4:30 pm , May 8, 2023

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ সিটির অন্য সকল ওয়ার্ডের মতো নানা সমস্যায় জর্জরিত ২২ নং ওয়ার্ডেও বইছে নির্বাচনী হাওয়া। ওয়ার্ডটিতে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও স্বতন্ত্র সহ মোট তিন প্রার্থী প্রকাশ্যে তাদের প্রার্থিতা জানান দিয়ে চালিয়ে যাচ্ছে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা। এ পর্যন্ত বিএনপির প্রার্থী বাদে এই ওয়ার্ড থেকে চারজন মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করলেও নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন দুজন। এরা হলেন, বর্তমান কাউন্সিলর আনিসুর রহমান দুলাল এবং ইউসুফ আলী হাওলাদার। মহানগর বিএনপি নেতা এবং এই ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আ ন ম সাইফুল আহসান আজিম এখনো মনোনয়নপত্র সংগ্রহ না করলেও শীঘ্রই সংগ্রহ করবেন এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সব মিলিয়ে ২২ নং ওয়ার্ডে এই তিন প্রার্থীর পদচারণায় বিরাজ করছে নির্বাচনী আমেজ। বর্তমান কাউন্সিলর নানা সীমাবদ্ধতায় আটকে কাঙ্খিত উন্নয়ন চাইলেও করতে পারেননি। তবে ভবিষ্যতে তা অবশ্যই করবেন বলে অঙ্গীকার করে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন। অন্যদিকে অন্য সম্ভাব্য প্রার্থীরা বর্তমান কাউন্সিলরের সীমাবদ্ধতা হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছেন তাদের নির্বাচনী প্রচারণায়। সোমবার দৈনিক আজকের পরিবর্তনের প্রতিবেদক ওয়ার্ড পরিক্রমায় গিয়েছিল নগরীর ২২ নং ওয়ার্ডে। সেখানে সাধারণ ভোটারদের সাথে আলাপে জানা যায়, অন্যান্য সকল ওয়ার্ডের মত এই ওয়ার্ডেও বিগত পাঁচ বছরে তেমন কোন উন্নয়নই হয়নি। ওয়ার্ডে আছে রাস্তাঘাট, ড্রেন, পানির লাইন, বৈদ্যুতিক লাইনসহ প্রায় সকলক্ষেত্রেই সমস্যা। কাঙ্খিত উন্নয়ন তো দূরের কথা গত পাঁচ বছরে এই ওয়ার্ডে হয়নি নূন্যতম উন্নয়ন। মেয়রের খামখেয়ালিতে যেমন কাউন্সিলর চাইলেও কোন কাজ করতে পারেননি, তেমনি তার শারীরিক অসুস্থতা ও ছিল বড় প্রতিবন্ধকতা। তাই ব্যক্তি হিসেবে একজন ভালো মানুষ হওয়া সত্বেও ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের অনেক প্রয়োজনই পূরণ করতে পারেননি বলে জানায় একাধিক ভোটার। এই ওয়ার্ডে তারা সম্পূর্ণ নাগরিক সুবিধা বঞ্চিত বলে জানিয়েছেন। সামনে তারা এমন একজন ব্যক্তিকে তাদের মূল্যবান ভোট প্রদান করতে চান যে কিনা নির্বাচিত হয়ে কিছু করতে না পারলেও অন্ততপক্ষে বিপদে আপদে ডাকলে সারা দিবেন। দেখা মিলবে প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে। এ সকল বিষয়ে তিন প্রার্থীর সাথে আলাপ করা হয়। বর্তমান কাউন্সিলর আওয়ামী লীগ নেতা আনিসুর রহমান দুলাল বলেন, সিটি কর্পোরেশনের নানা সীমাবদ্ধতায় আটকে বিগত পাঁচ বছরে তিনি চাইলেও ওয়ার্ডের সাধারণ বাসিন্দাদের জন্য কিছুই করতে পারেননি। একরকম বাধ্য হয়েই চোখের সামনে দেখতে হয়েছে এ সকল দুঃখ দুর্দশা গুলো। ২২ নং ওয়ার্ডে সকল ধরনের সমস্যা রয়েছে। এই ওয়ার্ডের সাধারণ ভোটাররা প্রায় সকল ধরনের নাগরিক সুবিধা বঞ্চিত। একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে নিজের সাধ্য অনুযায়ী যথাসম্ভব চেষ্টা করেছেন। ভবিষ্যতে যদি একজন যোগ্য মেয়রের তত্ত্বাবধানে সিটি কর্পোরেশন থাকে তবে ওয়ার্ডের সাধারণ বাসিন্দাদের সকল সমস্যা দূর করতে পারবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন আনিসুর রহমান দুলাল।
বিএনপি নেতা ও সাবেক কাউন্সিলর আ ন ম সাইফুল আহসান আজিম বলেন, ২০০৮ থেকে ১৩ সাল পর্যন্ত এই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন তিনি। সে সময় জনগণের জন্য সর্বোচ্চ কাজ করেছেন। তবে প্রহসনের ভোটে পরাজিত হয়েছিলেন। জনগণের সেবার উদ্দেশ্যে এবার পুনরায় অংশ নিচ্ছেন। তার অংশগ্রহণে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে উৎফুল্লতা আছে বলে জানান তিনি। জনগণ তাকে প্রতিনিধি হিসেবে চায়। ওয়ার্ডে কাঙ্খিত উন্নয়ন তো দূরের কথা হয়নি ভোটারদের মৌলিক চাহিদাও পূরণ । তবে এবারের পরিস্থিতি কিছুটা ভিন্ন। এরপরেও ভোটাররা শঙ্কায় রয়েছে। কারণ এর পূর্বে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে সাধারণ ভোটারদের লাঞ্ছিত হতে হয়েছে। সে কারণে তাদের মনে এখনো প্রহসনের ভোটের শংকা রয়ে গেছে। যদি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট হয় তবে শতভাগ নির্বাচিত হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন এই প্রার্থী। স্বতন্ত্র প্রার্থী ইউসুফ আলী হাওলাদার বলেন, জনগণের সেবা করতে তার ভালো লাগে, সেই ভালো লাগা থেকেই প্রতিনিধি নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। ২২ নং ওয়ার্ডে সমস্যার অন্ত নেই। এই ওয়ার্ডের বাসিন্দারা সকল ধরনের নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত। একই সাথে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট হলে শতভাগ নির্বাচিত হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন ইউসুফ আলী হাওলাদার। নগরীর ২২ নং ওয়ার্ডে এবার মোট ভোটার ১০ হাজার ৬৩ জন। মোট চারটি কেন্দ্রে ভোট অনুষ্ঠিত হবে।