ভোলায় তরমুজের বাম্পার ফলন, কৃষকের হাসি কেড়ে নিয়েছে দালালরা ভোলায় তরমুজের বাম্পার ফলন, কৃষকের হাসি কেড়ে নিয়েছে দালালরা - ajkerparibartan.com
ভোলায় তরমুজের বাম্পার ফলন, কৃষকের হাসি কেড়ে নিয়েছে দালালরা

3:30 pm , March 23, 2023

মো. আফজাল হোসেন, ভোলা ॥  ভোলার মাটি অনুকূলে থাকায় চলতি বছর সাড়ে ৯ লাখ টন তরমুজ উৎপাদন হয়েছে। তবে কৃষকের মুখের হাসি কেড়ে নিচ্ছে স্থানীয় কতিপয় দালাল। যাদেরকে প্রতিটি তরমুজের বিপরীতে দিতে হচ্ছে ৭ থেকে ১০টাকা। এদের কারনে সরাসরি বেপারীদের কাছে বিক্রি কিংবা মোকামেও পাঠাতে পারছে না কৃষকরা। দ্বীপজেলা ভোলা তরমুজ চাষের জন্য বেশ উপযোগী। যে কারনে গতবছর বেশ ভালো ফলন আর দাম পেয়েছেন কৃষকরা। একই সাথে কৃষকরা লাভবান হয়েছে বলেই চলতি বছরে আরো বেশি জমিতে তরমুজের চাষাবাদ করেছেন। তাইতো জেলায় গত বছরের চেয়ে ৭হাজার হেক্টর জমিতে তরমুজের বেশি চাষাবাদ হয়েছ্।ে চলতি মৌসুমে জেলার ৭ উপজেলায় ১৮ হাজার ৩৮৩ হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ৭হাজার হেক্টর বেশি। চলতি বছর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১১ হাজার ২৪৯ হেক্টর। হেক্টর প্রতি তরমুজ উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫২ টন করে। আর মোট তরমুজ উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা হাতে নেওয়া হয়েছে ৯ লাখ ৪৮ হাজার ৩৭৬ টন। বর্তমানে কৃষকদের মুখে হাসি থাকার কথা থাকেেলা রয়েছে চরম ক্ষোভ। একটি তরমুজের পিছনে ৭০থেকে ৮০ টাকা খরচ থাকলেও মাঠে বিক্রি হচ্ছে একশ থেকে ১১০টাকা দরে।আর স্থানীয় প্রভাবশালীদের দিতে হচ্ছে ৭থেকে ৮টাকা করে। নিজের ফসল নিজে বিক্রি কিংবা গাড়ীতে তুলে দিতে পারছেন না কৃষকরা। সবই দালালদের মাধ্যমেই দিতে হচ্ছে বলে প্রতারণার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন অসহায় কৃষকরা। জেলার চরফ্যাশন উপজেলার চরকলমী ইউনিয়নের একাধিক তরমুজের ক্ষেতে গেলে একই ধরনের সমস্যার কথা বলেন তরমুজ চাষীরা। চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে রফিকুল ইসলাম, বেল্লাল হোসেন এবং শরীফ বলেন, রোদ পুড়ে চাষাবাদ করি। ঋন আর ধারদেনা করে ফসলাদী ফলাই দুটাকা আয় করবো বলে। অথচ স্থানীয় নেতা আর প্রভাবশালী ব্যক্তি যারা দালালী করে এদের জন্য পারছি না। আমার ফল আমি ক্ষেত থেকে কেটে মাথায় করে ট্রাকে পৌঁছে দিব এবং ২/৪টাকা লাভবান হবো। সেখানেও বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে দালালরা। আমার তরমুজ দাম ধরে বিক্রি করছে তারা। লেবার তারা দিবে। আমাদের উপর জুলুম করছে এই স্থানীয় নেতাফেতারা। চাষাবাদ করি আমরা আর এরা এসে ফাও টাকা নিয়ে যাবে। আমাদের তরমুজ সরাসরি বেপারীর কাছে আমরা বিক্রি করবো এবং ক্ষেতেই টাকা যাতে পাই এজন্য আমরা সরকারের কাছে সহযোগীতা কামনা করছি। এদিকে তরমুজের ক্ষেতে কৃষকদের সাথে কথা বলার সময় ছুটে আসেন স্থানীয় প্রভাবশালী চর কলমী ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার আবুল বাশার বাচ্চু এবং একই ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারন সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন। তারা জানান,কৃষকরা সরাসরি বিক্রি করছে না। গাড়ীর চালক কিংবা বেপারীরা কৃষকদের বিশ্বাস করছে না বলেই আমরা সহযোগীতা করছি। তাতে আমরাও লাভবান হচ্ছি। ক্ষেত থেকে আমাদের লোক দিয়ে ট্রলার কিংবা ট্রাকে তুলে দিচ্ছি তাতে তরমুজ প্রতি ৭/৮টাকা দিচ্ছে আমাদের।
বাম্পার ফলনের কথা জানিয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এএফএম শাহাবুদ্দিন জানান, তরমুজের ক্ষেতে পোকার আক্রমন হয়েছে। তবে এজন্য কৃষকদের আমরা প্রশিক্ষন দিয়ে থাকি। এছাড়া সাড়ে ৯লাখ মেট্রিক  টন তরমুজ উৎপাদন হয়েছে জেলায়। তবে পরিবহন ব্যবস্থা এবং প্রতারণা না হলে কৃষকরা আরো লাভবান হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT