3:58 pm , March 17, 2023

বিশেষ প্রতিবেদক ॥ চৈত্রের শুরু থেকেই দক্ষিনাঞ্চল জুড়ে নানামুখি বিরূপ আবহাওয়ায় পরিবেশগত সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। জনস্বাস্থ্য ও ফসলের ঝুঁকিও বাড়ছে। এবার মধ্য মাঘ থেকে দক্ষিণাঞ্চলে বসন্তের আবহ বিরাজ করলেও ফাল্গুনের শুরু থেকে শীত ফিরে আসায় জনজীবনে অস্বস্তির সাথে জনস্বাস্থ্য সমস্যাও দেখা দেয়। ঠান্ডা আর গরমে ঘরে ঘরে সর্দি-কাশির সাথে জ¦রের প্রকোপও বাড়তে থাকে। কিন্তু ফাল্গুনের শেষ ভাগে এসে তাপমাত্রার পারদ স্বাভাবিকর ওপরে উঠে যাওয়ায় জনজীবনে যথেষ্ট অস্বস্তি শুরু হয়। এমনকি এবার শীত মৌসুমে বরিশালে তাপমাত্রার পারদ ৮ ডিগ্রী সেলসিয়োসের কাছে নেমে আসে। যা ছিল স্বাভাবিকের প্রায় ৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস কম।
পশ্চিমা লঘুচাপের একটি বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও সংলগ্ন এলাকায় অবস্থানের পাশাপাশি মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিন বঙ্গোপসাগরে অবস্থানের কথা বলেছে আবহাওয়া বিভাগ। বরিশাল সহ দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা ঝড়ো হাওয়া সহ বজ্র বৃষ্টির কথাও বলা হয়েছে। এমনকি বিক্ষিপ্ত শীলা বৃষ্টি সহ পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ৪৫-৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড় বৃষ্টির সম্ভাবনার কথা জানিয়ে বরিশাল সহ দক্ষিনাঞ্চলের নদী বন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতেও বলা হয়েছে।
এমনকি এবার ফাল্গুনের মধ্যভাগে কুয়াশার অস্বাভাবিক দাপটের মধ্যেও তাপমাত্রা ছিল স্বাভাবিকের অনেক ওপরে। গত ২৫ ফেব্রুয়ারী বরিশালে সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ছিল স্বাভাবিকের প্রায় ৬ ডিগ্রী বেশী, ২১.২ ডিগ্রী সেলসিয়াস। আবহাওয়া বিভাগের মতে, ফেব্রুয়ারী মাস জুড়ে বরিশালে সর্বনি¤œ স্বাভাবিক তাপমাত্রা থাকার কথা ১৪.৯ ডিগ্রী সেলসিয়াস। ভোলা ও পটুয়াখালীতে সেদিন সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ছিল ২১.৪ ডিগ্রী।
এমনকি দক্ষিণাঞ্চল জুড়ে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রাও ইতোমধ্যে স্বাভাবিকের যথেষ্ট ওপরে। মাঘে বসন্তের আবহাওয়ার পরে মৌসুমের মূল সময়টি জুড়েই গ্রীষ্মের আবহ বিরাজ করছে। ২৫ ফেব্রুয়ারী দুপুরে বরিশালে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩২.২ ডিগ্রী সেলসিয়াস। অথচ আবহাওয়া বিভাগের মতে এসময়ে সর্বোচ্চ স্বাভাবিক তাপমাত্রা থাকার কথা ২৮.২ ডিগ্রী। পটুয়াখালীতে ঐ সময়ে তাপমাত্রার পারদ ৩৩ ডিগ্রীেেত উঠে যায়। কিন্তু এসময়ে জেলাটির সর্বোচ্চ স্বাভাবিক তাপমাত্রা থাকার কথা ২৮.৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস।
এদিকে গত কয়েকদিন তাপমাত্রার পারদ আবার কিছুটা হ্রাস পাবার সাথে বৃহস্পতিবার শেষ রাত থেকে সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত মেঘনা অববাহিকা সহ দক্ষিণাঞ্চলের বেশীরভাগ এলাকায় মাঝারী কুয়াশার চাঁদরে ঢেকে ছিল। গত বুধবার দুপুরে দক্ষিনাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় অতি সামান্য বৃষ্টিপাতও হয়েছে। বৃহস্পতিবার পটুয়াখালীতে সামান্য বৃষ্টিপাতের কথা বলেছে আবহাওয়া বিভাগ।
গত ৩ মাসে বৃষ্টিবিহীন দক্ষিনাঞ্চলে তা এখন কৃষি ও জনস্বাস্থ্যের জন্য বহু প্রতিক্ষিত। বিগত বছরের মত চলতি বছরের প্রথম মাসেও বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলে কোন বৃষ্টি হয়নি। এমনকি আবাহাওয়া বিভাগের মতে ফেব্রুয়ারী মাসে বরিশাল অঞ্চলে স্বাভাবিক ২৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের কথা থাকলেও পুরো মাস জুড়েই কোন বৃষ্টির দেখা মেলেনি। আর চলতি মার্চেও আবহাওয়া বিভাগ থেকে ৫৩ মিলিমিটার স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেয়া হলেও মাসের প্রথম ১৭ দিনে কোন বৃষ্টির দেখা মেলেনি। তবে গত দুদিনই বরিশালের আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকছে। শুক্রবার দিনভর বরিশালের আকাশে হালকা কালো মেঘ বার বারই সূর্যকে আড়াল করেছে।