দক্ষিণাঞ্চলে ডায়রিয়া নিয়ন্ত্রনে আসছে না দক্ষিণাঞ্চলে ডায়রিয়া নিয়ন্ত্রনে আসছে না - ajkerparibartan.com
দক্ষিণাঞ্চলে ডায়রিয়া নিয়ন্ত্রনে আসছে না

3:33 pm , February 3, 2023

বিশেষ প্রতিবেদক ॥ পুরো দক্ষিণাঞ্চল ইতোমধ্যে একটি ডায়রিয়া প্রবন এলাকায় পরিনত হয়ে আছে। জানুয়ারী মাসে দক্ষিণাঞ্চলের ৪২ উপজেলায় ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে আরো প্রায় সাড়ে ৪ হাজার নারী-পুরুষ ও শিশু সরকারী হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর বাইরে চিকিৎসকের ব্যক্তিগত চেম্বার সহ বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসা গ্রহণকারীর সংখ্যা আরো কয়েকগুন। গত বছর এ অঞ্চলের সরকারী হাসপাতাল গুলোতে প্রায় ৭০ হাজার আক্রান্ত নারী-পুরুষ ও শিশু চিকিৎসা গ্রহণ করলেও এর বাইরে আরো লক্ষাধিক ডায়রিয়া রোগী বিভিন্ন চিকিৎসক সহ বেসরকারী হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানা গেছে। একইভাবে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্তদের ভীড়ে এখনো সরকারী-বেসরকারী হাসপাতালগুলোর শিশু বিভাগ পরিপূর্ণ। প্রতিদিনই ৫০ থেকে ১শ রোগী সরকারী হসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে গত ৭ নভেম্বর থেকে ২ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলের জেলা ও উপজেলা হাসপাতালগুলোতে প্রায় ৪ হাজার রোগী ভর্তি হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের। অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তির সংখ্যা আরো প্রায় সাড়ে ৩ হাজার।
অপরদিকে বিদায়ী বছরের শেষভাগে দক্ষিণাঞ্চল থেকে করোনা মহামারী অনেকটা দূরে সরে থাকলেও এখনো ৮২ ভাগের বেশী মানুষকে কোভিড-১৯ প্রতিষেধকের প্রথম ডোজের আওতায় আনা সম্ভব হয়নি। আর দ্বিতীয় ডোজের ভ্যাকসিন গ্রহণকারীর সংখ্যা ৭০ শতাংশের কাছাকাছি। বুষ্টার ডোজ গ্রহণ করেছেন ৩৪ ভাগেরও কম। মাস দেড়েক আগে করোনা প্রতিষেধকের ৪র্থ ডোজ শুরু হলেও বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলার ৪২ উপজলায় মাত্র ৫৮ হাজার মানুষ এ টিকা গ্রহণ করেছেন।
মূলত করোনার প্রকোপ হ্রাসের সাথে উদাসীনতা এবং জনসচেতনতা ও প্রচারণার অভাবেই দক্ষিণাঞ্চলে ভ্যাকসিন প্রয়োগের গতি ঝিমিয়ে আছে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বশীল অনেক কর্মকর্তা। তবে স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে যতটা সম্ভব সব কিছু করা হচ্ছে বলে দাবী বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের।
এদিকে গত বছরজুড়ে দক্ষিণাঞ্চলে ডায়রিয়ার চোখ রাঙ্গানি অব্যাহত থাকার পরে এখনো পরিস্থিতির আশানুরুপ পরির্বতন হয়নি। তবে গত বছরের মার্চ  থেকে শুরু হয়ে চলতি বছরের প্রথম একমাসে দক্ষিণাঞ্চলে ডায়রিয়ায় মৃত্যুর খবর না থাকলেও তা নিয়ন্ত্রনে আসছে না। গত ৭ নভেম্বর থেকে ২ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলা ও ৪২ উপজেলার হাসপাতালগুলোতে ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে ১৩ হাজারেরও বেশী রোগী চিকিৎসার  জন্য এসেছে বলে জানা গেছে। এমনকি নতুন বছরের প্রথম মাস পেরিয়ে ফেব্রুয়ারীর ৩ দিনেও রোগীর কোন কমতি নেই বলে বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে। অপরদিকে এ অঞ্চলে মার্চ থেকে ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধির প্রবনতা লক্ষ্য করা গেছে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে।
এদিকে দক্ষিণাঞ্চলে ডেঙ্গুর প্রকোপ গত মাসে যথেষ্ট নিয়ন্ত্রনে এসেছে। পূর্ববর্তী মাসে প্রতিদিন গড়ে যেখানে শতাধিক ডেঙ্গু রোগী সরকারী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে সেখানে বিগত ডিসেম্বরের ৩১ দিনে রোগী ভর্তির সংখ্যা ছিলো ২২৭। জানুয়ারীতে তা ৫৪ জনে হ্রাস পেয়েছে। তবে ইতোমধ্যে দক্ষিণাঞ্চলে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ১২ জনের মৃত্যুর কথা জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এখন দৈনিক হাসপাতালে আগত রোগীর সংখ্যা ৫Ñ১০ জনের মধ্যে বলে জানা গেছে। যার বেশীরভাগই বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
এদিকে প্রায় ১ কোটি জনসংখ্যার দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত  ৮১ লাখ ২৬ হাজার ৬০৪ জন  করোনা ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহণ করলেও দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণকারীর সংখ্যা ৭০ লাখ ২৮ হাজারের কিছু বেশী। আর বুষ্টার ডোজ গ্রহণকারীর সংখ্যা মাত্র ৩৩ লাখ ৭৪ হাজার ১১৮ জন। তবে সবচেয়ে করুন অবস্থা ৪র্থ ডোজ গ্রহণের ক্ষেত্রে। যে সংখ্যাটা এখনো ৬০ হাজারেও পৌঁছতে পারেনি। ৩ জানুয়ারী পর্যন্ত মাত্র ৫৬ হাজার ৭৩ জন ৪র্থ ডোজ গ্রহণ করেছেন।
পাশাপাশি ঠিক কত মানুষ এখনো করোনা ভ্যাকসিনের আওতার বাইরে তা বলতে না পারলেও স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বশীল সূত্রের মতে দক্ষিণাঞ্চলের ১ কোটি জনসংখ্যার প্রায় ২০ ভাগ মানুষ এখনো করোনা ভ্যাকসিন গ্রহণ করেননি।
এদিকে এবার কয়েক দফার শৈত্য প্রবাহের ফলে সমগ্র দক্ষিণাঞ্চল জুড়েই নিউমোনিয়া সহ ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব যথেষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। প্রতিদিন গড়ে ৭০ থেকে ১শ রোগী সরকারী হাসপাতালে আসছে। গত মাসেই ভোলায় দুই নিউমোনিয়া রোগীর মৃত্যু হয়েছে। গতমাসে দক্ষিনাঞ্চলের হাসপাতালগুলোতে শ^াসতন্ত্রের সংক্রমন সহ ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে ৪ হাজার রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। এরমধ্যে নিউমোনিয়া রোগীর সংখ্যাই ৩ হাজারের ওপরে বলে জানা গেছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT