3:17 pm , November 17, 2022

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ সদর উপজেলার চরকাউয়া ইউনিয়নের চরআইচা গ্রামে ৫ লাখ টাকা চাঁদার দাবিতে ছাত্রলীগ কর্মীর ঘরে বুধবার রাতে সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুট করেছে। ছাত্রলীগ থেকে বহিস্কৃত খালেদ খান রবীনের বাবা সাদেকুররহমান খান খলিলের নেতৃত্বে সন্ত্রাসী অস্ত্র নিয়ে ছাত্রলীগ কর্মী সিফাতের ঘরে লুট করেছে। এ ঘটনায় সিফাতের মা রাহিমা বেগম বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার বন্দর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। রবীনের পিতা সাদেকুর রহমান খান খলিল, খালেদ খান রবীন, ইমন আকন, রাজিব আকন, প্রিন্স হাওলাদার, শফিকসহ অজ্ঞাতনামা ৩০/৩৫ জনকে অভিযোগে আসামি করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী পরিবার বলছে, চাঁদার দাবিতে সন্ত্রাসীরা ঘরে হামলা চালিয়েছে। সন্ত্রাসীরা ঘরের সব আসবাবপত্র ভাঙচুর করে নগদ ৪ লাখ টাকা ও স্বর্নালঙ্কার লুট করেছে।
সিফাত ও রবীন দুইজনই ছাত্রলীগের কর্মী। সিফাত মহানগর ছাত্রলীগের আহবায়ক রইজ আহমেদ মান্নার অনুসারী। রবীন বরিশাল সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সুজনের অনুসারী। রবীন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০২০ সালে অসাংগঠনিক কর্মকান্ডে লিপ্ত থাকার অভিযোগে ছাত্রলীগ থেকে স্থায়ী বহিস্কার হয়।
সরেজমিনে জানা যায়, সিফাতের কাছে স্থানীয় এক চক্র মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করে। সন্ত্রাসীরা দরজা ভেঙে ঘরের ভেতরে প্রবেশ করে জিনিসপত্র ভাঙচুর চালায় এবং সিফাতকে খুঁজতে থাকে। আসবাবপত্র ভাঙচুরে বাধা দিলে সিফাতের বৃদ্ধ মা ও বোনকে মারধর করে। এসময় সন্ত্রাসীদের হাতে থাকা দেশীয় অস্ত্র (রামদা, লোহার রড) দিয়ে ঘরের ফ্রিজ, টিভি, সোফা, আলমিরা, সুকেজ, খাট, ড্রেসিং টেবিল কুপিয়ে ও পিটিয়ে ভাঙচুর করেছে।
সিফাতের বৃদ্ধ মা রাহিমা বেগম বলেন, আমার স্বামী অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য মো: সুলতান খান ২০১৮ সালে অবসর নেয়। ২০২০ সালে তিনি মারা যান। আমার ছেলে সিফাত বাবার চাকরির অবসরের টাকা দিয়ে ঠিকাদারি ব্যবসা করে আসছে। পাশাপাশি ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
সিফাতের মা রাহিমা বেগমের ভাষ্য, ছেলে ঠিকাদারী ব্যবসায় নজর পড়ে রবীনের। এরই পরিপ্রেক্ষিতে রবীন বিভিন্ন সময়ে ছেলের কাছে চাঁদা দাবি করে। ছেলে সিফাত চাঁদার টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় এবং যুবলীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে মান্নার সাথে যাওয়ায় সুজন অনুসারী রবীন ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠে। এরই জেরধরে হামলা-লুটপাট ও ভাঙচুরের তান্ডবলীলা চালিয়েছে। ভূক্তভোগী পরিবারের ভাষ্য, প্রতিপক্ষরা এমনভাবে ভাঙচুর করেছে যে, এক গ্লাস পানি খাবো সে সুযোগও রাখেনি। এ বিষয়ে বহিস্কৃত ছাত্রলীগ কর্মী খালেদ খান রবীন বলেন, সিফাতের বাড়িতে হামলা-লুটপাটের ঘটনা আমি শুনেছি, কিন্তু ওই হামলার সঙ্গে আমার কোন সম্পৃক্ততা নেই। রবীন দাবী করেন, বুধবার সন্ধ্যায় আমার উপর হামলা চালিয়েছে। আমি বর্তমানে মেডিকেলে চিকিৎসা নিচ্ছি।বন্দর থানার ওসি আসাদুজ্জামান আসাদ জানান, চরআইচা এলাকার সিফাতের বাড়িতে হামলা-লুটপাটের বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।