3:50 pm , July 17, 2022

বানারীপাড়া প্রতিবেদক ॥ বানারীপাড়ায় নরোত্তমপুর গ্রামে জমিজমা নিয়ে বিরোধের জের ধরে বিবাদের সময় প্রতিপক্ষের ওপর হামলা ও গুলিবর্ষণ করার মামলার আসামী উপজেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ফারুক হোসেন সরদারের (৫২) জামিন না মঞ্জুর করে জেলে পাঠিয়েছে আদালত। রোববার বরিশাল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট সুমাইয়া রিজভী মৌরি না মঞ্জুর করে তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আইনজীবী সৈয়দ ওবায়দুল্লাহ্ সাজু জানান, ৩০৭ ধারায় গুলি বর্ষণ করে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে আসামী ফারুক হোসেন সরদারের জামিন না মঞ্জুর করেছেন আদালত।
উল্লেখ্য, উপজেলার সলিয়াবাকপুর ইউনিয়নের নরোত্তমপুর গ্রামের আ. রশিদ সরদার ও প্রতিবেশী ইউনুস হাওলাদারের পরিবারের সঙ্গে জমিজমা নিয়ে প্রায় ৬০/৭০ বছর ধরে বিরোধ চলে আসছে। তাদের মৃত্যর পরে আ. রশিদ সরদারের ছেলে উপজেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ফারুক হোসেন সরদারের পরিবারের সঙ্গে ইউনুস হাওলাদারের ছেলে কাঞ্চন হাওলাদারের পরিবারের বিরোধ অব্যাহত থাকে। ১ জুলাই বিকালে ফারুক হোসেন সরদার ও তার অপর তিন ভাই ফিরোজ সরদার, হুমায়ুন সরদার ও মামুন সরদার বিরোধপূর্ণ ওই জমিতে সীমানা পিলার দিতে গেলে কাঞ্চন হাওলাদার ও তার পরিবারের লোকজন তাতে বাধা দেয়। একপর্যায়ে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হলে তিন সহোদরসহ ফারুক হোসেন সরদার লাঠি দিয়ে প্রতিপক্ষদের বেধরক পিটানোসহ তার লাইসেন্সকৃত পিস্তল দিয়ে এক রাউন্ড গুলি করেন।
ওই সময় ঘটনার প্রায় ৬ ঘন্টা পরে রাত পৌনে ১১টার দিকে বানারীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. হেলাল উদ্দিন ও ইন্সপেক্টর (তদন্ত) জাফর আহম্মেদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন যান। তখন সেখানে ফারুক হোসেন সরদার উপস্থিত ছিলেন। এদিকে প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি করে আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক হোসেন সরদারের বীরদর্পে থানায় যাওয়া, গভীর রাত পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করা, ওসি ও ইন্সপেক্টরের (তদন্ত) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করার সময় সেখানে তার উপস্থিত থাকা এবং যেখানে হামলা ও গুলি বর্ষনের ঘটনা ঘটে সেই ক্ষতিগ্রস্থ কাঞ্চন হাওলাদারের বাড়িতে ওসি ও ইন্সপেক্টর না গিয়ে ফারুক সরদারের বাড়ির উঠানে দাঁড়িয়ে তাদের পক্ষের লোকজনের বক্তব্য নেওয়া, থানায় কাঞ্চন হাওলাদারের মামলা না নিয়ে উল্টো ফারুক হোসেন সরদারের পক্ষে মামলা নেওয়া নিয়ে তখন নানা প্রশ্ন ওঠে। এদিকে বানারীপাড়া থানায় মামলা না নেওয়ায় মাইনুল ইসলাম ওরফে কাঞ্চন হাওলাদার পরে ৬ জুলাই ফারুক হোসেন সরদার ও তার তিন ভাইসহ ৬ জনকে আসামী করে বরিশালে আদালতে মামলা দায়ের করলে বিচারক বানারীপাড়া থানাকে মামলাটি এজাহারভূক্ত করা নির্দেশ দেন। ওই মামলায় ১৭ জুলাই রবিবার হাজির হয়ে জামিন প্রার্থনা করলে বিচারক তা না মঞ্জুর করে ফারুক হোসেন সরদারকে জেলহাজতে পাঠান।