বরিশালের স্কুলগুলোতে জারি হচ্ছে বিশেষ সতর্ক বার্তা বরিশালের স্কুলগুলোতে জারি হচ্ছে বিশেষ সতর্ক বার্তা - ajkerparibartan.com
বরিশালের স্কুলগুলোতে জারি হচ্ছে বিশেষ সতর্ক বার্তা

3:49 pm , August 24, 2022

স্কুল ফাঁকি দিয়ে টিকটক ও ঘোরাঘুরি

হেলাল উদ্দিন ॥ শিক্ষার্থীদের নৈতিক অবক্ষয়ের আস্ফালন দিন দিন বেড়েই চলছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ফাঁকি দিয়ে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়ার প্রবনতা বর্তমান সময়ে সকল সীমা অতিক্রম করেছে। এতদিন স্কুল কলেজ ফাঁকি দিয়ে প্রেমিক যুগলদের আড্ডা, বিনোদন স্পট কিংবা পার্কে সময় কাটানোর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও এখন সব কিছু ছাপিয়ে অনৈতিকতার চর্চায় শীর্ষে স্থান করে নিয়েছে টিকটক (ভিডিও) করা। সম্প্রতি স্কুল ফাঁকি দিয়ে টিকটক করার অপরাধে নগরীর হালিমা খাতুন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে নবম শ্রেনীর ৩ ছাত্রীকে টিসি দিয়েছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এছাড়া ক্লাশ ফাঁকি দিয়ে স্কুলের ইউনিফর্ম পরিধান করা অবস্থায় বাইরে শৃঙখলা বহির্ভূত কাজে লিপ্ত থাকার অপরাধে মঙ্গলবার নগরীর সরকারী শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত স্কুলের দশম শ্রেনীর এক ছাত্রীকে টিসি দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পর পর এই দুটি ঘটনা নগরী জুড়ে সর্ব মহলে আলোচনার খোরাকি হয়েছে। স্কুল-কলেজ কর্তৃপক্ষ ও অভিভাবকরাও এসব ঘটনার পর বেশ সতর্ক ও সচেতন অবস্থানে রয়েছেন। অনেকটা নড়েচড়ে বসেছেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রনকারী প্রতিষ্ঠান শিক্ষা বোর্ড এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। সংস্থা দুটি বিভিন্নভাবে স্কুল চলাকালীন সময়ে শিক্ষার্থীরা স্কুলের বাইরে যেন অবস্থান না করে সে ব্যাপারে স্কুল কর্র্তৃপক্ষ এবং অভিভাবকদের সর্তক বার্তা দিচ্ছে। কয়েকটি ঘটনায় শিক্ষকরা নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের শ্রেনী কক্ষে সর্তকতামূলক বার্তা দেয়া শুরু করেছেন। নগরীর মহাবাজ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক জানান, তারা শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের নিয়ে সভা করার পরিকল্পনা করেছেন। দুই এক দিনের মধ্যে সভা করবেন বলে জানিয়েছেন ওই শিক্ষক।
বরিশাল শিক্ষাবোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক মোঃ রফিকুল ইসলাম খান বলেন, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্কুল কর্র্তৃপক্ষকে সতর্ক এবং সচেতন করা আমাদের একটি রুটিন ওয়ার্ক। প্রতিনিয়ত আমরা সেই কাজটি করে যাচ্ছি। তবে সবার আগে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে। কারণ একজন শিক্ষার্থী ২৪ ঘন্টার মধ্যে ৪/৫ ঘন্টা স্কুলে থাকে। দিনের বড় একটা সময় শিক্ষার্থীরা ঘরে বা অভিভাবদের জিম্মায় থাকে। তাই তাদেরকেই বেশী সচেতন হতে হবে। তবে এক্ষেত্রে শিক্ষকদেরও অনেক দায় রয়েছে।
বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মোঃ ইউনুস বলেন, শিক্ষার্থীদের নৈতিক অবক্ষয় দিন দিন বেড়েই চলছে। প্রযুক্তিকে তারা খারাপ কাজে ব্যবহার করছে। এ বিষয়ে শিক্ষক ও অভিভাবদের বেশি সচেতন হতে হবে। তিনি বলেন, যে মোবাইল দিয়ে তারা টিকটক বানাচ্ছে বা আরো আরাপ কিছু করছে সেই একই মোবাইল শিক্ষনীয় ও জ্ঞানার্জনের কাজে তারা ব্যবহার করতে পারে। কিন্তু বেশির ভাগ শিক্ষার্থী সেটি করছে না। এটাই অবক্ষয়। এখান থেকে উত্তরণ ঘটাতে হবে। নিয়ন্ত্রনকারী প্রতিষ্ঠান হিসাবে আমরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষকে সর্তক করার জন্য চিঠি দিয়ে নির্দেশনা দিতে পারি। কিন্তু তাতে ফল তেমন আসবে না। এ বিষয়ে সবার আগে অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে।
বরিশাল মাধ্যকি ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক প্রফেসর মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে মোবাইল ফোন ব্যবহারের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের নৈতিক অবক্ষয়ের বিষয়টি আমাদের ভাবিয়ে তুলেছে। আমরা সব ধরনের প্রতিরোধ মূলক ব্যবস্থা গ্রহন করার উদ্যোগ নিয়েছি। শীঘ্রই এ স্কুলে মোবাইল ফোন ব্যবহার, স্কুলে উপস্থিতি সব বিষয়ে সতর্কতা জারি করে নির্দেশনা প্র্রদান করবো। তবে শিক্ষক অভিভাবদের পাশাপাশি সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT