চৌমাথা লেকের তিনদিকে ফুটপাত দখল করায় মহাসড়কে বেড়েছে যানজট চৌমাথা লেকের তিনদিকে ফুটপাত দখল করায় মহাসড়কে বেড়েছে যানজট - ajkerparibartan.com
চৌমাথা লেকের তিনদিকে ফুটপাত দখল করায় মহাসড়কে বেড়েছে যানজট

3:59 pm , May 15, 2023

যানজটে দিশেহারা নগরবাসী
বিশেষ প্রতিবেদক ॥ রুপাতলী থেকে গড়িয়ারপাড় ১১ কিলোমিটার। এই সড়ক বর্ধিত করার জন্য মাটি খনন ও ভরাট চলছে। ফলে সড়কের মোড়ে মোড়ে সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজট। এদিকে বরিশাল নগরীর অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি পয়েন্ট চৌমাথা-নবগ্রাম রোড। এখানে রয়েছে একটি লেক, একটি বৃহৎ বাজারসহ অসংখ্য বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়কের এই স্থানটিকে ঘিরে আছে চারটি সড়ক। এমনকি পাশের জেলা ঝালকাঠি ও পিরোজপুরের অভ্যন্তরীণ সড়ক এই নবগ্রাম রোড। এখান থেকে নবগ্রাম ও আটঘর কুড়িয়ানার যাত্রীদের যাতায়াতের জন্য রয়েছে মাহেন্দ্র ও চার চাকার ম্যাজিক পরিবহন। যাদের চলাচলে ঈদের পর থেকে নিষেধাজ্ঞা জারীর কথা বলেছিলেন বরিশাল বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ।
ব্যস্ততম বাণিজ্যিক এলাকাটিতে রাস্তায় ফুটপাত দখল করা ছাড়াও লেকের চারপাশে গজিয়ে উঠেছে অসংখ্য খাবারের দোকান। রয়েছে ইজিবাইক, সিএনজি অটোরিকশার যত্রতত্র পার্কিং। দিনের বেলা লেকের পাড়ে জনসমাগম কম হলেও বিকেল থেকে রাত বারোটা পর্যন্ত জনসমুদ্রে পরিণত হয় এই চৌমাথা এলাকা। সারাদিন এখানে যানজট লেগেই আছে। এরউপর মহাসড়ক প্রশস্থ করনের কাজ চলছে সাইডলেন কাটাকাটি চলছে এ অংশেও। ফলে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি আরো বেড়েছে। সোমবার সকালে এখানে যানজটে আটকে পড়ে জট ছোটাতে প্রায় ঘন্টা সময় ব্যয় হলো ট্রাফিক কনস্টেবলের। তিনি জানালেন, এই অবৈধ অটোরিকশা, ইজিবাইক আর চৌ-মাথা লেকের পাড়ের দোকানগুলো এখানে যানজটের অন্যতম কারণ । ইজিবাইক ও অটোরিকশা আমরা একদিকে তাড়াই অন্যদিকে এসে ভীড় করে আবার। একটু দাঁড়িয়ে দেখুন, কি অবস্থা হয় আমাদের। চৌরাস্তার ব্যস্ততম এ মোড়ে কম হলেও তিনজন ট্রাফিক কনস্টেবল প্রয়োজন। সেখানে একজন কনস্টেবল ছুটছেন এ মাথা ও মাথা। এ চিত্র চৌমাথায়সহ নগরীর গুরুত্বপূর্ণ প্রায় মোড়গুলোতেই। নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল, রূপাতলী,  নতুনবাজার, বাংলাবাজার, সাগরদি সবখানে যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং যানজটের অন্যতম কারণ বলে দাবী করেন নগর চিন্তাবিদ কাজী মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, পাশাপাশি ফুটপাতগুলোর অবস্থা দেখুন। একটি সাধারণ মানুষের হাঁটাচলার উপযোগী নেই কোথাও। বিগত জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার তো বলেছিলেন আগে বাইপাস সড়ক হবে গড়িয়ারপাড় থেকে রুপাতলী। তারপর ফোরলেন সড়কের কাজ শুরু হবে। এখন তাহলে এটা কি হচ্ছে? এ প্রশ্নের উত্তর দিতে নারাজ বরিশাল সড়ক ও জনপদ কর্তৃপক্ষ।
তাছাড়া ফোরলেন অতি জরুরী হওয়ার কারণে যা পাওয়া গেছে তার মধ্যেই সড়ক বর্ধিতকরণ চলছে।
যানজট ও ফুটপাত দখল বিষয়ে বরিশাল ট্রাফিক বিভাগের উপ পুলিশ কমিশনার তানভীর আরাফাত বলেন, কি করবো বলুন, অবৈধ যানবাহন এখন প্রায় চারগুণ। আমাদের লোকবল সংকট এখনো কাটেনি। তিনি বলেন, চৌমাথা লেকের পাড়ের দোকানগুলো নিয়ে আমাদের কিছু করার নেই। ওটা কোতোয়ালি থানা ও সিটি করপোরেশনের অধীনে। আমরা যানজট নিরসনের জন্য অবৈধ পার্কিংগুলো প্রতিদিনই সরিয়ে দিচ্ছি। এই মুহুর্তে আবারও ব্যবস্থা নিচ্ছি বলে জানান তিনি।
তবে ইতিপূর্বে ২০২০ সালে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সড়ক ও জনপদ প্রকৌশল বিভাগ বলেছে, বরিশাল নগরের ভেতরে থাকা চারলেন সড়কটি নামে মাত্র চারলেন। এ সড়কটির জন্য বেশ কয়েকটি কালভার্ট এবং আমতলার মোড় থেকে রুপাতলী বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত সরু সড়ক প্রধান প্রতিবন্ধকতা। চলতি মাসের শেষের দিকে এ প্রতিবন্ধকতা দূর করতে আমতলা মোড় এলাকা প্রশস্ত করতে সমাজ কল্যাণ অধিদফতরের কাছে জমির চাহিদা প্রস্তাব করা হবে। পাশাপাশি ওই অংশের সড়কের নিজস্ব জমিও উদ্ধার করা হবে। একইসঙ্গে কালভার্টগুলোকে চারলেনের উপযুক্ত করার পরিকল্পনাও রয়েছে সওজের।
এদিকে সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, কাশিপুর থেকে রুপাতলী পর্যন্ত ৯৫৭টি অবৈধ স্থাপনা চিহ্নিত করা হয়েছে। একইসঙ্গে মূল সড়কের পাশে কতটুকু জমি রয়েছে সড়ক ও জনপথ বিভাগের তা নির্ধারণ করে অভিযানে নামারও পরিকল্পনা করেছে। এছাড়া ভুরঘাটা থেকে কাশিপুর এবং রুপাতলী থেকে লেবুখালী পর্যন্ত সড়কে অবৈধ স্থাপনা সনাক্তের কাজও এগিয়ে চলছে।
জানা গেছে, চারলেন ব্যবহার উপযোগী করার পাশাপাশি জুন মাসের মাঝামাঝি সময়ে বাইপাস সড়ক নির্মাণে হাত দেবে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। এ নিয়ে ইতোমধ্যে স্থানীয় সুধীজন ও সম্ভাব্য বিভিন্ন দফতরের সাথে বৈঠক করা হয়েছে।
তারপরও কেন ফোরলেন সড়ক ও বাইপাস সড়ক আজ পর্যন্ত হয়নি সে উত্তর আর জানা যায়নি। বরিশাল সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদ খান জানান, এখন দুটি ভাগে কাজ শুরু হয়েছে। প্রথমত যেসব সড়ক রয়েছে তাতে আর্ন্তজাতিক নিয়ম মেনে সংস্কার করার। এ কাজের অংশ হিসেবে সাত থেকে ১০ দিনের মধ্যে ভুরঘাটা থেকে লেবুখালী মহাসড়কের মোট ১০টি স্পিড ব্রেকার উচ্ছেদ করা হবে। কারণ মহাসড়কে স্পিড ব্রেকার রাখার কোনো নিয়ম নেই। এর পরপরই হাত দেওয়া হবে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের কাজে। অপরদিকে চারলেন ও বাইপাস নির্মাণের জন্য সম্ভাব্য সবকিছু করা হয়েছে। বাইপাসের জন্য ডিপিপি দাখিল করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT