3:02 pm , November 28, 2022
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বন্ধুর হবু স্ত্রীকে গণ ধর্ষণ ও ভিডিও চিত্র ধারণের মামলায় মসজিদের ইমাম, মাদ্রাসার শিক্ষক ও কলেজ ছাত্রকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রোববার মামলা দায়েরের পর গভীর রাতে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে মহানগর পুলিশের এয়ারপোর্ট থানার ওসি মো. হেলাল উদ্দীন জানিয়েছেন। গ্রেফতারকৃতরা হলো : নগরীর রূপাতলী উকিল বাড়ি সড়কের জামিয়া কাসিমিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক আবিদ হাসান ওরফে রাজু, বাবুগঞ্জ উপজেলার গাঙ্গুলী বাড়ি মোড় এলাকার বাইতুল মামুর জামে মসজিদের ইমাম আবু সাইম হাওলাদার এবং বরিশাল সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের ছাত্র হৃদয় ফকির। পুলিশ জানিয়েছে, তিনজন বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা হলেও তারা আগে একই বাসায় ভাড়া থাকতেন। সেই সূত্রে পরিচয় এবং ঘটনার সময়ে তারা পরস্পরের সাথে যোগাযোগ করে একই বাসায় মিলিত হয়ে অপরাধ সংগঠিত করেছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানাগেছে।
ওসি হেলাল উদ্দীন জানান, রোববার রাতে ধর্ষণ, ধর্ষণে সহায়তা ও অশ্লীল ভিডিও চিত্র ধারণের অভিযোগে গণ ধর্ষণের শিকার মাদ্রাসা ছাত্রীর মা মামলা করেন। মামলা পর পরই বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে মামলার আসামী তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মামলার বরাতে ওসি জানান, বাবুগঞ্জের পাংশা এলাকার একটি মাদ্রাসা থেকে দাখিল পরীক্ষা দিয়েছে ওই ছাত্রী। তার সাথে একই এলাকার মাহফুজুর রহমান সায়মনের প্রেমের সর্ম্পক ও পারিবারিকভাবে বিয়ে ঠিক হয়েছে। বিষয়টি সায়মনের বন্ধু মাদ্রাসা শিক্ষক আবিদ, মসজিদের ইমাম সাইম এবং হৃদয় জানতো। গত ২০ আগস্ট রাতে হৃদয় ওই ছাত্রীর মোবাইলে ফোন দিয়ে জানায় সায়মনের অন্য নারীদের সাথে সম্পর্ক রয়েছে। প্রথমে বিশ্বাস না করলেও বিষয়টি মাদ্রাসা শিক্ষক ও ইমাম বন্ধু বলার পর বিশ্বাস করে ছাত্রী। তখন সায়মনের বন্ধুরা জানায়, গত ২৭ আগস্ট নগরীর ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের শের-ই-বাংলা সড়ক ডা. হামিদ লেনের হৃদয় ফকিরের ভাড়া বাসায় সায়মন অন্য মেয়ে নিয়ে যাবে। হাতে নাতে ধরার জন্য ওই বাসায় যেতে বলে। কথামত ওই ছাত্রী সকাল ১০টার দিকে গেলে, সেখানে আটকে তাকে তিনজনেই পালাক্রমে ধর্ষণ করে মোবাইলে ভিডিও করে রাখে।ধর্ষণের ঘটনার পর ওই ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে। তখন ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ
মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। এতে বাধ্য হয়ে কোথাও চিকিৎসা না নিয়ে বাড়ি ফিরে আসে। এরপর ধর্ষণের ভিডিওর কথা বলে ওই ছাত্রীকে ব্ল্যাকমেইল করে হবু স্বামীর বন্ধুরা। তারা ৫ বার সেই বাসায় নিয়ে দলবেঁধে ধর্ষণ করে। পরে ভিডিও ভাইরাল করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে টাকা দাবী করে। ছাত্রী টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে অভিযুক্তরা তাদের ধর্ষণের ভিডিও হবু বর সায়মনের পিতাকে দেখায়। এরপর হবু স্বামীর সহায়তায় রোববার ছাত্রীর মা থানায় অভিযোগ দেন।