ইউএনওদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফল বরিশালে হস্তান্তর যোগ্য ৬৮৩টি ঘর ইউএনওদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফল বরিশালে হস্তান্তর যোগ্য ৬৮৩টি ঘর - ajkerparibartan.com
ইউএনওদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফল বরিশালে হস্তান্তর যোগ্য ৬৮৩টি ঘর

3:26 pm , July 19, 2022

বিশেষ প্রতিবেদক ॥ আগামী ২১ জুলাই বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরিশালের ভূমিহীন ও গৃহহীন অসহায় পরিবারের মাঝে মুজিব জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে উপহারের তৃতীয় পর্যায়ের (২য় ধাপে) ঘর তুলে দেবেন। এ লক্ষ্যে বরিশালের জেলা প্রশাসন ইতিমধ্যেই ৬৮৩টি ঘর প্রস্তুত সম্পন্ন করেছেন। আর এ ঘরগুলো প্রস্তুত করতে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন জেলার ১০ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা। ছোট খাট কিছু ভুল বা স্থান নির্ধারণ জটিলতা থাকলেও কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনো সুযোগ নেই বলে জানালেন তারা। জেলা প্রশাসন সুত্রে জানা যায়, আগে একটি ঘর নির্মাণে বরাদ্দ ছিলো মাত্র ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা। পরবর্তীতে তা ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা করা হলেও মানসম্মত ঘর নির্মাণ হচ্ছেনা বলে অভিযোগ ছিলো সংবাদ মাধ্যমে। ফলে তা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বর্তমানে ৩য় পর্যায়ে প্রতিটি ঘরের নির্মাণ বাবদ বরাদ্ধ প্রদান করা হয়েছে ২ লক্ষ ৫৯ হাজার টাকা। এছাড়া প্রত্যেক উপকারভোগীকে দুই শতাংশ জমি রেজিস্ট্রি করে দেয়া হবে বলে জানা যায় জেলা প্রশাসন থেকে।
সরেজমিনে বরিশালের সদর উপজেলার চাঁদপুরা ও চরমোনাই ইউনিয়নের আশ্রায়ন প্রকল্প দুই এর কয়েকটি ঘর ঘুরে দেখে তাদের বক্তব্যের সত্যতা প্রমাণ পাওয়া গেছে। চাঁদপুরা ইউনিয়নের তালুকদার হাটে গুচ্ছ গ্রাম তৈরি নিয়ে এলাকাবাসীর অভিযোগ ও নিন্দা এখনো অব্যাহত রয়েছে। অথচ তারাই স্বীকার করলেন ঘরের ভীত খুব মজবুত হয়েছে এবং ইউএনও মনিরুজ্জামান প্রতিদিন এখানে এসে ঘুরে যাচ্ছেন। কাজের অগ্রগতি তিনি নিজেই পরীক্ষা করেন বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ী ফরিদ হাওলাদার। আর মনির তালুকদার বলেন, খুবই পরিশ্রমী মানুষ ইউএনও মনিরুজ্জামান। তাকে দেখি প্রতিদিনই তিনি তালুকদার হাটে আসেন। এখানের রাজমিস্ত্রীরাও তার উপর খুব খুশী। চরমোনাই ইউনিয়নের গিলাতলীতে ইউএনও মনিরুজ্জামানের সাথেই দেখা হয় প্রতিবেদকের। তিনি তখন মাত্রই চরকাউয়া, চাঁদপুরা হয়ে চরমোনাই আশ্রায়ন প্রকল্পে এসে নিজেই হস্তান্তর যোগ্য ঘর বাছাই করছিলেন। স্থানীয় বাসিন্দা ও রাজমিস্ত্রী খলিল জানান, প্রতিদিন একবার এসে তিনি কাজের অগ্রগতি দেখে যান। এতে কাজের মান খুবই ভালো হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মনিরুজ্জামান বলেন, এবারের ঘরগুলোর মাপ আগের মতোই। দুটি কক্ষ, পিছনে ও সামনে টানা বারান্দা, একটি রান্নাঘর ও একটি টয়লেট সংযুক্ত রয়েছে। তবে ব্যতিক্রম এই যে, এবারের ঘরগুলোর ভীত আগের তুলনায় অনেক মজবুত। লোহার পরিমাণ, ইট বালু সিমেন্ট সব নিজে দাঁড়িয়ে থেকে পরীক্ষা করেছি। কাজের মান নিয়ে এখন আর প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই ইনশাআল্লাহ। মনিরুজ্জামান আরো বলেন, বৃষ্টি ও অতি জোয়ারের পানির কারণে চাঁদপুরা ইউনিয়নের প্রকল্পের কাজে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। তাছাড়া এটা বাজার এলাকায় হবার কারণে এলাকাবাসীর বিরোধিতাও রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ডিসি স্যারের সাথে আলোচনা করতে হবে। চরমোনাই ইউনিয়নের ঘরগুলো প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। তার এই পরিশ্রমের কথা স্বীকার করে এবারের ঘর নির্মাণ নিয়ে জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন হায়দার বলেন, শুধু সদর উপজেলার ইউএনও মনিরুজ্জামান নয়, জেলার ১০ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাই প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করছেন এই ঘর নির্মাণ নিয়ে। তারা স্ব শরীরে উপস্থিত থেকে প্রতিটি ঘরের ইট বালু লোহার জোগান দিয়েছেন। সাত টাকার ইট এগারো টাকায় কিনতে হয়েছে। তারপরও ইট পাওয়া যাচ্ছে না। আগাম বুকিং দিয়েছি। তারপরও সমস্যা হয়েছে। নৌকায় করে ইট-বালু নিতে হচ্ছে। এগুলো তারা নিজে উপস্থিত থেকে তদারকি করেছেন। জেলা প্রশাসক জানান, জেলায় ৩য় পর্যায়ের ২য় ধাপে ১০ উপজেলায় ভূমিহীন ও গৃহহীন ১৮৫৬টি পরিবার জন্য নির্মিতব্য গৃহ হতে কবুলিয়তসহ ২১ জুলাই ৬৮৩টি গৃহ উপকারভোগী পরিবারের নিকট হস্তান্তর করার প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এরমধ্যে সদরে ৮টি, বাকেরগঞ্জে ৫৯টি, মেহেন্দিগঞ্জে ১৪৫টি, উজিরপুর ১৪১টি, গৌরনদীতে ৯২টি, মুলাদী ২০টি, বাবুগঞ্জ ৫৭ টি, হিজলায় ৯০টি, আগৈলঝাড়া ৭১টিসহ মোট ৬৮৩টি গৃহ তৃতীয় পর্যায়ে হস্তান্তর করা হবে। অসমাপ্ত বা অর্ধসমাপ্ত ৭২১টি গৃহ ও কবুলিয়ত সম্পাদনের পর ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে হস্তান্তর করা হবে বলে জানান জেলা প্রশাসক।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT