গাবখান ব্রীজে অতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগ গাবখান ব্রীজে অতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগ - ajkerparibartan.com
গাবখান ব্রীজে অতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগ

3:15 pm , November 27, 2022

ঝালকাঠি প্রতিবেদক ॥ ঝালকাঠির ৫ম চীন মৈত্রি সেতু গাবখান ব্রীজে অতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। প্রতিটি ব্রীজে সরকারী নিয়মানুযায়ী টোল ফি নির্ধারণের চার্ট জনসম্মুখে দৃশ্যমান থাকার কথা থাকলেও কোথাও সেটি নেই। এ নিয়ে পরিবহন ও মালবাহী গাড়ি চালকদের সাথে বাগবিতন্ডা এবং নাজেহাল করার অভিযোগও রয়েছে টোল আদায়কারীদের বিরুদ্ধে। সরকারী নিয়ম-নীতি তোয়াক্কা না করেই এ টোল আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন  অমৃত, প্রাণ ও আরএফএল কোম্পানীর গাড়ি চালক এবং ট্রান্সপোর্ট ব্যবস্থাপকরা। তথ্যানুসন্ধানে জানাগেছে, ঝালকাঠি সড়ক ও জনপথ বিভাগ থেকে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স ইসলাম ব্রাদার্সকে ২০১৮সালের ১আগস্ট থেকে ২০২১সালের ৩০জুন পর্যন্ত ৭কোটি ২২লাখ ৯৫হাজার ৭২০টাকা ইজারা চুক্তিতে টোল আদায়ের কার্যাদেশ প্রদান করে। করোনাকালীন সময়ে গাড়ী চলাচল না থাকায় লোকসানের মুখে পড়ে ইজারাদার প্রতিষ্ঠান। ২০২১ সালের ৩০জুন কার্যাদেশের মেয়াদ শেষ হলে ইজারা চুক্তি অনুযায়ী মূল টাকাও উত্তোলন করতে পারেনি তারা। তাই ক্ষতিপূরণের দাবিতে উচ্চ আদালতে রীট পিটিশন দায়ের করে ইজারাদার প্রতিষ্ঠান। আদালতের নির্দেশক্রমে ২০২১ সালের ১জুলাই থেকে টোল আদায় বহাল রাখে মেসার্স ইসলাম ব্রাদার্স। মামলা জটিলতার কারণে আদালতের মাধ্যমে ৪টি পে অর্ডারে ১কোটি ২৪লাখ ৯০হাজার ৬৫৬টাকা কোষাগারে জমা হয়েছে।
সড়ক বিভাগ সূত্রে জানাগেছে, লাল স্লিপে ট্রেইলার ৩শ টাকা, হেভী ট্রাক (বোঝাই/খালি) ১৮০টাকা, মিডিয়াম ট্রাক (বোঝাই/খালি) ১৫০টাকা, সবুজ স্লিপে বড় বাস (বোঝাই/খালি) ৮৫টাকা, লাল স্লিপে মিনি ট্রাক (বোঝাই/খালি) ১১৫টাকা, কৃষি কাজে ব্যবহৃত যান (বোঝাই/খালি) ৯০টাকা,  সবুজ স্লিপে মিনি বাস/ কোস্টার (বোঝাই/খালি) ৬০টাকা, হলুদ স্লিপে মাইক্রোবাস (বোঝাই/খালি) ৬০টাকা, চার চাকা বিশিষ্ট যানবাহন (বোঝাই/খালি) ৬০টাকা, সিডান কার (বোঝাই/খালি) ৪০টাকা,  ৩/৪চাকার মোটরাইজড যান (বোঝাই/খালি) ১৫টাকা এবং সাদা স্লিপে মোটরসাইকেল ১০টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রাণ গ্রুপের ট্রান্সপোর্ট ব্যবস্থাপক মো. নুরে আলম জানান, আমাদের কোন ট্রেইলার যান নেই। হেভী ট্রাক, মিডিয়াম ট্রাক ও মিনি ট্রাক রয়েছে। আমাদের এ ৩ ধরণের গাড়ির যেটিই ব্রীজে পারাপারের জন্য যায় তখনই লাল স্লিপে ৩শ টাকা করে রাখা হয়। স্লিপে আমাদের গাড়ির নম্বরটিও উল্লেখ করা হয় না। জনস্মুখে কোথাও কোন চার্টও টানানো নেই। গাড়ি চালকরা এনিয়ে প্রতিবাদ করলে তাদের সাথে বাজে ব্যবহার করা হয়। নাজেহাল করে মারতেও উদ্যত হয় অনেক সময়। একই অভিযোগ আরএফএল ট্রান্সপোর্ট ব্যবস্থাপক মো. আলমগীর হোসেন ও অমৃত ফুড কোম্পানীর ট্রান্সপোর্ট ব্যবস্থাপক অনুপ মুখার্জীর। তারা জানান, সম্প্রতি চালুকৃত বেকুটিয়া ব্রীজের টোলঘরে কোন গাড়ির কি পরিমাণ বা কত টাকা সরকার নির্ধারিত টোল তা প্রকাশ্যে টানানো রয়েছে। কিন্তু গাবখান ব্রীজের টোল ঘরে যা ইচ্ছে তাই টোল রাখে। তারা এ বিষয়ে একটি সুষ্ঠু সমাধান দাবী করেন। মেসার্স ইসলাম এন্ড ব্রাদার্সের পক্ষে টোল আদায়কারী শাহ আলম খান ফারসু মুঠোফোনে জানান, টোল আদায়ের স্লিপে গাড়ি চালকরাই নম্বর লেখা পর্যন্ত অপেক্ষা করে না, টাকা দিয়েই স্লিপ নিয়ে চলে যান। সড়ক বিভাগ নির্ধারিত মূল্যই টোলে রাখা হয়।  প্রাণ গ্রুপের এক লোক এসে আমাদের কাছে ১৮০টাকা টোলের গাড়িতে ১৫০টাকা দেয়ার দাবী করলে আমরা তার দাবী মেনে সেভাবেই টাকা রাখছি। আগে চার্ট দৃশ্যমান ছিলো কিন্তু মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে সড়ক বিভাগ ও ইসলাম ব্রাদার্সের টোল আদায়ের পালা বদলের কারণে এখন চার্ট নেই।
ঝালকাঠি সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ নাবিল হোসেন জানান, প্রাণ গ্রুপের ট্রান্সপোর্টের এক কর্মকর্তা আমাকে ফোনে বিষয়টি অবহিত করছিলো। আমি তাদের লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি দেখা হবে।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT