3:41 pm , April 6, 2023
মুফতি মাও. ডা. এম এ ছালাম ॥ হে ঈমানদারগণ! এ মাসেই মুমিন বান্দা শেষের দশদিন সংসার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে মসজিদে ই’তিকাফ করবে, ইবাদতে ইবাদতে মশগুল থাকবে এবং লায়লাতুল কদরের খোঁজ করবে। কদরের রাতেই আল্লাহর তরফ থেকে প্রথম আল-কুরআন নাযিল হয়েছে। সে রাতে আল্লাহর নির্দেশে ফেরেশতাগণ ফজর পর্যন্ত ‘শান্তি’ ‘শান্তি’ বলে দুআ করতে থাকে। সামাউনের আমলে সারাদিন জিহাদ করে সারারাত ধরে ইবাদত করতেন এবং এক নাগাড়ে এক হাজার মাস এরুপ করেছিলেন। সাহাবীরা রাসুল (সাঃ) কে তাদের অল্প আয়ুর কথা বললে তিনি বললেন- তোমরাও এক হাজার মাস থেকেও শ্রেয় উত্তম রাত পাবে। এ মাস যেহেতু পবিত্রতার মাস, সংযম ও আত্মশুদ্ধির মাস, রহমত ও মাগফিরাতের মাস, নাজাতের মাস, তাই আল্লাহর অনুগ্রহ, ক্ষমা ও মুক্তিলাভের চেয়ে মোক্ষম সময় ও সুযোগ আর নেই। সিয়াম সাধকের উচিত হাত, পা, চোখ, কান, মুখ ও মনকে মাকরুহ ও হারাম থেকে বিরত রাখা। মিথ্যা, প্রবঞ্চনা ও পরনিন্দার থেকে দূরে থাকা। হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেন- “মানলাম য়াদা কাওলায় যুরে ওয়াল আমালা বিহি ফা লাইসালিল্লাহে হাজাতুন ফী আইয়াদা তায়াম্মাহু ওয়া শারাবাহ”- যদি কেউ মিথ্যা কথা ও পাপকর্ম থেকে বিরত না হয় তবে তার পানাহার বর্জনে অর্থাৎ উপবাস পালন আল্লাহর কাছে কোন প্রয়োজন নেই। রাসুল (সাঃ) বলেন- সায়েমের বা সিয়াম পালনকারীর দু’আ কবুল হয়। কিন্তু চারজনের দোয়া কবুল হয় না। মদ্যপায়ী, বাপ-মায়ের অবাধ্য, আত্মীয়তা ছিন্নকারী ও মুসলিমের প্রতি শত্রুতা পোষণকারী। অন্য হাদিসে রয়েছে- যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে শিরক করে এবং মিথ্যা বলে, গীবত বা পরচর্চাকারী তো হারাম নর মাংস ভক্ষণকারীর সমান। আত্মশুদ্ধির এ পরম আমোঘ মাসটিতে সাধনা সিদ্ধি লাভ করার সুযোগ মেলে, ত্যাগ-তিতিক্ষা আমাদের জীবনকে করে তোলে পরিশোধিত। ভোগের স্বাধীনতাও স্বেচ্ছাচার থেকে সংযম ও ত্যাগের কঠোরতায় এসে এ সিয়াম মুমিনকে যেমন দৈহিক ও জাগতিক উন্নতির প্রশিক্ষণের সুযোগ দেয় তেমনি মানবজীবনের আধ্যাত্মিক সাধনার উৎকর্ষ লাভের ও সুবর্ণ সুযোগ এনে দিয়ে জান্নাতের দরজা খুলে দেওয়ার চাবি তুলে ধরে এ সিয়াম সাধনা। (চলবে)