3:49 pm , April 26, 2023
বিশেষ প্রতিবেদক ॥ ঈদ পরবর্তী রাজধানী সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কর্মস্থলমুখী জন¯্রােত বাড়লেও নৌপথে তেমন একটা যাত্রী মিলছে না। বিগত বছরগুলোতে যেখানে একটি নৌযানে কেবিনের টিকেটের জন্য মানুষ দিনের পর দিন হন্যে হয়ে ঘুরতেন, ডেকে একটু জায়গার জন্য সন্ধ্যার নৌযানে সকালে উঠে বসে থাকতেন এবার সেখানে ভিন্ন চিত্র। যাত্রীর অভাবে শুধু বরিশাল-ঢাকা-বরিশাল রুটের ২৫টি রুট পারমিটধারী নৌযানের এক-তৃতীয়াংশ চলাচল করছে। তাতেও যাত্রী এখনো তেমন একটা মিলছেনা। বৃহস্পতি থেকে রোববার পর্যন্ত যাত্রী সংখ্যা বাড়বে বলে আশায় আছেন পরিবহন মালিকরা। ঈদের পরদিন থেকে ঢাকামুখী যাত্রী পরিবহনে বরিশাল নৌ টার্মিনালে ১০টি বেসরকারী নৌযান নোঙ্গর করে অপেক্ষায় থাকলেও যাত্রী না পাওয়ায় ৫-৬টির বেশী বন্দর ত্যাগ করতে পারেনি। বিআইডব্লিটিএ’র বরিশাল নদী বন্দরের নৌ নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিদর্শক কবির হোসেন সাংবাদিকদের জানান, ঈদের পর থেকে দৈনিক ৫-৬টি করে নৌযান যাত্রী নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছে। তবে অবশিষ্ট আরো ৫-৭টি নৌযান যাত্রীর অভাবে ঘাটে নোঙ্গর করে থাকছে। যেসব নৌযান ছেড়ে যাচ্ছে সেগুলোতেও ডেক যাত্রীর সংখ্যা কম হলেও কেবিনগুলো পরিপূর্ণ।
অপরদিকে সড়ক পথে বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চল থেকে রাজধানী ছাড়াও দেশের বিভিন্ন রুটে এখন প্রতিদিন অর্ধ সহ¯্রাধিক বাসযাত্রী বোঝাই করে ছেড়ে যাচ্ছে। প্রতিটি বাস কাউন্টারে একটি টিকেটের জন্য যাত্রীদের ভীড় লক্ষণীয়। অনেক বাস যাত্রী টিকিট না পেয়ে নৌযানে ভরসা রাখছেন বলেও জানা গেছে। অনেক বয়স্ক ব্যক্তি ও শিশুদের নিয়ে অভিভাবকরা নৌযানেই উঠেছেন। বরিশাল মহানগরীর দুটি বাস টার্মিনালেই ঈদের আগের মত পরেও যাত্রীদের ভীড় লক্ষ্য করা গেছে।
অপরদিকে সবচেয়ে বড় ধর্মীয় এ উৎসবের সময়ও রাষ্ট্রীয় সড়ক, নৌ ও আকাশ পরিবহন সংস্থাগুলো অন্ধত্বে ভুগছে বলে যাত্রীদের অভিযোগ। রাষ্ট্রীয় সড়ক পরিবহন সংস্থা-বিআরটিসি’র বরিশাল বাস ডিপো থেকে ঈদে আগে-পরে কোন বিশেষ বাস সার্ভিস প্রবর্তন করা সম্ভব হয়নি সচল বাসের অভাবে। ডিপোটিতে ৭০টি যাত্রীবাহী বাসের মধ্যে প্রায় ২৫ টি এখনো অচল। নৌপথে রাষ্ট্রীয় নৌ-বানিজ্য সংস্থা বিআইডব্লিউটিসি করোনা মহামারীর আগ থেকেই হাত গুটিয়েছে। দেশের একমাত্র অভ্যন্তরীণ স্টিমার সার্ভিসটি এক বছরের বেশি সময় ধরে সম্পূর্ণ বন্ধ থাকার পরে ঈদের অগে দুদিন বিশেষ সার্ভিস চালিয়ে হাত গুটিয়েছে। জাতীয় পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সম্পূর্ণ অযৌক্তিকভাবে দক্ষিণাঞ্চলের একমাত্র বিমান বন্দরের সাথে সপ্তাহে মাত্র ৩দিন ফ্লাইট পরিচালনা করছে গত আগষ্ট থেকে । তবে ঈদের আগে কয়েকটি বিশেষ ফ্লাইটে যাত্রী পরিবহন করলেও ঈদ পরবর্তী রাজধানীমুখী যাত্রীদের জন্য তা অব্যাহত রাখেনি। অথচ বেসরকারী দুটি এয়ারলাইন্স বরিশাল সেক্টরে নিয়মিত ফ্লাইটে তিনগুন ভাড়ায়ও যাত্রী পরিবহন করছে।