3:12 pm , March 11, 2023
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বোন ও পরিবার নিয়ে বিরুপ মন্তব্য করায় বরিশালের মুলাদীতে বান্ধবীর গায়ে হলুদ থেকে ফেরার পথে আলী হোসেন মীরকে (২০) কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার মুল পরিকল্পনাকারীকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার র্যাব-৩ ও র্যাব-৮ এর একটি যৌথ দল তাকে গ্রেপ্তার করে। শনিবার বিকেলে এ তথ্য জানিয়েছেন র্যাব-৮ এর সিপিএসসির কমান্ডার মেজর মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম। গ্রেপ্তার শাওন শরীফ (২০) মুলাদী উপজেলার চরপদ্ম গ্রামের দেলোয়ার হোসেন শরীফের ছেলে। একই গ্রামের বাসিন্দা কলেজ ছাত্র ইউসুফ আলী ওরফে আলী হোসেন মীরকে গত ১৫ ফেব্রুয়ারী গভীর রাতে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় ১৬ ফেব্রুয়ারী মুলাদী থানায় ওই ছাত্রের বাবা বাবুল মীর বাদী হয়ে শাওনসহ দুইজন নামধারী ও অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জনকে আসামী করে হত্যা মামলা করেন।
মুলাদী থানার ওসি তুষার কান্তি মন্ডল বলেন, এরআগে ৭ মার্চ শাকিল হোসেন (১৭ বছর ১০ মাস) নামে একজনকে আটক করা হয়। তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি অনুযায়ী র্যাব মূলহোতা শাওনকে গ্রেপ্তার করেছে। ওসি বলেন, শাওনের বোন ও পরিবার নিয়ে বিরুপ মন্তব্য করায় আলী হোসেনকে হত্যা করা হয়েছে। হত্যায় ৮ জন জড়িত ছিলো।
শাকিল চরপদ্ম গ্রামের শাহজাহান হাওলাদারের ছেলে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আওলাদ বলেন, শাকিল বরিশাল জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. মাহফুজ আলমের কাছে ৮ মার্চ জবানবন্দি দিয়েছে। জবানবন্দিতে শাকিল হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।
তার জবানবন্দির বরাতে এসআই আওলাদ বলেন, র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার শাওনের বড় বোন মুন্সিগঞ্জে ও ছোট বোন ধনিয়া এলাকায় থাকেন। ছোট বোন মডেলিংয়ে জড়িত। তাদের বাবা পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে ৬ বছর বিছানায় পড়ে ছিলো।
তাদের নিয়ে বিরুপ মন্তব্য করেন হত্যার শিকার আলী হোসেন। এ মন্তব্য কৌশলে মোবাইল ফোনে রেকর্ড করে শাওনের বন্ধু ইমন। পরে সেই রেকর্ড শাওনকে পাঠিয়ে দেয়।
ঢাকার ক্যাপিটাল কলেজে একাদশ শ্রেণির ছাত্র শাওন বখাটে প্রকৃতির। নিজ গ্রাম মুলাদীর চরপদ্মসহ, ঢাকা ও মুন্সিগঞ্জে মারামারি এবং সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত। বাবা ও দুই বোনকে নিয়ে বিরুপ মন্তব্য করায় আলী হোসেনকে হত্যার পরিকল্পনা করে।
অর্থনৈতিক দৈন্যতার কারণে এসএসসি পাস করে ঢাকায় দৈনিক মজুরী ভিত্তিক বিভিন্ন কাজে থাকা আলী হোসেন বাড়ীতে গেলে তাকে হত্যার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে।
এসআই বলেন, ১৫ মার্চ বান্ধবীর গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে একা বাড়ী ফেরার পথে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করে ফেলে রেখে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে গোসাইর হাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে শরীয়তপুর হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এসআই আওলাদ আরো বলেন, শাওনসহ অন্যান্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান করা হচ্ছে। এর মধ্যে র্যাব শাওনকে গ্রেপ্তার করে তাদের কাছে হস্তান্তর করেছে।
র্যাব-৮ এর সিপিএসসির কমান্ডার মেজর মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ঘটনার পর থেকে তাদের দল বিষয়টির ছায়াতদন্ত করে। আধুনিক তথ্য ও প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে আসামীর অবস্থান সনাক্ত করে র্যাব-৩ এর সিপিএসসি’র সাথে যৌথ অভিযান পরিচালনা করে শুক্রবার রাত পৌনে আটটার দিকে নয়া পল্টন চৌরাস্তা মোড়ের জাফরানি বিরিয়ানি হাউজের সামনে থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।