মা ইলিশ সংরক্ষণে কঠোর নজরদারীর বিকল্প নেই মা ইলিশ সংরক্ষণে কঠোর নজরদারীর বিকল্প নেই - ajkerparibartan.com
মা ইলিশ সংরক্ষণে কঠোর নজরদারীর বিকল্প নেই

2:54 pm , October 3, 2022

মোঃ পলাশ হাওলাদার, বাকেরগঞ্জ ॥ প্রবাদে আছে আমরা ‘মাছে-ভাতে বাঙালি’। সেই প্রাচীনকাল থেকে মাছ যেন ভোজনরসিক বাঙালির খাবারের তালিকায় অবিচ্ছেদ্য অংশ। নদীমাতৃক এদেশের আনাচেকানাচে খাল-বিল, নদী-নালায় ভরে আছে শত রকমের মাছ। হাওর-বাঁওড়ের যেখানেই রয়েছে পানি, সেখানেই রয়েছে কোনো না কোনো ধরনের মাছ। আর এজন্যই  বাঙালি মাছের প্রতি আকৃষ্ট বেশি। রুই, কাতলা, মৃগেল, বোয়ালসহ নানা ধরণের মাছের মধ্যে অধিকাংশ বাঙালির প্রিয় মাছ হলো ইলিশ। অতিথি আপ্যায়ন থেকে শুরু করে বাংলা নববর্ষসহ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে খাবারের তালিকায় ইলিশ মাছ অপরিহার্য একটি খাবার। স্বাদ, গন্ধ এবং রূপে কোনোটিতেই ঘাটতি নেই জাতীয় মাছ ইলিশের। এজন্য বাঙালির সাংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের ধারক হিসেবে ইলিশ অন্যতম। একটি সময় ইলিশের মৌসুম ছাড়াও জেলেরা ইলিশ আহরণ করতে পারত। কিন্তু সময়ের পরিবর্তনে কতিপয় লোভী মানুষের কারণে ইলিশের উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। ইলিশ প্রধানত সামুদ্রিক মাছ হলেও প্রজনন সময়ে এ মাছ বেছে নেয় স্বাদু পানিকে। স্বাদু পানিতে এসে তারা ডিম ছাড়ে। এ সময় এরা বাংলাদেশ ও ভারতের পূর্ব অংশের কিছু নদীতে আসে ডিম পাড়ার জন্য। তখনই মা ইলিশে ভরে ওঠে এসব নদী। আর ঠিক এই নির্দিষ্ট সময়ে কিছু জেলে ওৎ পেতে থাকে মা ইলিশ ধরার জন্য। অল্পসময়ে একবারে অধিক মা ইলিশ ধরতে পারার লোভে তারা প্রজননক্ষম এসব মা ইলিশ শিকার করে। ফলে দিনের পরিক্রমায় কমতে শুরু করেছে মা ইলিশের সংখ্যা। বছরের আশ্বিনের ভরা পূর্ণিমার আগে ও পরে মিলে ১৫ থেকে ১৭ দিনের মধ্যে ইলিশের ডিম ছাড়ার প্রকৃত সময়। এ সময় সাগর থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে বরিশাল তথা দখিনাঞ্চলের বিভিন্ন মিঠাপানির নদীতে ছুটে আসে। আর এসব মা ইলিশ রক্ষা করতে সরকার প্রতি বছরই একটি নির্দিষ্ট সময় মাছ ধরা বন্ধের ঘোষণা দেয়। যাতে করে মা ইলিশ ঠিকমতো ডিম ছাড়তে পারে এবং জাটকা উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। সেই ধারাবাহিকতায় এবারও ২২ দিন ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সরকার। ইলিশকে নির্বিঘেœ ডিম ছাড়ার সুযোগ দিতে ৭অক্টোবর থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত সারা দেশে ইলিশ ধরা বন্ধ করেছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।
কিন্তু প্রতিবছরই এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলেও কিছু জেলে তা অমান্য করে এসব নদীতে চুরি করে মাছ শিকার করে। দেশের বিভিন্ন নদীতে তারা সরকারি এ নিষেধাজ্ঞাকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে জাল ফেলে। বেশিরভাগ সময় তাদের অভিযোগ থাকে, সরকারের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত সহায়তা না পাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা মানা সম্ভব হচ্ছে না। কিন্তু বাস্তবিক প্রেক্ষাপট থাকে ভিন্ন। মূলত অধিক লাভের আশায় তারা এ সুযোগ হাতছাড়া করতে চায় না। অনেক সময় দেখা যায় দায়িত্বে থাকা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু সদস্যও এর মধ্যে জড়িত থাকে।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT