3:54 pm , February 17, 2023

জুম্মাবার
বিশেষ প্রতিবেদক ॥ অপরের হক বা অধিকার যে নষ্ট করে সে নিশ্চিত জাহান্নামী। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের স্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে উল্লেখ করে বিএম স্কুল সংলগ্ন হাজী আহছান উদ্দিন জামে মসজিদের ঈমাম পবিত্র কোরআন থেকে তিনটি আয়াত তুলে ধরেন। যার অর্থ হচ্ছে -তোমরা নিজেদের মধ্যে একে অন্যের অর্থ-সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না এবং মানুষের ধন-সম্পদের কিয়দংশ জেনে-শুনে অন্যায়ভাবে গ্রাস করার উদ্দেশ্যে তা বিচারকের কাছে পেশ করো না। (সূরা আল-বাকারা, আয়াত-১৮৮)। নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের নির্দেশ দিচ্ছেন, তোমরা আমানতকে তার মালিকের কাছে প্রত্যার্পণ করো বা ফেরত দাও। (সূরা আন-নিসা, আয়াত-৫৮) প্রকৃত ইমানদার হওয়ার আলামত হল আমানত রক্ষা করা। এ সম্বন্ধে আল্লাহ তায়ালা বলেন, তারাই প্রকৃত মুমিন যারা আমানত ও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে। (সূরা আল-মুমিনুন, আয়াত-৮)
শুক্রবার জুম্মার বয়ানের মূল বিষয় ছিলো বিশ্বজুড়ে বিপর্যস্ত মুসলমানদের ঈমান বৃদ্ধির জন্য করণীয়। আলোচনার শেষে ঈমাম হাদিসের আলোকে বলেন, মৃত্যুর পর প্রতিটি মানুষের জন্য দুটো ঠিকানা বরাদ্দ রয়েছে। বিশেষ করে মুসলমানদের জন্য। কেননা পৃথিবীতে একমাত্র মুসলমান জাতিই আখেরাতে বিশ্বাস রাখে। যে আখেরাতে বিশ্বাস রাখে না সে কাফের ও মুশরিকরা। তাই মুসলমানদের জন্য আখেরাতে দুটি ঠিকানা একটি জান্নাত ও অপরটি জাহান্নাম। দুটো জায়গায়ই সিট বরাদ্দ রাখা আছে। আপনার আমার আমল বা কর্মের উপর নির্ভর করবে কোন ঠিকানা চূড়ান্ত হবে।
ঈমাম এসময় বিশ্ব পরিস্থিতি তুলে ধরে বলেন, কাফের, মুশরিকদের ষড়যন্ত্রের শিকার সারা বিশ্বের মুসলিম রাষ্ট্র। ওরা ধনসম্পদ বা সীমানা কেড়ে নিতে এসব অরাজকতা সৃষ্টি করেনি। ওরা মুসলমানদের ঈমান নষ্ট করতে গভীর ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে। পরিস্থিতি এখন এমন হয়েছে যে মুসলিম রাষ্ট্রে থেকেও ঈমানের হেফাজত অত্যন্ত কঠিন হয়ে গেছে। এমন অবস্থা হবে তা নবী করিম সাঃ আগেই জানতেন, তাই তিনি এই দিন সম্পর্কে সতর্ক করে গেছেন। নবী করিম সাঃ বলেছেন – যদি তুমি (আখেরী জামানার) সেই ফিতনার (দাঙ্গা হাঙ্গামার) যুগে কোন খলিফা (ইসলামপন্থী শাসক) না পাও, তবে সেখান থেকে পালাইয়া যাইবে । যতক্ষণ না তোমার মৃত্যু হইবে ততক্ষণ জঙ্গলে গিয়া ফল-মূল খাইয়া জীবন ধারণ করিবে। হোজায়ফা (রাঃ) বলেন, তারপর আমি জিজ্ঞাসা করিলাম,হে আল্লাহর রাসুল ! তারপর কি হইবে ? তিনি বলিলেন, সেই সময় যদি কেউ তার ঘোড়ার বাচ্চা প্রসব করাইতে চায়, তবে সেই ব্যক্তি ততটুকু সময়ও পাইবে না বরং তাহার পূর্বেই কিয়ামত সংঘটিত হইবে (আবু দাউদ শরীফ : ৪২০১)।
আরেক হাদিসে আবূ ষা’লাবাহ খুশানী কর্তৃক বর্ণিতঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “তোমাদের পরবর্তীতে আছে ধৈর্যের যুগ। সে (যুগে) ধৈর্যশীল হবে মুষ্টিতে অঙ্গার ধারণকারীর মতো। সে যুগের আমলকারীর হবে পঞ্চাশ জন পুরুষের সমান সওয়াব।” জিজ্ঞাসা করা হল, ‘হে আল্লাহর রসূল! পঞ্চাশ জন পুরুষ আমাদের মধ্য হতে, নাকি তাদের মধ্য হতে?’ তিনি বললেন, “না, বরং তোমাদের মধ্য হতে!” অন্য বর্ণনায় আছে, “তোমাদের পঞ্চাশজন শহীদের সমান সওয়াব!” (আবূ দাঊদ ৪৩৪৩, তিরমিযী ৩০৫৮)।