3:32 pm , March 15, 2023

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ খাদ্য বিভাগে চাল সরবরাহের জামানতে জাল পে-অর্ডার দেওয়ার অভিযোগের মামলায় বরিশালের গৌরনদী উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানকে জেলে পাঠিয়েছে আদালত।
উচ্চাদালতের নির্দেশে বুধবার বরিশাল জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেন আইনজীবীরা। জেলা ও দায়রা জজ কেএম রাশেদুজ্জামান রাজা জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে ভাইস চেয়ারম্যানকে জেলে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন বেঞ্চ সহকারী মো. কামরুল ইসলাম।
ভাইস চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান ফরহাদ মুন্সি খাদ্য বিভাগের পুষ্টি চাল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এলাহী এগ্রো লিমিটেডের সত্ত্বাধিকারী। সে গৌরনদী উপজেলার সুন্দরদী গ্রামের মৃত আব্দুল খালেক মুন্সির ছেলে এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক।
বেঞ্চ সহকারী মো. কামরুল ইসলাম জানান, গত ৬ ফেব্রুয়ারী কোতয়ালী মডেল থানায় ভাইস চেয়ারম্যান এবং অগ্রনী ব্যাংকের দুই কর্মকর্তাকে আসামী করে মামলা করা হয়।
মামলার বাদী হলেন বরিশাল জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের কারিগরী খাদ্য পরিদর্শক ও মামলা শাখার প্রধান মো. দেলোয়ার হোসেন মোল্লা।
মামলার অপর দুই আসামী হলেন অগ্রণী ব্যাংকের ঢাকার পোস্তখোলা শাখার ব্যবস্থাপক মো. আলী রেজা (৫২) এবং অগ্রণী ব্যাংকের আগৈলঝাড়া উপজেলার পয়সার হাট শাখার তৎকালীন ব্যবস্থাপক অম্লান বিশ্বাস।
মামলার আসামীদের বিরুদ্ধে প্রতারণামূলকভাবে জাল পে অর্ডার প্রস্তুত ও খাটি হিসেবে ব্যবহারের মাধ্যমে অপরাধমূলক বিশ্বাস করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।
বেঞ্চ সহকারী বলেন, মামলার আসামী হিসেবে ভাইস চেয়ারম্যান ফরহাদ হোসেন মুন্সি উচ্চাদালত থেকে ৪ সপ্তাহের আগাম জামিন নেন। জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর উচ্চাদালতের নির্দেশে এক সপ্তাহ পূর্বে বরিশাল জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হন। বিচারক তাকে জামিন দিয়ে নথি তলব করে জামিনের মেয়াদ বাড়ানো নিয়ে শুনানীর দিন ধার্য্য করেন।
বুধবার ধার্য্যদিনে আদালতে হাজির হয় ভাইস চেয়ারম্যান। বিচারক মামলার অভিযোগের গুরুত্ব আমলে নিয়ে জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে জেলে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।
আদালতের সরকারী নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) এনামুল হক বলেন, মামলার অপর দুই আসামী ব্যাংক কর্মকর্তা অন্তবর্তীকালীন জামিনে রয়েছেন।
মামলার বরাতে জিআরও বলেন, পুষ্টি চাল সরবরাহের চুক্তিভত্তিক মিলার হলো এলাহী এগ্রো লিমিটেড। এ প্রতিষ্ঠান ২০১৮ সালের ১২ ডিসেম্বর থেকে ২০২২ সালের ১৫ জুন পর্যন্ত মোট ১১টি পে-অর্ডারের মাধ্যমে ২ কোটি ৬৮ লাখ ৩৬ হাজার ৫০৪ টাকার জামানত দেয়। পরে যাচাইয়ে ভুয়া প্রমাণিত হয়। এই ১১টি পে অর্ডারের বিপরীতে প্রকৃতভাবে জমা দেওয়া হয়েছে ৭ হাজার ২০০ টাকা। অর্থাৎ ২ কোটি ৬৮ লাখ ২৯ হাজার টাকা জালিয়াতি করা হয়েছে।
তিনি জানান, ব্যাংকে ১০০ টাকা জমা দিয়ে তৈরি করা হয় ১ কোটি ৯ লাখ ৩৯ হাজার ৫০৪ টাকার একটি পে-অর্ডার। ২০০ টাকা জমা দিয়ে তৈরি করা হয় ৩ লাখ ৩৪ হাজার ৪০০ টাকার একটি পে-অর্ডার এবং ৬ হাজার টাকা জমা দিয়ে তৈরি করা হয় ৬ লাখ টাকার একটি পে-অর্ডার। এভাবে অন্য আটটি পে-অর্ডারেও জালিয়াতি করে বানানো পে-অর্ডার খাদ্য বিভাগে জমা দেয় এলাহী এগ্রো।
মামলায় আরও বলা হয়, ভুয়া এসব পে-অর্ডারের মধ্যে ছয়টি করা হয়েছে অগ্রণী ব্যাংক সোনারগাঁও শাখা নারায়ণগঞ্জ থেকে, চারটি করা হয়েছে অগ্রণী ব্যাংক পয়সারহাট শাখা এবং একটি করা হয়েছে অগ্রণী ব্যাংক বাটাজোড় শাখা থেকে।