খুন করে সিঙ্গাপুর চলে যায় কামরুল! খুন করে সিঙ্গাপুর চলে যায় কামরুল! - ajkerparibartan.com
খুন করে সিঙ্গাপুর চলে যায় কামরুল!

3:01 pm , October 22, 2022

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ পাওনা টাকা পরিশোধের আশ্বাসে নুরুল আমিনকে নারায়ণগঞ্জ থেকে মুলাদী উপজেলার শ্বশুরবাড়িতে খবর দিয়ে আনেন কামরুল ইসলাম। পরবর্তীতে পরিকল্পিতভাবে নুরুল আমিনকে হত্যা করে হাত ও পায়ে ইট বেঁধে আড়িয়াল খাঁ নদীতে লাশ ফেলে দেয়া হয়। ঘটনার তিনদিন পর সিঙ্গাপুর চলে যায় হত্যাকারী কামরুল। হত্যাকান্ডে অভিযুক্ত কামরুলের শ্বশুর জেলার মুলাদী উপজেলার সফিপুর ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামের বাসিন্দা গ্রেফতারকৃত খোরশেদ আলম এভাবেই আদালতের বিচারকের কাছে জবানবন্দি দিয়েছেন। নিহত নুরুল আমিন নারায়ণগঞ্জের সদর উপজেলার চরবক্তাবলী উপজেলার লক্ষীনগর গ্রামের পিয়ার আলী ফকিরের ছেলে এবং হত্যকারী কামরুল ইসলাম একই গ্রামের হানিফ ফকিরের ছেলে। এর আগে ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে কামরুল ইসলামের শ্বশুর খোরশেদ আলমকে পুলিশ গ্রেফতার করে আদালতে সোর্পদ করেন। বিচারকের কাছে খোরশেদ জবানবন্দি দেয়ার পর তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়। শনিবার সকালে তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলার নাজিরপুর নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ প্রদীপ মিত্র বলেন, কামরুলের পাসপোর্ট তদন্তে দেখা গেছে তিনি গত ৭ অক্টোবর বাংলাদেশে এসেছেন এবং ১৩ অক্টোবর সকালে সিঙ্গাপুর চলে গেছেন। বাংলাদেশে অবস্থানকালীন তিনি তার শ্বশুরবাড়ি মুলাদী উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামে ছিলেন।
তিনি আরও জানান, গত ১২ অক্টোবর রাতে নাজিরপুর ইউনিয়নের সাহেবেরচর গ্রামের আড়িয়াল খাঁ নদীর উত্তর তীরবর্তী চর থেকে নুরুল আমিনের মরদেহ উদ্ধার করে নৌপুলিশ। মরদেহের হাত ও পায়ে ইট বাঁধা থাকায় প্রাথমিকভাবে হত্যার সন্দেহ করা হয়। ঘটনার পরেরদিন নৌপুলিশ বাদী হয়ে মুলাদী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এরপর বিভিন্ন থানায় সংবাদ পাঠিয়ে মরদেহের পরিচয় শনাক্ত না হওয়ায় বেওয়ারিশ হিসেবে বরিশালেই নুরুল আমিনকে দাফন করা হয়। এরমধ্যে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানার একটি সাধারণ ডায়েরির সূত্র ধরে নুরুল আমিনের মরদেহের পরিচয় শনাক্ত হয়।
নিহতের বোন সোনিয়া আক্তার জানান, নুরুল আমিন ও কামরুল ইসলাম একসাথে সিঙ্গাপুরে ছিলেন। বাংলাদেশ থেকে সিঙ্গাপুরে লোক নেয়ার ব্যবসাও (আদম ব্যবসা) করতেন তারা। সে হিসেবে কামরুলের কাছে নুরুল আমিন ২৫ লাখ টাকা পাবেন। একবছর আগে নুরুল আমিন সিঙ্গাপুর থেকে বাড়িতে আসেন। পরবর্তীতে পাওনা টাকার জন্য কামরুলকে চাঁপ প্রয়োগ করা হলে সে (কামরুল) সময়ক্ষেপণ করতে থাকেন।
সোনিয়া আরও জানান, গত ৭ অক্টোবর গোপনে কামরুল বাংলাদেশে এসে তার শ্বশুড় বাড়িতে অবস্থান করেন। এসময় নুরুল আমিনকে মোবাইল ফোনে কামরুল তার শ্বশুরবাড়িতে আসতে বলেন। কিন্তু টাকা না থাকায় আসতে পারবেন না বলে জানালে কামরুল তার ছোটভাই আরিফের মাধ্যমে নুরুল আমিনকে তিন হাজার টাকা দেন। গত ১০ অক্টোবর সকালে নুরুল আমিন ওই টাকা নিয়ে কামরুলের সাথে দেখা করতে মুলাদীতে এসে হত্যার শিকার হন। নুরুল আমিনের পরিবারের সদস্যদের ধারণা, পাওনা টাকা চাওয়ায় কামরুল তার শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সহায়তায় নুরুল আমিনকে হত্যা করে লাশ নদীত ফেলেছে।
নাজিরপুর নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ প্রবীর মিত্র জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে কামরুল ইসলামের শ্বশুর খোরশেদ আলমকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করা হলে তিনি বিচারকের কাছে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দিতে বলেন, তার মেয়ে জামাতা কামরুল মোবাইল ফোনে নুরুল আমিনকে ডেকে এনে খুন করেছেন। পরবর্তীতে লাশ নদীতে ফেলে সে (কামরুল) সিঙ্গাপুর চলে যায়। অপরদিকে নিহতের মরদেহ ফেরত পেতে বরিশাল আদালতে আবেদন করেছেন তার স্বজনরা। আজ ২৩ অক্টোবর এ বিষয়ে আদেশ দেয়ার দিন ধার্য করেছেন আদালতের বিচারক।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT