3:43 pm , February 19, 2023
দীর্ঘদিন খাল খনন না করা এবং নগরবাসীর অসচেতনতার কারণেই ময়লা আবর্জনায় ভরাট হচ্ছে সবগুলো খাল
১১ টি ফগার মেশিন ও ৩০টি হ্যান্ডস্প্রে মেশিন দিয়ে মশা নিধন অসম্ভব হয়ে পড়েছে
আরিফ আহমেদ, বিশেষ প্রতিবেদক ॥ প্রতিদিনই সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্ন বিভাগের ৭০ জন কর্মী নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডের অলিতে-গলিতে ফগার ও হ্যান্ডস্প্রে দিয়ে মশা তাড়ানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু তাদের এই চেষ্টা ব্যাহত হচ্ছে নগরীর সাতটি খালের জোয়ার ভাটা বন্ধ হবার কারণে। বেশিরভাগ খাল বাসাবাড়ির ময়লা আবর্জনার স্তুপ জমে মৃতপ্রায় ডোবা নালায় পরিণত হয়েছে। আর এই ডোবা নালাতে রীতিমতো বাড়ছে মশার উৎপাদন। সরেজমিনে রোববার নগরীর ১৩ নং ওয়ার্ড আমতলা মোড়ের খান সড়ক ও সিকদার পাড়ার পিছনের খাল পাড়ের বাসিন্দা গুঞ্জন বেগম নিজের ঘর ও সংলগ্ন খালের অবস্থা দেখালেন। তারপর বললেন, আমি নিজ হাতে এই ছোট্ট ড্রেন পরিষ্কার রাখতে পারলেও ঐ খালের ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করাতো সম্ভব না। এ সময় আরো কয়েকজন বাসিন্দা এগিয়ে এসে অভিযোগ জানালেন, পাকা সড়ক ও সড়কের আশেপাশে সিটি করপোরেশনের কর্মীরা মশার ঔষধ ছিটিয়ে যায়। আমাদের ছোট গলিতে আসতে চায় না। আর এই ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করতে বললে বলে সিটি করপোরেশনে লিখিত অভিযোগ দিতে। এ বিষয়ে ১৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মেহেদী পারভেজ আবীর বলেন, প্রতিদিনই সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্ন বিভাগের কর্মীরা আসে। এলাকায় নিয়মিত পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা হয়। খালটি পরিষ্কার রাখতে হলে অন্য সব ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সিটি করপোরেশনের সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। মেয়রকে বিষয়টি জানিয়েছি।
শুধু আবীর নয়, নগরীর বর্ধিত এলাকাসহ প্রায় সব কাউন্সিলরের একই দাবী যে নগরবাসীর অসচেতনতার কারণেই ময়লা আবর্জনায় ভরাট হচ্ছে সবগুলো খাল। ফলে ১১ টি ফগার মেশিন ও ৩০টি হ্যান্ডস্প্রে মেশিন দিয়ে মশা নিধন অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
এদিকে গত ২৫ জানুয়ারী নগরীর নদী ও সাগরদী খালের সংযোগ মুখে এক্সেভেটর মেশিন চালিয়ে খাল খনন কাজের উদ্বোধন করেছেন বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ।
উদ্বোধনকালে মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ বলেছেন, বরিশাল আমাদের শহর, তাই এই শহরের নদী ও খাল রক্ষায় আমাদেরই এগিয়ে আসতে হবে। এই খালগুলো আমাদেরই পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। মানুষকে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বোঝানোর জন্য শ্রম দিতে আমার কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু কাজগুলোও সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে হবে। যাতে নগরবাসী সঠিকভাবে এর সুফল ভোগ করতে পারেন। সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন ওয়ার্ডের খালপাড়ের বাসিন্দারা জানালেন, একদিকে খাল খনন হচ্ছে না। অন্যদিকে যেভাবে পারছে বাসাবাড়ির ব্যবহৃত উচ্ছিষ্ট ব্যবহৃত পলিথিন, ময়লা-আবর্জনা খালে ফেলে দিচ্ছে। এতে একদিকে খাল ভরাট হচ্ছে। অন্যদিকে খালের নোংরা পানিতে মশার বংশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। একজন সু-নাগরিক হিসেবে সিটি কর্পোরেশনকে সহায়তা করা এবং আমাদের আশে পাশের পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখাও আমাদের নৈতিক কর্তব্য বলে মনে করেন সাগরদী খাল পাড়ের একজন বয়জ্যেষ্ঠ।