4:06 pm , May 15, 2023

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশাল জেলা বাস, মিনিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়ন দখলে নিয়েছে পুরানো শ্রমিক ইউনিয়ন। সোমবার সকালে তারা দখলে নেয়। স্থানীয়রা বলছেন, টার্মিনাল দখলে নিয়েছে বঞ্চিত জেলা বাস, মিনিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের (একাংশ) সম্পাদক আরিফুর রহমান সুমন মোল্লা। এর আগে এই র্টামিনাল মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর অনুসারিদের দখলে ছিল। শ্রমিক ইউনিয়নের সম্পাদক আরিফুর রহমান সুমন মোল্লা ও তার লোকজন সকালে কার্যালয়ের তালা খুলে ভিতরে প্রবেশ করে শ্রমিকদের বদলি সিøপ ও ইউনিয়নের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করে। এ সময় সাধারণ শ্রমিকরাও তাদের সাথে একমত পোষণ এবং তাদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বাসে তাদের কর্মস্থল যাত্রা শুরু করেন। শ্রমিক সবুর, নয়ন, মিজান বলেন, এই শ্রমিক ইউনিয়নের পুরানো শ্রমিক হলেও আমাদের বেকার রাখা হয়েছিল। শুধু আমাদের নয় প্রায় অর্ধশতাধিক শ্রমিকদের কোন ডিউটি দেয়া হয়নি। এতদিন আমরা পরিবার নিয়ে খেয়ে না খেয়ে দিনযাপন করেছি। আবার আমরা কাজ পাইছে। জানা গেছে, ২০২১ সালের ২৭ এপ্রিল বরিশাল জেলা মিনিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের মহানগর শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক পরিমল চন্দ্র দাসকে সভাপতি এবং থ্রী হুইলার শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা শাহরিয়ার আহম্মদ বাবুকে সাধারণ সম্পাদক করে ১৭ সদস্য বিশিষ্ট কার্যকরী কমিটি ঘোষণা করা হয়। পরে শ্রমিক ইউনিয়নের ২০২১-২০২৩ মেয়াদের নির্বাচিত কমিটি অবৈধ এবং কার্যনির্বাহী কমিটির কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে করে শ্রম আদালতে মামলা করেন ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার ছোট কৈবর্তখালী গ্রামের মৃত হুসাইন আহমেদের ছেলে বাস শ্রমিক মো. জামাল হোসেন। (যার মামলা নম্বর ০১/২০২২)। এর পরিপ্রেক্ষিতে বরিশাল শ্রম আদালত ঐ বছরের ১৫ জুন ৮ নম্বর আদেশে বাদী পক্ষে নির্বাচিত কমিটির কার্যক্রমে অস্থায়ী স্থগিতাদেশ দেয়। পরবর্তিতে বরিশাল জেলা বাস, মিনিবাস, কোচ, মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি পরিমল চন্দ্র দাস শ্রম ঢাকা শ্রম আপিলেট ট্রাইব্যুনালে ট্রান্সফার মিসকেস নম্বর ৪৭/২০২২ দায়ের করলে ২৭ জুন ২ নম্বর আদেশে বরিশাল শ্রম আদালতের দেয়া অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা ছয় মাসের জন্য স্থগিতাদেশ প্রদান করেন। এতে শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃত্ব ফিরে পায় পরিমল চন্দ্র দাস ও আহমেদ শাহরিয়ার বাবু’র নেতৃত্বাধিন কমিটি। এরপরই আধিপত্য বিস্তার নিয়ে মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ ও পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী অনুসারিদের মধ্যে পাল্টা পাল্টি মহুড়া হয়। এমতাবস্থায় ২০২২ সালের ৩ এপ্রিল রূপাতলী বাসর্টামিনালে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সাদিক আবদুল্লাহ ও পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। ঐ সময় সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর অনুসারী শ্রমিকেরা ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সুলতান মাহমুদ ও তার অনুসারিদের মারধর ও কার্যালয় ভাংচুর করে। জেলা বাস, মিনিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের (একাংশ) সাধারণ সম্পাদক আরিফুর রহমান সুমন মোল্লা বলেন, এতদিন প্রতিপক্ষ সাদিক আবদুল্লাহর লোকজন ক্ষমতার জোরে শ্রমিক ইউনিয়ন দখলে নিয়ে ইচ্ছেমতো রাজত্ব করেছে। দীর্ঘদিনের পুরানো শ্রমিকদের দুরে সরিয়ে রেখেছে। তিনি বলেন , এখন তাদের ক্ষমতা নাই। তাই সাধারণ শ্রমিকদের নিয়ে শ্রমিক ইউনিয়ন আমাদের নিয়ন্ত্রনে নেয়া হয়েছে। মেয়র সাদিকের অনুসারী শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি পরিমল চন্দ্র দাস বলেন, অবৈধ ভাবে শ্রমিক ইউনিয়ন দখলে নেয়া হয়েছে। আদালতে এখনো মামলা চলমান রয়েছে। সুমন মোল্লা কোন শ্রমিক নয়। বিষয়টি থানা পুলিশকে জানানো হয়েছে। কিন্তু পুলিশ কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন এই শ্রমিক নেতা। কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘রূপাতলী মিনিবাস টার্মিনাল দখলে নেওয়ার বিষয়টি জানা নেই। তবে পরিমল চন্দ্র দাস নামে এক শ্রমিক নেতা মৌখিক একটি অভিযোগ দিয়েছেন, সেটি তদন্ত করা হচ্ছে। সত্যতা পাওয়া গেলে আইন ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।