3:48 pm , January 31, 2023
আগৈলঝাড়া প্রতিবেদক ॥ আগৈলঝাড়ায় অব্যাহত শৈত্য প্রবাহ ও ঘন কুয়াশার কারনে হলুদ বর্ণ হয়ে ঝড়ে পড়ছে পান। এ কারনে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে পানচাষীরা। আগৈলঝাড়ার উৎপাদিত পান বিদেশের বিভিন্ন দেশে রপ্তানী হচ্ছে। উপজেলা কৃষি অফিস ও পান চাষীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে মোট ২৯০ হেক্টর জমিতে পান চাষের সাথে ৩ হাজার ৫৫০ জন পান চাষি রয়েছে। এ পেশার সাথে জড়িত রয়েছেন কয়েক হাজার পরিবার। এ সকল পরিবারের একমাত্র উপার্জন ছিল পান বরজ। অল্পদিনে পান বাজারজাত করা যায় বলে অনেকেই পান চাষে আগ্রহী হয়ে ফসলী জমিতে মাটি ভরাট করে পান বরজ করেছিলেন। বেশী পানি না হওয়ায় কৃষি জমির অপেক্ষাকৃত উচু জমিতে পান চাষ করার উপযুক্ত স্থান হিসেবে বেছে নিয়েছে চাষীরা। এই গ্রামে পান চাষের সাথে জড়িত রয়েছে রতন দাস, মন্নান খলিফা, পরিমল দাস, শৈলেন দাস, দেলোয়ার পাইক, সঞ্জয় দাস, ভবতোষ দাস, পরিতোষ দাস ও বড়মগরা গ্রামের ঝন্টু বাড়ৈসহ প্রমুখ। এই এলাকার বড় পানচাষী ফুল্লশ্রী গ্রামের খোকন দে জানান, আমার ৭০ শতাংশ উচু জমিতে ৩৭৫ খানা পান বরজ রয়েছে। শীতের পূর্বমুহুর্তে কার্ত্তিক মাস থেকে চার মাস পান বরজের লতায় পান রাহি করা হয়। শীতে সময় বেশী মূল্যে বিক্রির আশায়। কিন্তু প্রচন্ড কুয়াশা ও শীতের কারনে বরজের পান হলুদ বর্ণ হয়ে ঝড়ে পড়ছে। কুয়াশা ও শীতের কারনে পান ঝড়ে পড়ায় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি আমরা। একাধিবার শৈত্য প্রবাহের কারনে পান বরজের চারিদিকে পলিথিন ও নেট দিয়ে চাষীরা পান রক্ষার চেষ্টা করে আসছে। পানের রোগ প্রতিরোধ, পোকা মাকড় ও ফলন বৃদ্ধির জন্য পানচাষীরা পান বরজে টিএসপি, খৈর, দস্তা,সালফারসহ বিভিন্ন সার ও কীটনাশক ব্যবহার করছে। ঢাকা শ্যামবাজার পানের পাইকারী ও বিদেশে রপ্তানী কারক প্রতিষ্ঠান ভাইভাই পানের আড়ৎ এর মালিক মজিবর ফকির বলেন, এ আঞ্চলের উৎপাদিত পান ঢাকা, লাকসাম, ফেনীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় রপ্তানী হচ্ছে। এদের মাধ্যমে আগৈলঝাড়ার পান কুয়েত, সৌদিআরব, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ব্রুনাই, বাহরাইন, কাতার, স্পেন, ইতালী, লন্ডনসহ বিভিন্ন দেশে যাচ্ছে। একারনে আগৈলঝাড়ার বিভিন্ন স্থানে একাধিক পাইকারী পানের আড়ৎ গড়ে উঠেছে। এই এলাকায় ফলানো পান বর্তমানে ১শ টাকা থেকে তিনশ টাকা পর্যন্ত প্রতিবিড়া (৭২টি) পান বিক্রি হচ্ছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা চন্দ্র শেখর বসু বলেন, ক্ষতিগ্রস্থ পান বরজ পরিদর্শন করে তাদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্থ পান চাষিদের তালিকা প্রনয়নের কাজ চলছে। তালিকা উর্দ্ধতন কতৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে। সরকার ক্ষতিগ্রস্থ পান চাষিরে বিষয়ে চিন্তা করে কোন সাহায্য সহযোগীতা প্রদান করলে তা পান চাষীদের মাঝে বিতরণ করা হবে।