কোরবানীর ৬ দিন পূর্বে সকল গরু বিক্রি কোরবানীর ৬ দিন পূর্বে সকল গরু বিক্রি - ajkerparibartan.com
কোরবানীর ৬ দিন পূর্বে সকল গরু বিক্রি

3:45 pm , July 4, 2022

গরু কেনা ও তদারকির ঝামেলা নেই এমইপি এগ্রো খামারে

সাইদ মেমন ॥ কোরবানীর পশু কেনাসহ তদারকির ঝামেলা থেকে মুক্ত রাখছে এমইপি এগ্রো। যার কারনে খামারের দেড়শতাধিক গরু বিক্রি হয়ে গেছে। বাবুগঞ্জের রামকাঠি এলাকায় এ খামারটির অবস্থান। নগরীর হাটখোলার মোহাম্মদী ইলেকট্রিক প্রোডাক্ট কোম্পানীর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান এই এমইপি এগ্রো। সোমবার খামার ঘুরে দেখা যায়, তাদের খামারের ১৮৫ টি ষাড়ের মধ্যে ১৮৩ টি বিক্রি হয়েছে। তবুও সমানভাবে পরিচর্যা করা হচ্ছে। খামারের ইনচার্য রাফিউর রহমান অমি জানান, লাইভ ওয়েটের মাধ্যমে খামারের গরু কেজি দরে বিক্রি করা হয়েছে। (ক্রেতা গরু পছন্দের পর স্কেলে পরিমাপ করা হয়। সেখানে যে ওজন আসবে সেই ওজনের প্রতিকেজি দর হিসেবে দাম রাখা হয়।
কারন হিসেবে তিনি বলেন, এতে ক্রেতারা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। কেজি দরে বিক্রি করায় কারো প্রতারিত হওয়ার সুযোগ নেই।
অমি বলেন, তাদের খামারের তিনশ কেজির নিচে ওজনের গরুর প্রতি কেজি ৪২০ টাকা, চারশ’ কেজির নিচে ৪৪০ টাকা, ৫শ’ কেজির নিচে ৪৬০ টাকা ও ৬শ কেজি ওজনের প্রতি কেজি ৫৬০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
তিনি জানান, তাদের সর্বনি¤œ ৭৫ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ সাড়ে ৪ লাখ টাকায় গরু বিক্রি করা হয়েছে।
অমি জানান, তাদের খামারে হরিয়ানা, শাহীওয়াল, হাশা, দেশাল ও বুট্টি জাতের গরু রয়েছে। এসব গরু কুষ্টিয়া, যশোর, খুলনা ও মেহেরপুর থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।
অমি বলেন, দুই বছর পূর্বে তাদের খামার শুরু করা হয়েছে। গত বছর খামারে ৮৬টি গরু ছিলো। ৮১ টি গরু বিক্রি হয়েছে।
ধারাবাহিকতায় এবারে গরুর সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। ক্রেতাদের চাহিদায় সোমবার পর্যন্ত পর্যন্ত ১৮৩টি বিক্রি হয়েছে। ক্রেতাদের আগ্রহ থাকায় আগামীতে আরো ব্যাপক পরিসরে করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবস্থাপনা পরিচালনক জাহাঙ্গীর আলম চাকলাদার। তিনি জানান, ইউটিউবে ও ফেসবুকে প্রচারনায় ব্যাপক সাড়া পেয়েছেন। কিন্তু যে পরিমান সাড়া পেয়েছেন সেই পরিমান গরু সরবরাহ করতে পারেনি। আগামী বছর বরিশালবাসীর চাহিদা পুরন করতে পারবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
শতভাগ প্রাকৃতিক খাবার খাওয়ানো হয়েছে দাবি করে ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, এখানে কোন গরুকে ফিড খাওয়ানো হয়নি। বরিশালবাসীকে অর্গানিক খাবার খাওয়ানোর লক্ষ্যে খামারটি করেছেন বলে জানিয়ে বলেন, খামার কোন গরুকে ইনজেকশন দেয়া হয়নি।
ব্যবস্থপনা পরিচালক আরো জানান, তার খামার থেকে গরু কিনে নিয়ে যেতে হবে না। ঈদের দুই দিন পূর্ব থেকে ক্রেতাদের বাসায় বাসায় পৌছে দেয়া হবে। বর্তমানে বিক্রিত ১৫৫ টি গরু খামারে তারাই লালন পালন করছেন।
জেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা বলেন, পরিমাপ করে বিক্রির সুবিধা রয়েছে। এতে ক্রেতাদের ঠকার (প্রতারিত বা ক্ষতির) সম্ভাবনা নেই।
তিনি আরো জানান, বর্তমানে খামার থেকে গরু কেনায় আগ্রহ বেড়েছে। ঝামেলা ছাড়াই কিনতে পারে বলে ক্রেতারা খামারমুখী হয়েছেন।
এদিকে, বরিশালে এবারো স্থানীয় গবাদী পশুর মাধ্যমেই কোরবানির চাহিদা মিটিয়ে পশু উদ্বৃত্ত থাকবে বলে জেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. নুরুল আলম জানিয়েছেন। তিনি জানান, বরিশাল জেলায় ১ লাখ ৮ হাজার ১১৮ টি পশু রয়েছে। এর মধ্যে চাহিদা এক লাখ ৭ হাজার ৪২৩টি পশুর। প্রানী সম্পদ কর্মকর্তার তথ্য অনুযায়ী জেলায় চাহিদার পরেও ৬৯৫টি পশু উদ্বৃত থাকছে। তার মতে, এখান থেকে অন্য জেলা কিছু পশু যাবে। অন্য জেলা থেকেও আসবে।
ডা. নুরুল আলম দাবি করেন, স্থানীয় পশুর মাধ্যমে কোরবানি দেয়া যাবে। বরিশাল জেলায় ঘাটতি হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। তিনি জানান, এবার এখন পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলে কোরবানির পশুর দাম গত বছরের চেয়ে ১০Ñ২৫ ভাগ পর্যন্ত বেশী। বাজারে গরু ও খাসির গোসতের দামও গত বছরের এ সময়ের তুলনায় প্রায় ২০ ভাগ বেশী।
প্রানী সম্পদ কর্মকর্তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী, জেলার মধ্যে কোরবানীযোগ্য গবাদি পশুর মধ্যে রয়েছে, ষাড় ৫৩ হাজার ৯০৩টি, বলদ ১৫ হাজার ১৩৬টি, গাভী ৮ হাজার ৪২টি, মহিষ ৬৮৫টি, ছাগল ৩০ হাজার ২১৪টি, ভেড়া ১৩৮টি।
প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা আরো বলেন, কোরবানীতে তাদের ৩০ টি টিম থাকবে জেলার হাটে তদারকিতে। তারা রোগাক্রান্ত পশু দেখলে হাট সেই গরুর বিক্রি বন্ধ করে দেবেন। এছাড়াও নগরীতে একটি ভ্রাম্যমান টিম থাকবে।
ডা. নুরুল আলম বলেন, জেলা ৮০ হাজার ১৩টি খামার রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় খামারটি বাবুগঞ্জ উপজেলার রামপট্টি গ্রামের এমএপি এগ্রো।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT