3:30 pm , May 4, 2023
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ আসন্ন বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অনানুুষ্ঠানিক প্রচারনার মধ্যে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী মাঠে রয়েছেন। এ দুটি দলের প্রার্থীরা সাংগঠনিক কর্মকান্ডে যথেষ্ট ব্যস্ত সময় পার করছেন। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী এখনো বিধি বিধানকে পাশ কাটিয়ে প্রকাশ্যে বা অনানুষ্ঠানিক প্রচারনায় না থাকলেও নির্বাচন কেন্দ্রীক সাংগঠনিক কর্মকান্ডে রয়েছেন। তবে ইসলামী আন্দোলন প্রার্থী বড় ধরনের শোডাউন বা যেকোন চমক নিয়েই মাঠে আসতে পারেন বলেও আভাস পাওয়া গেছে। মহানগরী থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে সদর উপজেলার চরমোনাই ইউনিয়নের বাসিন্দা ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ ফয়জুল করিম নগরীর ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার বলে ইতোমধ্যে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
এদিকে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহ বৃহস্পতিবার বরিশাল প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় বলেছেন মেয়র নির্বাচিত হলে তার সব কর্মকান্ড নগরবাসীর জন্য ও নগরবাসীর দ্বারাই পরিচালিত হবে। নগরবাসীর কষ্ট বৃদ্ধি করে, এমন কোন পদক্ষেপ তিনি গ্রহন করবেন না বলেও জানান। তার মতে, ‘বরিশাল নগরবাসীকে দুঃশাসনের হাত থেকে রক্ষা করতেই’ আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা তাকে মনোনয়ন দিয়েছেন। নির্বাচিত হলে, সেই বিষয়টি মাথায় রেখেই আগামী দিনে জনগনের সেবা করতে চান আবুল খায়ের। প্রেসক্লাবে মতবিনিময়কালে আবুল খায়ের আবদুল্লাহ’র নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কয়েকজন নেতা তার সাথে ছিলেন। তবে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ কোন নেতাকে আবুল খায়েরের সাথে দেখা না গেলেও বর্তমান মেয়র সাদিক আবদুল্লাহর মামা প্রেসক্লাব সদস্য কাজী কামাল উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে জাতীয় শ্রমিক পার্টির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে জাপা প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস আসন্ন বরিশাল সিটি নির্বাচন নিয়ে তার নিজের ও দলের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি একটি সুষ্ঠু, গ্রহনযোগ্য ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে ইভিএম বাদ দিয়ে ব্যালটে ভোট গ্রহনসহ বিচারিক ক্ষমতা দিয়ে সেনাবাহিনী মোতায়েন করার দাবি জানিয়েছেন। এ দাবি জানিয়ে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ও দলের কেন্দ্রীয় নেতা প্রকৌশলী ইকবাল হোসেন তাপস সাংবাদিকদের বলেন, স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা না থাকার পাশাপাশি বিগত নির্বাচন অংশগ্রহনমূলক হয়নি। এখনো বিগত নির্বাচনকে ঘোষিত ব্যক্তি ছাড়া অন্যান্য প্রার্থী এবং সাধারন ভোটাররা একটি প্রহসন বলে আখ্যায়িত করে। তিনি বলেন, এ কারণেই এবার বিএনপি সহ সমমনা দলগুলো নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্তে অনঢ় রয়েছে। ‘জাতীয় পার্টি কোন প্রহসনের অংশীদার হতে চায়না’ বলে দাবী করে ইভিএম বাদ দিয়ে সেনাবাহিনী নিয়োগ সহ ভোটাররা যাতে নিরপেক্ষ নির্বাচনে নির্ভয়ে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারে সেই দাবী জানান তাপস।
তার মতে, প্রযুক্তিগত কারণে ‘ইভিএম ব্যবহার করে ডিজিটাল জালিয়াতিও করা যায়’। ‘বায়োমেট্রিক ভিত্তিক ইভিএম অনেক ভোটারকে শনাক্ত করতে পারেনা’ বলে দাবী করে তিনি বলেন, ফলে ‘প্রিসাইডিং অফিসারদেরকে তাদের আঙ্গুলের ছাপ দিয়ে যন্ত্রটি খুলে দেওয়া সহ ইভিএমকে ওভাররাইট করার ক্ষমতা রাখে’। ‘যেকোন ইলেক্ট্রনিক্স যন্ত্রের মত প্রোগামিং-এর মাধ্যমে ফলাফল নিয়ে কারসাজি করা যায়। এছাড়া যারা ভোট গ্রহন করবেন তারাও ফলাফল বদলে দিতে পারেন। চট্টগ্রামের বিগত সিটি নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে দুবার ফলাফল ঘোষণার অভিযোগ রয়েছে’ বলে অভিযোগ করেন তিনি। সেনাবাহিনী নিয়োগ প্রসঙ্গে জাপা প্রার্থী ইকবাল বলেন, দেশের মানুষের সেনাবাহিনীর প্রতি গভীর আস্থা রয়েছে। তাই ভোটারদের মনের ভীতি দূর করা এবং নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা নিশ্চিত করা সহ যেকোন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্য বিচারিক ক্ষমতা সহ সেনাবাহিনী নিয়োগেরও দাবী জানান তিনি।