3:58 pm , April 25, 2023
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ দীর্ঘ তাপ প্রবাহের পরে বরিশালে বৃষ্টি হলেও স্বস্তি মেলেনি। তবে বৃষ্টি খুব একটা স্থায়ী না হলেও জনমনে সামান্য সময়ের জন্য কিছুটা স্বস্তি নিয়ে আসে। ক্ষণস্থায়ী এ বৃষ্টির ফলে বরিশালে তাপমাত্রার পারদ ৩৫.৬ ডিগ্রী থেকে ২৯.৫ ডিগ্রীতে নেমে আসে। শনিবার দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্নস্থানে ঈদ উল ফিতরের নামাজ বাদে বৃষ্টির জন্য মহান আল্লাহ রাব্বুল আল আমীনের রহমত কামনা করা হয়। গত ১ এপ্রিল বরিশালে ১.২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের ২১ দিন পরে ২২ এপ্রিল বিকেলে সম পরিমান বৃষ্টির দেখা মিলল বরিশাল সহ সন্নিহিত এলাকায়। শুক্রবার পটুয়াখালীর কোন কোন এলাকায় ১ মিলি বৃষ্টি হয়েছিল। আবহাওয়া বিভাগ থেকে লঘুচাপের বর্ধিতাংশ দক্ষিণাঞ্চল সংলগ্ন উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানের কথা জানিয়ে বরিশাল সহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় অস্থায়ীভাবে দমকা ঝড়ো হাওয়া সহ বৃষ্টি ও বজ্র বৃষ্টির কথা বলা হয়েছে। সেই সাথে কোন কোন স্থানে শিলা বৃষ্টির সতর্কতার কথাও বলেছে আবহাওয়া দপ্তর। পশাপাশি দিন ও রাতের তাপমাত্রা ১-২ ডিগ্রী সেলসিয়ার বৃদ্ধি সহ মঙ্গলবার সকালের পরবর্তী ৪৮ ঘন্টায় তাপমাত্রা আরো বৃদ্ধির কথা বলেছে আবহাওয়া অফিস। সোমবার দুপুরে বরিশালে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার পারদ ছিলো ৩৫.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস। অথচ এপ্রিলে বরিশালে সর্বোচ্চ স্বাভাবিক তাপমাত্রা থাকার কথা ৩৩.৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস। সোমবার দুপুরের পরে বরিশালের আকাশে মেঘের ঘনঘটা লক্ষ্য করা গেলেও বিকেল ৫টা পর্যন্ত কোন বৃষ্টি হয়নি।
গত ১ এপ্রিল বরিশালে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৬.৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস থেকে ৪৮ ঘন্টা পরেই ৩২.৩ ডিগ্রীতে উঠে যায়। ৩ এপ্রিল দুপুর থেকেই আবহাওয়া চৈত্রের আদলে ফিরতে শুরু করে। ওই দিন তাপমাত্রার পারদ ৩৪.৩ ডিগ্রীতে স্থির হয়। যা ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে ১ ডিগ্রী সেলসিয়াস বেশী। গত ১৩ এপ্রিল দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় তাপমাত্রা ৩৯ ডিগ্রী সেলসিয়াসে পৌছে। ১৪ এপ্রিল দুপুরে তাপমাত্রার বাড়াবাড়ি বরিশালের সাম্প্রতিক ইতিহাসের সর্বোচ্চ পর্যয়ে ৩৯.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস ছুঁয়ে যায়। যা ছিল আবহাওয়া বিভাগের এ সময়ের স্বাভাবিক তাপমাত্রার ৬.২ ডিগ্রী সেলসিয়াস বেশী। পটুয়খালী ও খেপুপাড়াতে তা ছিলো ৪০ ডিগ্রী সেলসিয়াসের কাছেই।
এর পরবর্তী ৮ দিনই বরিশালে তাপমাত্রার পারদ ৩-৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস ওপরেই ছিল। সাম্প্রতিককালের ভয়াবহ এ তাপ প্রবাহে বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগের শেষ ছিলোনা । যদিও ঈদের আগের ৩টি দিন পরিস্থিতি কিছুটা পাল্টাতে শুরু করে। তবে আবহাওয়ার তারতম্যে সাধারন মানুষের দুর্ভোগ পিছু ছাড়েনি।
গত ২৪ অক্টোবর ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’এ ভর করে প্রবল বর্ষণে সমগ্র দক্ষিণাঞ্চল সয়লাব হবার পরে টানা সাড়ে ৪ মাস এ অঞ্চলে কোন বৃষ্টি হয়নি। চলতি বছরে বৃষ্টিবিহীন জানুয়ারী ও ফেব্রুয়ারীর পরে গত মার্চে স্বাভাবিকের ৪১% বেশী বৃষ্টি হয়েছে দক্ষিণাঞ্চলে। আবহাওয়া বিভাগের মতে, গত মাসে সারাদেশে স্বাভাবিকের চেয়ে ৭৭.৬% বেশী বৃষ্টি হলেও বরিশালে স্বাভাবিক ৫৩ মিলিমিটারের স্থলে ৭৫ মিলি বৃষ্টি হয়েছিল।
এমনকি বিদায়ী শীত মৌসুমে তাপমাত্রার পারদ স্বাভাবিকের ৩ ডিগ্রী নিচে নামার পর গ্রীষ্মের আগেই লাগামহীনভাবে তাপমাত্রার পারদ ঊর্ধ্বমুখি হবার ফলে শিশু ও বয়োবৃদ্ধদের কষ্ট আর দুর্ভোগ ক্রমশ বাড়ছিলো। এমনকি গত কয়েকদিন জরুরী প্রয়োজন ছাড়া দুপুর থেকে বেশীর ভাগ মানুষই ঘরের বাইরে বের হননি।