3:15 pm , November 28, 2022

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ নগরীর একটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিশু শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে দাঁত ফেলে দিয়েছে শিক্ষিকা। এমনকি তাকে প্রাথমিক কোন চিকিৎসা না দিয়ে অপর দুই শিশু সহপাঠির সাথে রক্তাক্ত অবস্থায় বাসায় পাঠিয়ে দেয় বলে অভিযোগ করেছে তার বোন সোহানা ইসলাম। ঘটনাটি ঘটেছে রোববার বরিশাল নগরীর পুরান কয়লাঘাট এলাকার বাণী মন্দির সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। ঘটনার শিকার শিশু শিক্ষার্থী হলো : মো. মঈন উদ্দীন। সে ওই বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেনীর শিক্ষার্থী।
তার বোন সোহানা ইসলাম জানান, শ্রেণী কক্ষে দুষ্টুমি করছিলো ছোট ভাই মঈন উদ্দীন । এতে শিক্ষিক তুহিন কনা ক্ষুব্ধ হয়ে স্কেল দিয়ে পেটায়। এক পর্যায়ে মুখমন্ডলেও পেটায়। তখন ঠোঁট কেটে নতুন উঠা একটি দাঁত পড়ে যায়।
সোহানা অভিযোগ করেন, ঘটনার পর বিদ্যালয়ে কোন চিকিৎসা না দিয়ে অন্য দুই সহপাঠি শিশুর মাধ্যমে বাসায় পাঠিয়েছে। বর্তমানে চিকিৎসা দিয়ে ভাইকে সুস্থ করা হয়েছে। তবে পড়ে যাওয়া দাত আর নতুন করে উঠবে না বলে জানিয়েছে সে।
সোহানা আরো জানায়, সোমবার সকালে এলাকার কয়েকজন এসে তার বাবাকে অনুরোধ করেছে মাফ করে দেয়ার জন্য। তাই কোথাও এ বিষয়ে অভিযোগ দেননি। তিনি বলেন, ওই শিক্ষিকা রাগী। প্রতিদিন বিদ্যালয়ের শিশু শিক্ষার্থীদের পেটায়।
সোহানা বলেন, শিশুরা দুষ্টুমি করবে, এটাই স্বাভাবিক। এ জন্য হাতে ও পায়ে পেটালে তো কোন সমস্যা নেই। কিন্তু ওই শিক্ষিকা এলোপাথারীভাবে পেটায়। তাকে সংযত আচরণ করার দাবি করেছে সোহানাসহ অন্যান্য শিশুর অভিভাবকরা।
শিক্ষার্থী মঈন উদ্দীন জানায়, রোববার দুপুরে স্কুলে সহপাঠিদের সাথে দুষ্টুমি করছিলো সে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শিক্ষিকা তুহিন কনা স্কেল দিয়ে তার মুখ মন্ডলে আঘাত করে। এতে তার ঠোঁট ফেটে যায়। পড়ে যায় উপরের পাটির একটি নতুন গজানো দাঁত।
শিক্ষার্থীর বাবা আলা উদ্দিন বলেন, ওই শিক্ষককে শিক্ষার্থীরাসহ অভিভাবকরাও ভয় পান। এর আগেও শিক্ষার্থীদের এভাবে মারধরের অভিযোগ রয়েছে। তবে কেউ বিদ্যালয় থেকে বের করে দেয়ার ভয়ে এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কথা বলতে সাহস পায়না। সন্তানকে পেটানোর বিচার দাবী করেন তিনি।
প্রধান শিক্ষিক সুষুমা ঘোষ বলেন, শিশু শিক্ষার্থীদের পেটানো বন্ধে তাকে শোধরানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু তিনি পারেনি। রোববারের ঘটনাটি স্থানীয়ভাবে সমাধান করেছি। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও অবহিত করা হয়েছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহন লাল দাস বলেন, শিক্ষার্থী নির্যাতন দূরের কথা, তাদের ধমক দেয়ারও নিয়ম নেই। অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার হবে।