২৩ নং ওয়ার্ডে জনগণ ট্যাক্স দিচ্ছে সিঙ্গাপুরের ॥ সুবিধা ভোগ করছে কড়াপুরের ২৩ নং ওয়ার্ডে জনগণ ট্যাক্স দিচ্ছে সিঙ্গাপুরের ॥ সুবিধা ভোগ করছে কড়াপুরের - ajkerparibartan.com
২৩ নং ওয়ার্ডে জনগণ ট্যাক্স দিচ্ছে সিঙ্গাপুরের ॥ সুবিধা ভোগ করছে কড়াপুরের

4:32 pm , May 7, 2023

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ আয়তন ও ভোটারের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি নগরীর ২৩ নং ওয়ার্ডে। প্রার্থীদের প্রচার প্রচারণায় জমে উঠেছে এ ওয়ার্ডের নির্বাচনী প্রচারণা। এ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার দৌড়ে এখন পর্যন্ত ৬ জন মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। আরো একজন মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করার কথা জানিয়েছেন। এর মধ্যে দুজন নির্বাচনে অংশ না নেয়ার কথাও জানিয়েছেন দলীয় সিদ্বান্তের কারনে। ভোটারদের আস্থা অর্জনে দিনরাত প্রচারনা-প্রচারনা করছেন ৫ প্রার্থী। নানা নাগরিক সমস্যায় জর্জরিত এই ওয়ার্ডকে সবচেয়ে বেশি অবহেলিত বলে অভিহিত করেছেন। তাদের দাবি ওয়ার্ডটি যেমন আয়তনের দিক থেকেও প্রথম তেমনি অনুন্নত ওয়ার্ড হিসেবেও এটিকে প্রথম বলা চলে । এই ওয়ার্ডের বাসিন্দারা সকল প্রকার সুবিধা থেকে বঞ্চিত। তাই প্রার্থী হিসেবে প্রত্যেকে নির্বাচিত হলে সকল সমস্যা দূর করবেন এবং সর্বদা জনগণের পাশে থাকবেন এমন আশ্বাসে চালাচ্ছেন নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা। কাউন্সিলর হিসেবে এই ওয়ার্ড থেকে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন বর্তমান কাউন্সিলর এনামুল হক বাহার , শাহিন খান আজাদ, সাবেক কাউন্সিলর মো রউফুর আলম নোমান এবং মো আমির হোসেন মিঠু। এছাড়া মো. শামীম হাওলাদার এবং মো. শামীম নামের দুজন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলেও নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না বলে নিশ্চিত করেছেন। রোববার নির্বাচনী পরিস্থিতির পরিক্রমায় দৈনিক আজকের পরিবর্তনের প্রতিবেদক গিয়েছিল ২৩ নং ওয়ার্ডে। সেখানে সাধারণ ভোটারদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, ২৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইমরান চৌধুরী জামালের মৃত্যুর পরে পরিস্থিতি অনেকটাই পরিবর্তন হয়েছে। বিশেষ করে ওয়ার্ডের সাধারণ ভোটারদের একটি বড় অংশ বর্তমান কাউন্সিলর এনামুল হক বাহারের দিকে ঝুকছেন। ২৩ নং ওয়ার্ডের পথে ঘাটে সাধারণ মানুষের সাথে মিলেমিশে বড় হওয়া এনামুল হক বাহারকে নির্বাচনে একজন শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবে জানিয়েছেন। সাধারণ ভোটাররা আরো জানায়, নির্বাচনে প্রথম অংশ নিলেও শাহিন খান আজাদ বেশ ভালই মাঠ গুছিয়েছেন। অপরদিকে ২৩ নং ওয়ার্ডের স্বনামধন্য পরিবারের সন্তান এবং একবারের সাবেক জনপ্রতিনিধি হওয়া সত্ত্বেও নির্বাচনী মাঠে ভোটারদের নজরে সর্বাপেক্ষা দুর্বল অবস্থানে রয়েছে মো রউফুর আলম নোমান। প্রকৃতপক্ষে ওয়ার্ডে সাধারণ ভোটারদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকার কারণে তিনি দুর্বল অবস্থানে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন সাধারন মানুষ। বিপদে-আপদে তো দূরের কথা ভোটারদের প্রয়োজনেও তার দেখা পেতে বেগ পেতে হয় বলে জানায় একাধিক ভোটার। অন্যদিকে ততটা শক্তিশালী না হলেও পূর্বেও ২৩ নং ওয়ার্ড থেকে নির্বাচনে অংশ নেয়া মোহাম্মদ আমির হোসেন মিঠু তার মত করে চালাচ্ছেন নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা। ওয়ার্ডের সার্বিক সমস্যার বিষয়ে আলাপে বাসিন্দারা জানায়, সর্ববৃহৎ এই ওয়ার্ডটি সিটির হলেও তারা এখানে ভোগ করছেন ইউনিয়ন পরিষদের সুযোগ সুবিধা। বিগত পাঁচ বছরে ওয়ার্ডে কোন কাজ হয়নি। এখানে রয়েছে অসংখ্য কাঁচা রাস্তা ও বাশের সাঁকো। বড় আকারে ১০-১২ টি রাস্তার কোন রাস্তার এই কাজ হয়নি বিগত দিনে। এক কথায় এই ওয়ার্ডের মানুষ প্রায় সকল সুবিধা থেকেই থেকেছে বঞ্চিত। ওয়ার্ডে নেই বিশুদ্ধ পানির পর্যাপ্ত লাইন, নেই সড়ক বাতিসহ প্রয়োজনীয় বিদ্যুত সংযোগ। ওয়ার্ডটিতে পাকা রাস্তা চেয়ে কাঁচা রাস্তার সংখ্যা এখনো বেশি। অপরিচ্ছন্ন খালের পার্শ্ববর্তী ওয়ার্ড হওয়ায় আছে মশার ব্যাপক উপদ্রব। এ সকল সমস্যা নিরসনে মেয়রের পক্ষ থেকে তেমন কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি এ পর্যন্ত। বর্তমান কাউন্সিলরকে কোনঠাসা করে রাখায় তিনি চাইলেও ওয়ার্ডবাসীর জন্য তেমন কিছুই করতে পারেননি। তবে সব কিছুর শেষে ভবিষ্যতে যে পাশে থাকবে এবং এ সকল সমস্যা থেকে তাদের রেহাই দেবে এমন একজন কে মূল্যবান ভোট দিয়ে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করবে বলে জানায় সাধারণ ভোটাররা। এ সকল বিষয় দৈনিক আজকের পরিবর্তনের সাথে আলাপ হয় সকল প্রার্থীদের। বর্তমান কাউন্সিলর এনামুল হক বাহার বলেন , মেয়রের গাফেলতির কারণে ওয়ার্ডবাসির জন্য কোন কাজ করতে পারেননি বিগত পাঁচ বছরে। জনগণের জন্য কাজ করা তো দূরের কথা একটি কাজ আনার জন্য এ পর্যন্ত কোন কথাও শোনাতে পারেননি মেয়রকে। কারণ মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ উন্নয়নের মনোভাব রাখা কারো কথাই শোনেন নি। তার এই গাফেলতির ফল চরমভাবে ভোগ করছে ওয়ার্ডের সাধারণ মানুষ। সর্ববৃহৎ এই ওয়ার্ডটি তে নেই ন্যুনতম নাগরিক সুবিধা। ১০-১২টি পাকা সড়কের একটিও নেই ভালো অবস্থায়। শাখা রাস্তা গুলোর কথা তো না বললেই চলে। সিটি কর্পোরেশনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ওয়ার্ড হওয়া সত্ত্বেও এই ওয়ার্ডে এখনো রয়েছে শতাধিক বাসের সাঁকো। এছাড়াও আছে নানাবিধ সমস্যা। যা প্রতিনিধি হিসেবে থেকেও কোন সমাধান করতে পারেননি। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যোগ্য মনে করে আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাতকে মেয়র প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করেছেন। তিনি নির্বাচিত হলে তার অধীনে শেখ হাসিনার স্বপ্নের সুপরিকল্পিত বাংলাদেশ গড়ার কাজ করবেন। ২৩ নং ওয়ার্ডকে করবেন উন্নত আধুনিক ও পরিচ্ছন্ন মডেল ওয়ার্ড। দূর করবেন জনগণের সকল ভোগান্তি। প্রার্থী শাহিন খান আজাদ বলেন, তার নেওয়ার কিছু নেই , তিনি ওয়ার্ড বাসিকে দিতে এসেছেন। বর্তমানে ২৩ নং ওয়ার্ডে সাধারণ জনগণ ট্যাক্স দিচ্ছে সিঙ্গাপুরের। কিন্তু সুবিধা ভোগ করছে কড়াপুরের। আয়তনের দিক থেকে ২৩ নং ওয়ার্ড যেমন সবচেয়ে বড় তেমনি অনুন্নত ওয়ার্ড হিসেবেও এটি প্রথম। এখানের মানুষ সিটির আওতায় থেকেও ভোগ করছে ইউনিয়ন পরিষদের সুবিধা। এরা বঞ্চিত সকল প্রকার নাগরিক সুবিধা থেকে। ২৩ নং ওয়ার্ডে বিশুদ্ধ পানি, বিদ্যুৎ সংযোগ, অপরিচ্ছন্নতা, মশার উপদ্রব, পাকা রাস্তার সংকট সহ আছে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা। যার কোন সমাধান বিগত দিনে হয়নি। এক কথায় এই ওয়ার্ডের বাসিন্দারা বাস করছে একটি নামের সিটি কর্পোরেশনে বলে জানান শাহিন খান আজাদ। এই ওয়ার্ডে বিগত সময়ে কোন উন্নয়নমূলক কাজ হয়নি। সিটি কর্পোরেশনের অপরিকল্পিত সিদ্ধান্তের কারণে বেশিরভাগ কাজ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছে। সব মিলিয়ে এখন এমন একটি অবস্থা যে সাধারন ভোটারদের কাছে ভোট চাইতে লজ্জা লাগে। তাই নির্বাচিত হতে পারলে এ সকল সমস্যা দূর করার চেষ্টা করবেন প্রাণপণে। নির্বাচিত হতে না পারলেও সর্বদা ২৩ নং ওয়ার্ডের সাধারণ বাসিন্দাদের পাশে থাকার আশা ব্যক্ত করেন এই প্রার্থী। অপর প্রার্থী মো রউফুর আলম নোমান এর সাথে যোগাযোগের একাধিক চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তার বাসভবনে গিয়েও প্রবেশ করা যায়নি অভ্যন্তরে। প্রার্থী মো আমির হোসেন মিঠু বলেন, ২৩ নং ওয়ার্ডটি একটি অবহেলিত ওয়ার্ড। এই ওয়ার্ডে বিগত কোন প্রতিনিধি কোন ধরনের উন্নয়নমূলক কাজ করেননি। আসলে তারা প্রতিনিধি হয়ে জনগণ নিয়ে ব্যস্ত না থেকে ব্যস্ত থেকেছেন তাদের বিভিন্ন সংগঠন নিয়ে, সে কারণে জনগণের দুঃখ দুর্দশা দূর করতে পারেনি। এমন পরিস্থিতি লাঘবে তিনি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। এর আগেও ২০০৮ সালে তিনি কাউন্সিলর হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। ২৩ নং ওয়ার্ডের জনগণ একটি সিটির বাসিন্দা হিসেবে প্রাপ্য সকল ধরনের সুবিধা থেকে বঞ্চিত। তাদের দোরগোড়ায় এ সকল সুবিধা পৌঁছে দেয়ার মনোভাব থেকেই নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। সুষ্ঠু ভোট অনুষ্ঠিত হলে তিনি নির্বাচিত হওয়ার শতভাগ আশাবাদ ব্যক্ত করেন। কারণ তার কোন কলঙ্ক নেই বলে জানান। জনগণ যদি তার উপরে বিশ্বাস করে তবে সেই বিশ্বাসের মর্যাদা শতভাগ রাখবেন বলেও জানান এই প্রার্থী। এখন পর্যন্ত মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেননি গতবারের ভোটে তৃতীয় হওয়া মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, দুই একদিনের মধ্যে ফরম সংগ্রহ করবেন। গত বছর নির্বাচন করে হেরেছেন মেয়র প্রার্থীর জাল ভোট, কেন্দ্র দখলের কারনে। এবার গত বারের চেয়ে ভালো ভোট হবে বলে আশাবাদী তিনি। তাই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্বান্ত নিয়েছেণ। নিরপেক্ষ ভোট হলে জয়ের আশাবাদী এ প্রার্থী বলেন, জনগনের সেবা করার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। নির্বাচিত হলে রাস্তাঘাট উন্নয়ন করবেন। উল্লেখ্য, আগামী ১২ জুনের এ ওয়ার্ডে ভোটার ১৪ হাজার ১১৯ জন। সাতটি কেন্দ্রে ভোট নেয়া হবে।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT