3:49 pm , March 6, 2023

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগে যথা সময়ে ডাক্তারদের উপস্থিতিতে আবারও ভাটা পড়েছে। গত বছর হাসপাতালে দুদকের অভিযানের পর পাল্টে গিয়েছিলো উপস্থিতির পুরনো চিত্র। কিন্তু কর্তৃপক্ষের কঠোর নজরদারী না থাকায় আবারও অফিস শুরুর প্রথম ঘণ্টা কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকছেন ডাক্তাররা। দেরীতে এসে চলে যাচ্ছেন আগেভাগেই। গত সপ্তাহে টানা ৩দিন নজরদারী করে যথা সময়ে কর্মস্থলে অনুপস্থিত ৯ জন ডাক্তারকে শনাক্ত করেছেন হাসপাতালের পরিচালক। এ ঘটনায় তাদের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে কর্তৃপক্ষ। শের-ই বাংলা মেডিকেলের বহির্বিভাগের মেডিসিন, সার্জারি, অর্থোপেডিক্স, গাইনী, মানসিক, ইউরোলজি, ভাস্কুলার সার্জারি, হৃদরোগ, গ্যাস্ট্রোলজি, চর্ম ও যৌন, চক্ষু, দন্ত, নাক-কান-গলা এবং শিশু বিভাগে রোগী দেখেন ডাক্তাররা। সকাল ৯টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত রোগী দেখার কথা তাদের। কিন্তু সকাল ৯টায় অনেক ডাক্তারের দেখা মেলেনা বহির্বিভাগে। আবার দুপুর একটার আগেই সটকে পড়েন তারা। এটা নিয়মে পরিণত করেছেন এসব চিকিৎসকরা।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ পেয়ে গেলো বছরের ৬ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টায় হাসপাতাল এবং মেডিকেল কলেজে আকস্মিক অভিযান চালায় দুদক। ওই অভিযানে পরিচালক সহ সিনিয়র অনেক চিকিৎসককে নির্ধারিত সময়ে কর্মস্থলে অনুপস্থিত পায় দুদক। মেডিকেল কলেজেও অনেক সিনিয়র শিক্ষককে কর্মস্থলে অনুপস্থিত পায় তারা। এ নিয়ে দুদক কর্মকর্তাদের সাথে ডাক্তারদের বাদানুবাদের একটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছিলো। ওই ঘটনার পর বেশ কিছুদিন বহির্বিভাগে যথা সময়ে ডাক্তারদের উপস্থিতি সব মহলে প্রশংসা কুড়িয়েছে। এতে স্বস্তি ফেরে রোগীদের মাঝে। কিন্তু কিছুদিন না যেতেই আবারও ঢিলেঢালা ভাবে অফিস করছেন ডাক্তাররা। এতে দুর্ভোগে পড়েন রোগীরা। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি রাতে সিটি মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ’র বাসায় তার উপস্থিতিতে হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজের সিনিয়র চিকিৎসকদের এক মতবিনিময় সভায় বহির্বিভাগের ডাক্তারদের যথা সময়ে কর্মস্থলে না যাওয়া এবং দুপুর ১টা বাজতেই উধাও হয়ে যাওয়ার বিষয়টি আলোচিত হয়। পহেলা মার্চ সকাল ৯টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত বহির্বিভাগ ঘুরে ৯ জন ডাক্তারকে কর্মস্থলে অনুপস্থিত পান পরিচালক। এরা হলেন : মেডিসিন বিভাগের ডা. মানবেন্দ্র দাস, মো. রমজান আলী তিলোত্তোমা জুয়েনা, এম. মাইনুল ইসলাম, নাক-কান-গলা বিভাগের পলাশ সিনহা, অর্থোপেডিক্স‘র তামীম, সার্জারি বিভাগের আবদুর রাজ্জাক, চর্ম ও যৌন বিভাগের মানসী বৈদ্য এবং চক্ষু বিভাগের এম.আর খান সোহাগ। এ ঘটনায় ওইদিনই যথা সময়ে কর্মস্থলে অনুপস্থিত ডাক্তারদের কাছে ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠি দেন পরিচালক। বৃহস্পতিবার এই চিঠি হাতে পান তার। এর আগে বুধবার (পহেলা মার্চ) বিলম্বে কর্মস্থলে আসা ডাক্তাররা পরিচালকের সঙ্গে দেখা করে নানা অযুহাত দাঁড় করান। গত বৃহস্পতি এবং গত শনিবার সকাল ৯টায় বহির্বিভাগে ফের নজরদারী করেন পরিচালক। এই দুই দিনও কয়েকজন ডাক্তারকে কর্মস্থলে অনুপস্থিত পান তিনি। এ বিষয়ে হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচএম সাইফুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, কর্মস্থলে অনুপস্থিত পাওয়া ৯ জন ডাক্তারকে শোকজ করা হয়েছে। ব্যাখ্যা সন্তোষজনক না হলে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।