3:51 pm , December 30, 2022
বিশেষ প্রতিবেদক ॥ মাঝারী থেকে ঘন কুয়াশার সাথে মৌসুমের সর্বনি¤œ তাপমাত্রায় কাঁপছে সমগ্র দক্ষিণাঞ্চল। গত তিন দিন ধরেই শেষরাত থেকে মেঘনা অববাহিকার সব নদ-নদী থেকে দিগন্ত বিস্তৃত দক্ষিণাঞ্চল মাঝারী থেকে ঘন কুয়াশায় ঢেকে যাচ্ছে। সূর্যের মুখ দেখতে অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে অনেক বেলা অবধি। শুক্রবারও সকাল ১০টার পরে বরিশালের আকাশে সূর্য উকি মারে। সাথে তাপ মাত্রার পারদ মৌসুমের সর্বনি¤œ পর্যায়ে নেমে যাওয়ায় জনজীবন প্রায় সম্পূর্ণই বিপর্যস্ত। মাঠে পাকা আমন আর বোরো বীজতলা ক্ষতির মুখে। শুক্রবার সকালে বরিশালে মৌসুমের সর্বনি¤œ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০.৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস। যা ছিলো স্বাভাবিকের ৩.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস নিচে। অথচ মাত্র ৪৮ ঘন্টা আগে বুধবার সকালে বরিশালে তাপমাত্রার পারদ স্বাভাবিকের প্রায় ৬ ডিগ্রী ওপরে ১৯ ডিগ্রী সেলসিয়াসে উঠে গিয়েছিলো। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিন বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করলেও তার বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কয়েকটি স্থানে মৃদু শৈত্য প্রবাহ শুরুর কথা জানিয়ে তা অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ। তবে শনিবার সকালের পরবর্তী ৪৮ ঘন্টায় আবহাওয়ার বর্তমান পরস্থিতির সামান্য পরিবর্তনের কথাও বলছে আবহাওয়া দপ্তর।
শুক্রবার সকালে দক্ষিণাঞ্চলের ১১ জেলার মধ্যে বরিশাল ও গোপালগঞ্জেই সর্বনি¤œ তপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১০.৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস। তাপমাত্রা মৌসুমের নি¤œ পর্যায়ে নেমে যাওয়ায় ঠান্ডাজনিত রোগ ব্যধিও বাড়ছে। ইতোমধ্যে এ অঞ্চলের শুধু সরকারী হাসপাতালগুলোতেই নিউমোনিয়াসহ ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার রোগী চিকিৎসা গ্রহন করেছেন। আক্রান্তদের মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধদের সংখ্যাই সর্বাধিক।
শুক্রবার দিনভরই সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের আকাশ জুড়ে হালকা থেকে মাঝারী মেঘের আনাগোনায় সূর্য আড়ালে থেকেছে। ফলে জনজীবনে সংকট আরো বাড়ছে। অনেকটাই হাড় কাঁপানো শীতে সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের জনজীবন এখন বিপর্যস্ত। জরুরী প্রয়োজন ছাড়া শুক্রবার অনেকেই ঘর থেকে বের হননি।
তবে কনকনে ঠান্ডায় দক্ষিণাঞ্চলের মাঠ জুড়ে পাকা আমন ধান কর্তণও মারাত্মক ব্যাহত হচ্ছে। অনেক এলাকায়ই কৃষি শ্রমিকরা মাঠে নামতে পারছেন না হীম শীতল ঠান্ডার সাথে উত্তরের বাতাসের কারণে। ফলে কৃষকের দুঃশ্চিন্তাও ক্রমশ বাড়ছে। গত বুধবার শেষ রাতে এক দফা বৃষ্টিপাতে দক্ষিনাঞ্চলের উঠতি পাকা ধান যথেষ্ট ক্ষতির কবলে পড়েছে।