শেবাচিমের এনজিওগ্রাম ও সিটিস্ক্যান মেশিন সচল হলো, তবুও…. শেবাচিমের এনজিওগ্রাম ও সিটিস্ক্যান মেশিন সচল হলো, তবুও.... - ajkerparibartan.com
শেবাচিমের এনজিওগ্রাম ও সিটিস্ক্যান মেশিন সচল হলো, তবুও….

4:02 pm , September 14, 2022

বিশেষ প্রতিবেদক ॥ বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হৃদ রোগে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় এনজিওগ্রাম এবং ¯œায়ু রোগীদের রোগ নির্ণয়ে সিটিস্ক্যান মেশিন দুটি দীর্ঘ প্রচেষ্টার পরে চালু করা সম্ভব হয়েছে। খুব শীঘ্রই এ দুটি মেশিন দিয়ে রোগীদের চিকিৎসা সহায়তা কার্যক্রম চালু হচ্ছে বলে হাসপাতালের পরিচালক জানিয়েছেন। ফলে দক্ষিণাঞ্চলের বিপুল সংখ্যক রোগী সরকারী এ হাসপাতালটিতে কিছুটা হলেও চিকিৎসা সহায়তা পাবেন বলে আশা করছেন সাধারণ মানুষ।
দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহৎ সরকারী চিকিৎসা সেবা প্রতিষ্ঠান বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটিতে সিটিস্ক্যান, এমআরআই, কোবাল্ট-৬০ মেশিন ছাড়াও সেল সিরাম সেপারেটর এবং একাধিক আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন ও ডিজিটাল এক্স-রে মেশিনগুলো বিকল ছিলো দীর্ঘদিন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অনেক দিন ধরেই এসব মেশিন মেরামত বা পুনর্বাসন সহ নতুন মেশিন সরবরাহে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে দেন দরবার করে আসছেন।
কিন্তু এতদিন সেসব প্রচেষ্টা খুব একটা ফলপ্রসূ না হলেও অতি সম্প্রতি হাসপাতালটির বিকল এনজিওগ্রাম এবং সিটিস্ক্যান মেশিন দুটি সচল হয়েছে। তবে অন্যান্য মেশিনগুলো কবে নাগাদ সচল হবে, সে বিষয়ে আপাতত কর্তৃপক্ষ কিছু বলতে পারেননি। তবে ‘প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে’ বলে জানিয়েছেন পরিচালকসহ দায়িত্বশীল মহল।
সদ্য মেরামত হওয়া সিটিস্ক্যান ও এনজিওগ্রাম মেশিন দুটি সচল হওয়ায় সরকারী এ হাসপাতালটিতে চিকিৎসা সেবা কিছুটা হলেও উন্নত ও সহজতর হবে বলে কর্তৃপক্ষ আশা করছেন। এক হাজার শয্যার এ হাসপাতালে ইলেক্ট্রো মেডিকেল ইকুইপমেন্ট ও জনবল সংকটে সুষ্ঠু কার্যক্রম পরিচালনে সবচেয়ে বড় অন্তরায় হয়ে আছে। এখনো এ হাসপাতালটি চলছে ৫শ শয্যার জনবল দিয়ে। অথচ দৈনিক গড়ে ১৮শ রোগী চিকিৎসাধীন থাকলেও ৫শ শয্যার জন্য অনুমোদিত জনবলেরও প্রায় ৩৫ ভাগ এখনো শূন্যের বাইরে হাসপাতালটির আউটডোরেও প্রতিদিন আরো প্রায় দেড় হাজার রোগীর ব্যবস্থাপত্র দেন চিকিৎসকরা।
চিকিৎসক থেকে শুরু করে রেডিওলজিষ্ট, রেডিওথেরাপিষ্ট ও ক্লিনিক্যাল প্যাথলজিষ্ট-এর অনেক পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য থাকায় হাসপাতালটিতে ভর্তিকৃত রোগীদের দুর্ভোগের সীমা নেই। গরীব ও অসহায় রোগীরা বাইরে থেকে ক্লিনিক্যাল পরীক্ষাসহ এক্স-রে করাতে না পারলে দিনের পর দিন হাসপাতালের বেড বা মেঝেতে অবস্থান করতে গিয়ে আরো দুর্বল হয়ে পড়ছেন।
হাসপাতালটির প্যাথলজি বিভাগে ৪ জন ক্লিনিক্যাল প্যাথলজিষ্ট পদের বিপরীতে আছেন দু জন। ১০ জন টেকনিশিয়ানের ৪ জনই অন্য হাসপাতালে প্রেশনে নিযুক্ত। ফলে বিশাল এ হাসপাতালটিতে রোগ নির্ণয় কার্যক্রমে যথেষ্ট বিপত্তি সৃষ্টি হচ্ছে। এখানে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৪শ রোগীর রক্তসহ বিভিন্ন নমুনা পরীক্ষার জন্য গ্রহন করতে হলেও একজন সিনিয়র ক্লিনিক্যাল প্যাথলজিষ্ট ও দুই জন ক্লিনিক্যাল প্যাথলজিষ্টের পক্ষে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করেও এ বিপুল সংখ্যক নমুনা পরীক্ষা অসম্ভব হয়ে পড়ছে।
হাসপাতালটির রেডিও এন্ড ইমেজিং বিভাগে ১৫টি এক্স-রে মেশিনের ১৩টি বিকল। সচল দুটি এক্স-রে মেশিনের সাহায্যে হাসপাতালের ইনডোর ও আউট ডোরের ১০ভাগ রোগীরও এক্স-রে করা সম্ভব হচ্ছেনা। ফলে সিংহভাগ রোগীকেই হাসপাতালের বাইরে এক্স-রে করাতে হচ্ছে । ৪টি পর্টেবল এক্স-রে মেশিনের দুটি শিশু বিভাগ ও হৃদরোগ বিভাগে পড়ে আছে দীর্ঘদিন ধরে। এখানেও রেডিওলজিস্ট থেকে শুরু করে অন্যসব পদেও জনবল সংকট ব্যাপক। হাসপাতালটির রেডিওলজি, জেনারেল রেডিওলজি ও নিউরো রেডিওলজি বিভাগে অধ্যাপকের পদ শূন্য। দুই জন সহযোগী অধ্যাপকের মধ্যে একজন দায়িত্বে থাকলেও ৩জন সহকারী অধ্যপকের বিপরীতে কর্মরত একজন।
এসব ব্যাপারে শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ সাইফুল ইসলাম জানান, আমরা এ হাসপাতালের অচল সব মেশিন সচল করা ছাড়াও পরিবর্তনেরও চেষ্টা করছি। অতি সম্প্রতি এখানে নতুন আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন ও ডিজিটাল এক্স-রে মেশিনসহ কয়েকটি অত্যাধুনিক রোগ নির্ণয় ইলেক্ট্রো মেডিকেল ইকুইপমেন্ট স্থাপন করা হয়েছে। চলতি অর্থ বছরেই এমআরআই মেশিন সহ আরো কিছু অত্যাধুনিক মেডিকেল ইকুইপমেন্ট আসবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT