3:32 pm , January 18, 2023

বানারীপাড়া প্রতিবেদক ॥ বানারিপাড়ায় সাবেক স্বামীর বিরুদ্ধে বসতভিটা ও সম্পত্তি জবর দখলসহ নির্যাতন ও হয়রানির অভিযোগ করেছেন পারভীন আক্তার নামের এক স্কুল শিক্ষক। গতকাল বুধবার দুপুরে বানারীপাড়া প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি এ অভিযোগ করেন। সংবাদ সম্মেলনে উপজেলার আজালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক পারভীন আক্তার অভিযোগ করেন, বানারীপাড়ার শাওন ক্যাবল নেটওয়ার্কের সত্ত্বাধিকারী মোজাম্মেল হোসেনের সঙ্গে ২০১৫ সালে তার বিয়ে হয়। এর আগে তিনি এক মেয়ে নিয়ে স্বামী পরিত্যক্তা ছিলেন। বিয়ের পর থেকে উপজেলার সদর ইউনিয়নের রাজ্জাকপুুর গ্রামের পারভীন আক্তারের ক্রয়কৃত সম্পত্তিসহ বসতভিটা আত্মসাত করার উদ্দেশ্যে মোজাম্মেল হোসেন তাকে বিভিন্ন সময় শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করায় একপর্যায়ে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত শালিস বৈঠকে ২০১৮ সালে তাদের বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে। পরে আবার সমঝোতা হলে তাদের পুনরায় বিয়ে হয়। কিছুদিন না যেতেই মোজ্জামেল পূর্বের মত স্ত্রী পারভীন আক্তার ও তার শিশু মেয়ের ওপর শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন শুরু করে। এ নিয়ে সৃষ্ট দাম্পত্য কলহের কারণে ২০২২ সালে বানারীপাড়া থানার তৎকালীন ওসি হেলাল উদ্দিনের উপস্থিতিতে শালিস বৈঠকের মাধ্যমে আবার তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। কিন্তু মোজ্জাম্মেল হোসেনের হাত থেকে পারভীন আক্তারের নিস্তার মেলেনি। তার নামে নানা কুৎসা রটিয়ে লিফলেট বিতরণ করে সাবেক স্বামী মোজাম্মেল। এ ঘটনায় তিনি মোজাম্মেল হোসেনের বিরুদ্ধে আদালতে মানহানি মামলা দায়ের করেন। শ্লীলতাহানী ও চুরির অপর একটি মামলায় গ্রেফতার হয়ে কিছুদিন হাজতবাস করার পর বের হয়ে মোজাম্মেল হোসেন পুনরায় তার বসতভিটাসহ সম্পত্তি জবর দখলের পায়তারা চালাতে থাকে। সর্বশেষ গত সোমবার (১৬ জানুয়ারি) পারভীন আক্তার তার কর্মস্থলে থাকার সময় জানতে পারেন, মোজাম্মেল লোকজন নিয়ে তার বসতবাড়িতে গিয়ে ভবনের দেওয়াল ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে। এসময় তার বাসায় থাকা ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা লুট করা হয়। এ সংবাদে শিক্ষক পারভীন আক্তার তাৎক্ষণিক তার বাড়িতে চলে আসলে মোজাম্মেল হোসেন তাকে ধাক্কা দিয়ে রাস্তায় ফেলে দিয়ে চুলের মুঠি ধরে বেধরক মারধর করেন বলে অভিযোগে জানানো হয়। এসময় মোজাম্মেল তার বোন টুলুর ঘরের দিকে তাকে (শিক্ষককে) চুলের মুঠি ধরে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যাওয়ারও চেষ্টা করেন। তার ডাক-চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে খুন জখমের হুমকি দিয়ে মোজাম্মেল সহযোগীদের নিয়ে চলে যায়। পরে পারভীন আক্তারকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। ঘটনার দিন রাতে পারভীন আক্তার বাদী হয়ে ক্যাবল ব্যবসায়ী মোজাম্মেল হোসেন (৪৮), তার সহযোগী মো. শাহিন, (২৬), আলাউদ্দিন (৫৭) ও মোজাম্মেলের বোন টুলুকে (৩৩) আসামী করে বানারীপাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এদিকে বানারীপাড়া শাাওন ক্যাবল নেটওয়ার্কের সত্ত্বাধিকারী মোজাম্মেল হোসেন এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
পারভীন আক্তার শিশু কন্যাসহ চরম আতঙ্ক ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে পারভীন আক্তারের মেয়ে ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী মালিহা মোমতাজ ও বোনের ছেলে মাহবুব উপস্থিত ছিলেন।’