3:32 pm , April 5, 2023
বিশেষ প্রতিবেদক ॥ মসজিদ, মন্দির, অফিস, আদালত গৃহস্থালি কাজ বা ঘরের ভিতর পড়াশুনা কিংবা চা দোকানের আড্ডার একটাই আলোচ্য চারিদিকে। এমনকি এটা এখন মানসিক যন্ত্রণাও সকলের। কেউ নিজের হাত পায়ের লাল দাগ দেখিয়ে বলেন ‘এটা আবার ডেঙ্গু বা করোনা নয়তো’। সামান্য গাঁ গরম হলেই ম্যালেরিয়া আতংকে ছুটে যাচ্ছেন ডাক্তারের কাছে। এমনকি বরিশালের প্রধান দুটি হাসপাতালের ডাক্তার ও রোগীদের মধ্যেও এখন মশা আতংক ভর করেছে। দিনের বেলাও মশারী টানিয়ে থাকার কথা বললেন শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান মনিরুজ্জামান শাহিন। তিনি বলেন, গত দুই/তিন মাসে যেন পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মশা। জ্বালাতনে ঠিকমতো নামাজ আদায় হচ্ছে না। আবার অফিসে বা চেম্বারেও বসা যাচ্ছে না। হাসপাতালের পাশের ডোবা নালাগুলোতে অসংখ্য মশার লাভা। এতে রোগীদের সুচিকিৎসাও ব্যাহত হচ্ছে বলে জানান ডাঃ এম শাহিন। আর বরিশাল জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক মীর্জা লুৎফর রহমান বলেন, চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি পাঠানো রোগী মশার কামড়ে অসুস্থ হয়ে আবার ফিরে আসছে হাসপাতালে। জেনারেল হাসপাতালেতো এই মুহুর্তে ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়ার ভয়ে আতংকিত রোগীরা। দিনের বেলাও কয়েল জ্বালাতে হয় আমাদের। আর প্রতিটি কয়েলেই রয়েছে ক্ষতিকর উপাদান।
বরিশালের সামাজিক আন্দোলনের নেতা বরিশাল সাহিত্য সংসদ এর সহ সভাপতি কাজী মিজানুর রহমান নগরীর চারপাশের ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করা ও লাভা ধ্বংস করার উপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন। পরিবেশ আন্দোলনের নেতা এনায়েত হোসেন শিবলু এবং সাংস্কৃতিক সংগঠন সমন্বয় পরিষদের সভাপতি নজমুল হোসেন আকাশসহ সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ নগরীর খালগুলো দ্রুত পরিষ্কার করে নগরবাসীকে মশার হাত থেকে বাঁচানোর আহ্বান জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, নগরীর সাতটি খাল ভরাট হতে হতে এখন মশাদের অভায়ারণ্য হয়েছে। কদিন পর অবৈধ স্থাপনায় ভরে যাবে। তাই ইচ্ছেকৃতভাবেই ময়লা, আবর্জনা ও বর্জ্যপদার্থে পরিপূর্ণ করা হচ্ছে খালগুলো। যার মধ্যে মশাদের লাভাগুলো দেখে মনে হয় বরিশালের মৃতপ্রায় খালগুলোতে যতœসহকারে মশাদের চাষ করা হচ্ছে। এই খাল পুণরুদ্ধার ও পরিষ্কারের দাবি জানান নেতৃবৃন্দ। এ সময় মসজিদগুলোতে মশার উৎপাত বেড়েছে দাবী করে বরিশাল মহানগর ইমাম সমিতির সভাপতি মাওলানা আব্দুল মান্নান বলেন, মুসল্লীদের তারাবি নামাজ আদায় করতে কষ্ট হচ্ছে। হাফেজ তেলওয়াত করতে গেলে মুখে ঢুকে যাচ্ছে মশা। বিগত সময়ে মশাদের এতোটা জ্বালাতন ছিলোনা। এবার যেন খুবই বেশি। আল্লাহ হেফাজত করুন বলে সকলের জন্য দোয়া করেন ইমাম মাওলানা আব্দুল মান্নান।