3:30 pm , November 14, 2022
বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্প গ্রুপ স্কয়ার গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও কিংবদন্তি শিল্পোদ্যোক্তা প্রয়াত স্যামসন এইচ চৌধুরীর সহধর্মিণী এবং ‘স্কয়ার মাতা’ হিসেবে সুপরিচিত মিসেস অনিতা চৌধুরী রবিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২২ তারিখ দুপুর ১টা ৬ মিনিটে রাজধানীর স্কয়ার হসপিটালে বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় মৃত্যুবরণ করেছেন। তাঁর বয়স হয়েছিলো ৯০ বছর। বার্ধক্যজনিত শারীরিক জটিলতায় অসুস্থ হয়ে পড়লে সম্প্রতি তাঁকে স্কয়ার হসপিটালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই রবিবার দুপুরে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। এ সময় সন্তান ও নাতি-নাতনিরা তাঁর কাছেই ছিলেন। ১৩ তারিখ সন্ধ্যায় কাকরাইলে অবস্থিত রমনা ক্যাথিড্রাল চার্চে স্বজন, পরিজন ও গণ্যমান্য ব্যক্তিত্বদের উপস্থিতিতে তাঁর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া পূর্ব প্রার্থনা ও আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হয়। পরদিন ১৪ নভেম্বর ২০২২ তারিখ সোমবার পাবনার আতাইকুলা চার্চে প্রার্থনা শেষে হেমায়েতপুরের অ্যাস্ট্রাস খামার বাড়িতে প্রয়াত চেয়ারম্যান স্যামসন এইচ চৌধুরীর পাশে তাঁকে সমাহিত করা হয়। স্কয়ার মাতা অনিতা চৌধুরী ১৯৩২ সালের ৫ আগস্ট জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ১৯৪৭ সালের ৬ আগস্ট স্যামসন এইচ চৌধুরীর সাথে তিনি বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। ৫০-এর দশকে স্কয়ার-এর প্রতিষ্ঠালগ্নে স্যামসন এইচ চৌধুরীর উদ্যোগকে সফল করতে শুরু থেকেই তিনি শক্তি, সাহস ও প্রেরণা নিয়ে স্বামীর পাশে ছিলেন। আজ স্কয়ার গ্রুপের দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্প গ্রুপে পরিণত হবার পেছনে অনিতা চৌধুরীর অবদান অনস্বীকার্য। জীবিতাবস্থায় স্যামসন এইচ চৌধুরী বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যে তাঁর সাফল্যের পেছনে স্ত্রী অনিতা চৌধুরীর অবদানের কথা উল্লেখ করেছেন। ২০১২ সালের ৫ জানুয়ারি স্যামসন এইচ চৌধুরী মারা যাবার পর অনিতা চৌধুরী তাঁর সন্তান ও স্কয়ার গ্রুপের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হন। প্রতিদানে তিনিও আজীবন স্কয়ার গ্রুপের ৬৪ হাজার কর্মীকে সন্তানতুল্য ভালোবাসা দিয়ে গেছেন। আমৃত্যু আগলে রেখেছেন মাতৃছায়ায়। স্কয়ার গ্রুপে যে কারণে তিনি ‘স্কয়ার মাতা’ হিসেবে পরিচিতি ও ভালোবাসা পেয়েছেন। তাঁর চার সন্তান, তিন ছেলে— স্যামুয়েল এস চৌধুরী, তপন চৌধুরী ও অঞ্জন চৌধুরী, একমাত্র মেয়ে রতœা পাত্র, এবং নাতি-নাতনিদের অনেকেই স্কয়ার-এর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে দায়িত্ব পালন করে স্কয়ার গ্রুপকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। রবিবার তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে স্কয়ার-এর সব প্রতিষ্ঠানসহ সর্বত্র শোকের ছায়া নেমে আসে। অনিতা চৌধুরী জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিভিন্ন ধর্মীয়, সামাজিক উন্নয়ন, নারী শিক্ষা, নারী উন্নয়ন ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নানামুখী কার্যক্রমের সাথে জড়িত ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট শামসুর হক টুকু, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ সহ দেশের বিশিষ্টজনেরা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। স্কয়ার মাতা অনিতা চৌধুরীকে সমাহিত করার পর শোকসন্তপ্ত পরিবারের পক্ষ থেকে তাদের কঠিন সময়ে পাশে দাঁড়াতে যে সকল শুভাকাঙ্ক্ষী দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে এসেছেন এবং বিভিন্ন মাধ্যমে সমবেদনা জানিয়েছেন তাদের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানানো হয়।