান নির্বাচনে অংশগ্রহন করেননি মহানগর বিএনপির অন্তত হাফ ডজন নেতা। যারা নগর বিএনপির গুরুত্বপূর্ন পদে রয়েছেন। শুধুমাত্র দলের সিদ্ধান্তের কারনে যুগ যুগ ধরে জনপ্রতিনিধির চেয়ারে থাকা এবং আবারো নিশ্চিত চেয়ারের স্বাদ ও লোভ ত্যাগ করলেন তারা। এজন্য অবশ্য সামান্যতম আফসোস নেই তাদের। কারন ত্যাগটা করেছেন দলের জন্য।
আলহাজ¦ আলতাফ মাহমুদ সিকদার। বরিশাল সিটি করপোরেশনের ৪ বার নির্বাচিত কাউন্সিলর তিনি। বরিশাল পৌরসভা থেকে শুরু করে সিটি করপোরেশনে উন্নীত হওয়া পর্যন্ত ৪ মেয়াদে একটানা ২৩ বছর বরিশাল সিটি করপোরেশনের ২১ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন। ভারপাপ্ত ও দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়রও ছিলেন তিনি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলেও এই ওয়ার্ডে এবারও তার কাউন্সিলর হবার সম্ভাবনা ছিলো প্রায় শতভাগ। নির্বাচিত হবার বিষয়টি প্রায় নিশ্চিত জেনেও প্রার্থী হননি তিনি। কারন দল নির্বাচনে অংশগ্রহন করতে নিষেধ করেছে। এজন্য অবশ্য আফসোস নেই তার। বলেন কিসের আপসোস? দল আমাকে অনেক দিয়েছে। দলের জন্য এইটুকু ত্যাগ করতে পারবনা? তিনি বলেন আফসোস নয় তবে কষ্ট হয়েছে জনগনের জন্য। কারন ওয়ার্ডের হাজার হাজার মানুষ আমাকে অনেক অনুরোধ করেছেন নির্বাচনে দাঁড়ানোর জন্য। তাদের অনুরোধ রাখতে পারিনি তাই কষ্ট হয়েছে। এছাড়া ক্ষমতা বা চেয়ার ত্যাগ করার জন্য এতটুকু কষ্ট নেই। তিনি বলে, বর্তমানে দলের গুরুত্বপূর্ন একটি পদে আছি। বেঁচে থাকলে ভবিষ্যতে হয়ত আরো ভাল পদে আসীন হবো সেটা দলের বিষয়। কিন্তু যেহেতু দল নিষেধ করেছে তাই আমি পদধারী না হলেও দলের একজন সামান্য কর্মী হলেও নির্বাচনে যেতাম না।
মীর জাহিদুল কবির জাহিদ। বিসিসির ১৮ নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর তিনি। মহানগর বিএনপির বর্তমান সদস্য সচিব। হ্যাট্রিক করে একটানা ৪ বার কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে বর্তমান সরকারের সময়েরও তিনি এই ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন। সকল রেকর্ড ভেঙ্গে ৫ম মেয়াদে এবারও এই ওয়ার্ড থেকে তার কাউন্সিলর নির্বাচিত হবার সম্ভাবনা ছিলো শতভাগ। বলতে গেলে তিনি নির্বাচনে না দাঁড়ানোর ফলে এই ওয়ার্ডের ভোটাররা অনেকটা অসন্তুষ্ট। অনেকেই বলছেন এবার কাউন্সিলর ভোট দিবেন না তারা। কারন তাদের প্রিয় মানুষটি ভোটে দাঁড়াননি। জনগনের জন্য বুকফাটা কান্না ছাড়া আর কোন কষ্ট নেই তার। জাহিদ বলেন, কিসের আফসোস কিসের কষ্ট। রাজনীতি করি দলের জন্য আর কাউন্সিলর নির্বাচন করি ওয়ার্ডের সকল জনগনের জন্য। জনগন আমার কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ন কিন্তু হিসেব নিকেশে দল সবার আগে। তাই জনগন শত অনুরোধ করলেও তা রাখিনি,রাখতে পারিনি। কারন দলের কড়া নির্দেশ রয়েছে নির্বাচনে অংশগ্রহন না করার। আমি সে নির্দেশনা পালন করেছি মাত্র। নির্বাচন করলে আল্লাহ চাইলে বিপুল ভোটে আবার বিজয়ী হতাম,চেয়ার পেতাম। কিন্তু দলের জন্য সে চেয়ার ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিতে এক মিনিট ভাবিনি।
তাদের মত ১২ নং ওয়ার্ড থেকে একাধিক বার নির্বাচিত বিএনপি নেতা কে এম শহীদুল্লাহ,২৫ নং ওয়ার্ড থেকে নির্বাচিত মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক জিয়া উদ্দিন সিকদার, ৯ নং ওয়ার্ড থেকে নির্বাচিত জামাল হোসেন নোমান,৭ নং ওয়ার্ড থেকে নির্বাচিত সৈয়দ আকবর এবার দলের সিদ্ধান্তের কারণে নির্বাচনে অংশ গ্রহন করেননি।