3:37 pm , August 1, 2022

বিশেষ প্রতিবেদক ॥ সাবধান! বরিশাল নগরীতে বেড়েছে প্রতারণার ফাঁদ। আর এজন্য নগরবাসীকে সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়েছেন পুলিশ কমিশনার। সম্প্রতি বরিশালের পোর্ট রোডের একটি কুরিয়ার কোম্পানির প্রতারণার শিকার হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন আল আমীন নামের একজন ব্যবসায়ী। তিনি জানান, ঢাকার একজন ব্যবসায়ী ও কুরিয়ার কোম্পানি মিলে তাকে প্রতারিত করেছে। গত ২৪ জুলাই পার্সেল বুকিং হওয়ার পর আসতে দেরী হওয়ায় খোঁজ নিতে গেলে হীরা কুরিয়ারের লোকেরা তাদের প্যাড ও নম্বর চেক করে জানান, ‘আপনারপার্সেল যে গাড়িতে আছে, সেটি টেকেরহাট এসে নষ্ট হয়েছে।আপনি টাকা পরিশোধ করে দিলেই আমরা অন্যভাবে তা আপনার কাছে পৌঁছে দেব’। আমি টাকা পরিশোধ করে আবার যখন খোঁজ নিতে আসি, তখন কুরিয়ার কোম্পানির লোকেরা জানান, ‘আপনি টাকা কম দেয়ায় পার্সেলটি ফেরত নিয়েছে দাতা’। এরপর আর কেউই ফোন ধরেনা বলে জানান আল আমিন। এমন অভিনব প্রতারণা শিকার হয়েছেন বরিশালের আরো একজন বাসিন্দা মনির হোসেন। ছেলের উপবৃত্তির টাকা পেতে প্রতারক চক্রের ফাঁদে পড়ে বিকাশের ১০ হাজার ২শ’ টাকা খুইয়েছেন তিনি। এছাড়া একই চক্র ইতিপূর্বে উপবৃত্তির টাকা প্রলোভন দেখিয়ে নগরীর একাধিক ব্যক্তির মোবাইলে এসএমএস পাঠায়। প্রতারক চক্র অংক কষে বিকাশের গোপন নম্বর বের করে দ্রুততার সাথে প্রতারিত ব্যক্তির বিকাশের সকল টাকা তুলে নেয় বলে একাধিক ব্যক্তির নিকট থেকে অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রতারণার শিকার শাহ মনির জানান, ২৯ জুলাই শুক্রবার তার ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে একটি কল আসে। এরপর প্রতারক চক্র মনিরকে অবহিত করেন তার ছেলে নগরীর একটি স্কুল এন্ড কলেজের ছাত্র। তার নাম হচ্ছে নেয়ামতুল্লাহ। ক্লাস রোল নং-৩৬ এবং তার স্ত্রীর নাম মনজু আক্তার। আপনার ছেলেকে মাসে ১২শ’টাকা উপবৃত্তি দেয়া হবে। তখন প্রতারক চক্র তাকে এ বিষয়ে প্রতারণা হতে পারে বলেও সাবধান থাকার পরামর্শ দেয় এবং এক পর্যায়ে মনিরের বিশ্বাস অর্জনে সক্ষম হয় প্রতারক চক্র। তারা মনিরকে ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে একটি অংকের উত্তর দিতে বলেন। অংকটি হচ্ছে ২০২২ দিয়ে বিকাশের গোপন নম্বরের সাথে গুন করে ফলাফল জানাতে বলে। কিন্তু প্রথমবার ফলাফল জানতে বিলম্ব হওয়ায় তা বাতিল করা হয়। এরপর প্রতারক চক্র আবার তাকে ৩০ সেকেন্ড সময় বেধে দিয়ে উত্তর জানাতে বলেন। এবার ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে উত্তর দেয়ার সাথে সাথে তার বিকাশে থাকা ১০ হাজার ২শ’ টাকা খুইয়ে ফেলেন তিনি। এরপর ওই নম্বরে কল দেয়া হলে তা আর রিসিভ করেনি প্রতারক চক্র। অভিনব এই প্রতারণায় হতভম্ব মনির এবং আল আমিন দ্রুত বরিশাল মডেল থানায় ছুটে যান সাধারণ ডায়েরী করার জন্য। কিন্তু থানা জানতে পেরে বরিশালের নবনিযুক্ত পুলিশ কমিশনার সাইফুল ইসলাম নিজেও অবাক হন এবং সবাইকে সচেতন হবার আহ্বান জানিয়ে বলেন, অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন আসবে। বিভিন্নজন বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে মানুষের দুর্বলতার সুযোগ নেবে। এ বিষয়ে সবার আগে আমাদের সচেতন থাকতে হবে। এরপর সন্দেহ হলে ৯৯৯ আছে। নিকটস্থ থানা বা ফাঁড়িতে পুলিশকে জানাতে পারেন। সবসময় মনে রাখুন, পুলিশ সাধারণ মানুষের বন্ধু। অভিযোগগুলো পেলেই বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখার আশ্বাস দেন পুলিশ কমিশনার।