3:43 pm , January 28, 2023

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ নগরীর কাউনিয়ার বাসিন্দা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অব. শিক্ষক হেমায়েত মাষ্টার চিকিৎসার নামে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছে নারী। শনিবার দুপুরে বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ জননী সাহান আরা বেগম স্মৃতি মিলনায়তনে ওই সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সংবাদ সম্মেলন করেন নগরীর কাশিপুর ইছাকাঠি এলাকার বাসিন্দা মমতাজ বেগম।
অভিযুক্ত ওঝা হেমায়েত উদ্দিন মাষ্টার সদর উপজেলার শায়েস্তাবাদ ইউনিয়নের দক্ষিন চর আইচা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। শিক্ষকতার পেশায় থাকাকালীন সময় থেকে তিনি ঝাড়ফুকের মাধ্যমে চিকিৎসা দিতেন। এ পেশা থেকে অবসর নিয়েছেন।
লিখিত বক্তব্যের মাধ্যমে মমতাজ বেগম জানান, তিনি ডায়াবেটিকস, পলিপাস ও পাইলস রোগে আক্রান্ত। দুই বছর পূর্বে লোকের মাধ্যমে জানতে পেরে চিকিৎসার জন্য হেমায়েত মাষ্টারের শরনান্ন হন তিনি। তখন তাকে কোন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে গিয়ে চিকিৎসা করাতে নিষেধ করেন হেমায়েত মাষ্টার। তিনি চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করার আশ্বাস দেন।
মমতাজ বেগম জানান, গত দুই বছর ধরে ওঝা হেমায়েত তার নিজের বাসায় নিয়ে এক এক সময় চা, শরবত ও ডাবের পানি পান করিয়ে চিকিৎসা দিয়েছে। এছাড়াও ওঝা হেমায়েত মাষ্টার মন্ত্র পড়ে দেয়া ওই তরল পানীয়সহ নানা ফল ঔষধ হিসেবে দিয়েছে।
মমতাজ বেগম অভিযোগ করেন, ওঝা হেমায়েত মাষ্টারের চিকিৎসায় তিনি সুস্থ হননি। কিন্তু গত দুই বছরে দফায় দফায় তাকে নগদ দুই লাখ টাকাসহ আরো অন্তত ৬ লাখ টাকা ব্যয়ে বিভিন্ন সময় মাছ-মাংস ও ফল কিনে দিয়েছেন।
চিকিৎসার নামে ঝাড়-ফুক দেয়ায় শরীরের মধ্যে আরো বেশি জ্বালা-পোড়া যন্ত্রণা অনুভব করেন তিনি। সম্প্রতি ওঝা হেমায়েতকে এ কথা জানানোর পর এ সমস্যা থেকে চিরতরে মুক্তির জন্য ১৫ লাখ টাকা দাবী করে হেমায়েত মাষ্টার। আর এ নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করলে আমিসহ আমার পরিবারের লোকজনের সমস্যা হবে বলে ওঝা হেমায়েত হুমকি দেয়। এ সকল প্রস্তাবে আমি রাজি না হওয়ায়, ওঝা হেমায়েত আমাকে কুফরী করে মানসিক রোগী বানানোর পর মেরে ফেলার চেষ্টা করছে বলে দাবি করেন মমতাজ বেগম।
তিনি বলেন, ৬ মাস বা ১ বছর পূর্বে আমি এমন ছিলাম না। দিনে দিনে আমি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলছি। চিকিৎসার নামে আমাকে সামনে বসিয়ে পুতুল পোড়ানোর পর থেকেই আমার জীবনে এলোমেলো হয়ে গেছে।
মমতাজ বেগম বলেন, হেমায়েতের কুফরীতে তিনি শারিরীক ও মানসিকসহ অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বর্তমানে পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার আশংকা করছেন।
ওঝা হেমায়েতের যাদু টোনা থেকে মুক্ত হওয়ারসহ পরিবারের নিরাপত্তা এবং টাকা ফেরত পেতে প্রশাসনের সহায়তা চেয়েছেন মমতাজ বেগম। এ জন্য পুলিশের কাছে অভিযোগ দেয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এ বিষয়ে পুলিশ কমিশনার মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পেলে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ওঝা হেমায়েত টাকা নেয়ার কথা স্বীকার বলেন, মমতাজ বেগম তার দরবারে মানত বাবদ কিছু টাকা দিয়েছে। আর যে সব কথা বলে তা সঠিক নয়।