4:29 pm , May 2, 2023

বরিশাল সিটি নির্বাচন
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশাল সিটি নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি বিধি ভঙ্গের প্রতিযোগীতায় মাঠে থাকলেও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত প্রার্থী ঘোষণা দিয়ে নিয়ম নীতির মধ্যে রয়েছে। তবে আসন্ন এ নির্বাচনে দুটি দলই ভোট বর্জনকারী বিএনপির ভোটারদের কাছে টানার চেষ্টা করছে। মহানগরীজুড়ে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির প্রার্থীর ব্যানার, পোষ্টারে ছেয়ে আছে ১৫ দিন আগে থেকে। নির্বাচন কমিশন সব দেখে শুনেও না দেখার ভান করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
বরিশাল সদর আসন ও মহানগরীর নির্বাচনে এখনো সাধারন মানুষ জাতীয় পার্টি ও ইসলামী আন্দোলনকে আওয়ামী লীগের ‘খুব কাছের এবং আস্থাভাজন বিরোধী দল’ বলে মনে করে থাকে। এরমধ্যে জাতীয় পার্টি নিকট আতীতে ‘ক্ষমতার অংশিদার বিরোধী দল’ হিসেবে সরকারের অংশ ছিল। আর ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে বরিশাল সদর আসনে আওয়ামী লীগ ও ইসলামী আন্দোলন বিএনপিসহ জোটের বিরুদ্ধে অনেকটা একাট্টা হয়ে লড়াই করে পরস্পর আস্থা অর্জন করে। এমনকি ২০১৮ সালের জুনে সিটি নির্বাচনে বেলা ১১টার মধ্যে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থীও ভোট বর্জনের ঘোষণা দিলেও বছর শেষে জাতীয় নির্বাচনে আস্থার সাথেই অংশ নিয়েছিলো।
এসব বিবেচনায় নিয়েই বরিশাল মহানগরীর সাধারন মানুষসহ রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল আসন্ন সিটি নির্বাচনকে নিবিড় পর্যবেক্ষন করছেন। আগামী ১১ জুন ৫৮ বর্গ কিলোমিটারের বরিশাল মহানগরীর পঞ্চম পরিষদের নির্বাচনে ২ লাখ ৭৫ হাজার ২৬৭ জন ভোটারের ভোট দেয়ার কথা। ২০১৮ সালে যে সংখ্যাটা ছিল ২ লাখ ৪২ হাজার ১৬৬ জন।
এ ভোট যুদ্ধে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি অংশ নিচ্ছে না। এ কারণে ভোটারদের আগ্রহ অনেক কম। পাশাপাশি জাতীয় পার্টি আরো দেড় বছর আগে দলীয় প্রার্থী হিসেবে ইকবাল হোসেন তাপসকে মনোনয়ন দিয়ে রেখেছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে তাপসকে ভোট থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ দেয়ার পরেও তা অমান্য করায় তাকে বহিস্কার করা হয়। তবে পরবর্তীতে দলীয় আরো উচ্চ পদে আসীন করে ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি দেড় বছর আগে মনোনয়ন দিয়ে রেখেছে জাতীয় পার্টি। অনেক হিসেব নিকেশ করে এবার চরমোনাইর পীরের ছোট ভাই মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করিমকে মনোনয়ন দিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।
আসন্ন বরিশাল সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া আবুল খায়ের আবদুল্লাহ ও তার সমর্থকরা নানা নির্ধারিত সময়ের আগেই ভোটের প্রচারনায় মাঠে রয়েছেন। একই সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছে জাতীয় পার্টি প্রার্থীও।
আসন্ন বরিশাল সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে এখনো দলের বাইরের চেয়ে ভেতরের চাপকেই মোকাবেলা করতে হচ্ছে বেশী। মহানগর আওয়ামী লীগের সম্পাদক ও বর্তমান মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ দলীয় মনোনয়ন না পাবার পরে আর বরিশালে ফেরেননি। এমনকি তার অনুপস্থিতিতে নগর ভবনের কাজকর্মেও অনেকটা স্থবিরতা চলছে। তবে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আবুল খায়েরের জন্য দলের একটি বড় অংশের নিস্ক্রীয়তার চেয়েও তাদের নিরব বিরোধীতার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
জাতীয় পার্টি প্রার্থী গত ঈদের আগে থেকে নগরীতে গণসংযোগ সহ বিভিন্নভাবে প্রচারনায় রয়েছেন। ইতোমধ্যে তিন সংবাদ সম্মেলন করে আসন্ন সিটি নির্বাচনে বিচারিক ক্ষমতা সহ সেনা মোতায়েন এবং ইভিএম বাতিল করে ব্যালটে ভোট গ্রহনের দাবী জানিয়েছেন।
তবে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থীর পক্ষে এখনো কোন প্রচারনা লক্ষ্য করা যায়নি।
আসন্ন এ সিটি নির্বাচন বর্জনকারী বিএনপি’র ভোটারদের সহানুভূতি পাবার বিষয়টি বিবেচনা করছে দুটি দলই। তবে সেটা কতটা সম্ভব হবে তা বুঝতে আরো কিছুটা অপেক্ষা করতে হবে।