3:11 pm , November 16, 2022

শামীম আহমেদ ॥ শীত এলেই যেন ভোজন রসিক বাঙালিকে চেনা যায় নতুন রূপে। কারণ এসময় খাবারের তালিকায় যোগ হয় নানা ধরনের পিঠাপুলি। যে কারণে প্রতি বছরই শীতের আমেজ দেখা দিতেই বিভিন্ন জনবহুল জায়গায় পিঠার পসরা সাজিয়ে বসেন মৌসুমী দোকানিরা। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের পর এবার আগেভাগেই বরিশাল নগরীসহ দক্ষিণাঞ্চলে দেখা দিয়েছে শীতের আমেজ। আর এ সুযোগে বরিশাল নগরীর অলিগলিতে পিঠা বিক্রেতারা ঠিকই তাদের পুরোনো জায়গাগুলোতে পিঠার পসরা সাজিয়ে বসে বিক্রি করছেন পিঠা। নতুন চাল না হলেও পুরোনো চাল দিয়েই চালিয়ে নিচ্ছেন বিকিকিনি। আর সেই পিঠা খেয়ে শীতের আগমনকে তরান্বিত করার চেষ্টা করছেন শহরের মানুষরা। সন্ধ্যার পর অলিগলির মোড়ে শীতের পিঠার দোকানগুলোতে ভীড় করছেন পিঠা কিনতে আসা ক্রেতারা। সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলেই শীতের আগমন বার্তা একটু হলেও মিলছে শহরে। সেই বার্তাকে কাজে লাগিয়ে বরিশালের প্রাণকেন্দ্র, এমনকি অলিগলিতেও পিঠা তৈরির সরঞ্জাম নিয়ে বসছেন বিক্রেতারা। এসব দোকানে মিলছে ভাপা, চিতই, পানপিঠাসহ নানা ধরনের পিঠা। দাম নাগালের মধ্যে থাকায় স্বাদ নিতে দাঁড়িয়ে পড়ছেন অনেকেই। প্রতিদিন নগরীতে বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলছে পিঠা বিক্রি ও খাওয়ার পালা। কারণ শীতের সকালে বা সন্ধ্যায় গরম গরম ধোঁয়া ওঠা ভাপা পিঠার যে স্বাদ সেটা অন্য সময় পাওয়া যায় না। এসব দোকানে প্রতি পিস ভাপা পিঠা ১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ১৫ টাকায় স্পেশাল পিঠা। আর শীতে যত রকমেরই পিঠা তৈরি হোক না কেনো ভাপা পিঠার সাথে অন্য কোন পিঠার তুলনাই হয় না। এই পিঠা বিক্রি করেই শীতের সময় অনেকে সংসার চালান। দক্ষিনাঞ্চলের গ্রামে বাড়িতে বাড়িতে না হলেও শহরের বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে দোকান নিয়ে বসে পড়েছেন মৌসুমী পিঠা ব্যবসায়ীরা। অনেকেই মৌসুমী এই ব্যবসার সাথে জড়িয়ে পড়ছেন। তেমন একটা পূঁজি লাগে না বলে সহজেই এ ব্যবসা শুরু করেন অনেকেই। এসব দোকানগুলোতে দেখা যায় পিঠা পাগল লোকজনদের উপচে পড়া ভীড়। বিক্রেতারাও আনন্দের সাথে ভাপা পিঠা বিক্রি করছেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নগরের সদর রোড রূপালী ব্যাংকের সামনে, মহসিন মার্কেট, চকের পোল,বাজার রোড, শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে, লঞ্চঘাট, সদর রোড, জেলখানার মোড় , রূপাতলী বাস র্টামিনাল, বিএম কলেজের সামনে, ভাটার খাল, জিলা স্কুলসহ বরিশাল নগরের বিভিন্ন পাড়া-মহল্লা,অলিগলির মুখে এই পিঠার দোকান বসেছে। নগরের ভাটারখাল অলিউল্লাহ শাহ মাজারের সামনে গিয়ে পিঠা বিক্রেতা আলমের সাথে কথা বলে জানা যায়, মৌসুমি এই পিঠার প্রতি অনেকের বেশ আগ্রহ দেখা যায়। বছরের সাময়িক সময়ের এই পিঠার বাজার এখন থেকেই জমে উঠেছে। বিশেষ করে সন্ধ্যার সময় এই পিঠার চাহিদা বেশি থাকে বলে জানান তিনি। চকের পোল এলাকার পিঠা বিক্রেতা কবির জানান, প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও রয়েছে ক্রেতার ভীড়। প্রতিনিয়ত ক্রেতার ভীড় বেড়েই চলছে। এতে আয় রোজগারও হচ্ছে ভালো। তিনি আরও জানান, যেহেতু ভাপা পিঠার ব্যবসা শীতকালে ছাড়া অন্য কোন ঋতুতে হয় না তাই এই সময়টাই এই ব্যবসার জন্য উত্তম সময়। ক্রেতা ইমরানের সাথে কথা বললে তিনি জানান, শীত মানেই পিঠা খাওয়ার ধুম। তবে সেই পিঠা যদি হয় ভাপা পিঠা তাহলে তো কোন কথাই নেই। নিজেকে চাঙ্গা করার জন্য দিনের শেষে বন্ধুদের নিয়ে সন্ধ্যায় আসি ভাপা পিঠা খেতে। এতে করে সবার মাঝে ভালো লাগা কাজ করে। তবে ব্যবসায়ীরা জানান প্রতিবছরের চেয়ে এবছর সব জিনিসের দাম দ্বিগুন থাকায় ১০ টাকার কমে কোন ভাপা পিঠা বিক্রি করছেননা তারা। এবছর ‘ডিম চিতই’ প্রতি পিস ৩০ টাকা, ভাপা পিঠা ১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।