3:10 pm , October 23, 2022
বিশেষ প্রতিবেদক ॥ গত মে মাসের ঘূর্নিঝড় ‘অশনি’র পরে বঙ্গোপসাগর থেকে আরেক গভীর নি¤œচাপ দক্ষিণ উপকূলভাগে এগুচ্ছে। তবে এখনো ঝড়টির তীব্রতা ৬০ কিলোমিটারের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকায় বড় বিপর্যয়ের আশংকা না থাকলেও দক্ষিণাঞ্চলের মাঠে থাকা প্রায় ৭ লাখ হেক্টর আমন ধান নিয়ে শংকিত কৃষি যোদ্ধারা। রোববার সকাল থেকেই উপকূলসহ দক্ষিণাঞ্চল জুড়ে মেঘলা আকাশে সূর্য আড়ালেই রয়েছে। বরিশাল সহ গোটা উপকূল জুড়ে হালকা বৃষ্টি হলেও বাতাসের গতিবেগ ঘন্টায় ৫ নটের নিচেই ছিলো। বরিশালে সকাল ৬টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত সামান্য বৃষ্টি হলেও সাগর পাড়ের খেপুপাড়াতে ৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। তবে গভীর নি¤œচাপটির প্রভাবে বায়ু তাড়িত মেঘমালার কারণে উপকূলীয় এলাকায় ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণের কথাও বলছে আবহাওয়া বিভাগ। পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেতের আওতায় আনার পাশাপাশি বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের সব নদী বন্দরগুলোকেও ২ নম্বর নৌ হুশিয়ারী সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। ফলে সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের নৌপথগুলোতে অনধিক ৬৫ ফুট দৈর্ঘ্যরে সব যাত্রিবাহী নৌযানের চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। উপকূলে মাঝারী মাত্রায় এবং গভীর নি¤œচাপ কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর অনেক উত্তাল রয়েছে।
ফুসে ওঠা সাগরের জোয়ারে দক্ষিণাঞ্চলসহ উপকূলের নদ-নদী স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩Ñ৫ফুট উচ্চতার বায়ু তাড়িত জলোচ্ছাসে প্লাবিত হবার আশংকার কথাও বলছে আবহাওয়া বিভাগ। সব মাছ ধরা নৌকা ও ট্রলারসমূহকে অবিলম্বে নিরাপদ আশ্রয়ে ফিরতে বলা হয়েছে। তবে ২২ দিনের ইলিশ আহরণের নিষেধাজ্ঞার কারনে সাগর উপকূল সহ দক্ষিণাঞ্চলের বেশীরভাগ এলাকায়ই মাছ ধরা বন্ধ থাকায় জেলে পল্লী গুলোতে অনেকটাই নীরবতার সাথে নৌকা ও ট্রলার নিরাপদে মৎস্য বন্দরেই রয়েছে।
আবহাওয়া বিভাগের মতে, পূর্বÑমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত গভীর নি¤œচাপটি উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে প্রায় ৬৯৫ কিলোমিটার দক্ষিনে অবস্থান করছিলো। এটি অরো ঘণীভূত ও ঘূর্ণিঝড়ে পরিনত হয়ে প্রাথমিকভাবে দিক পরিবর্তন করে উত্তর দিকে অগ্রসরের সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে তা ভারতÑবাংলাদেশের দক্ষিণ সীমান্ত থেকে বরিশাল বিভাগের উপকূলীয় এলাকায় আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছে আবহাওয়া পর্যবেক্ষকরা।
চলতি মৌসুমে বরিশাল কৃষি অঞ্চল থেকে প্রায় সাড়ে ১৫ লাখ টন আমন চাল পাবার লক্ষ্য স্থির করে রেখেছে কৃষি মন্ত্রনালয়। কিন্তু মৌসুমের শুরু থেকে বৃষ্টিপাতের অভাবের সাথে কয়েক দফায় ফুসে ওঠা সাগরের প্লাবনসহ অতি বর্ষণে আমনের আবাদ লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৪% ঘাটতি ছিলো। এখন আবার গভীর নি¤œচাপের প্রভাবে ফসলের ক্ষতি কোন পর্যায়ে যায়, তা নিয়ে চরম দুঃশ্চিন্তায় কৃষকরা।